Thursday 13 October 2016

তাসাহুদে যেভাবে আংগুল নাড়াতে



রাসুল সাঃ তাসাহুদে যেভাবে আংগুল নাড়াতেন চিএ সহ !!!

 তাশাহ্হুদে বসে শাহাদাত আঙ্গুল একবার উঠানো :

আঙ্গুল দ্বারা একবার ইশারা করার কোন দলীল নেই। এর পক্ষে কোন জাল হাদীছও নেই। শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, প্রচলিত আছে যে, ‘লা ইলা-হা’ বলার সময় আঙ্গুল উঠাতে হবে। কেউ বলেন, ‘ইল্লাল্লাহ’ বলার সময় উঠাতে হবে। এগুলো সবই ব্যক্তি মতামত। হাদীছে এগুলোর কোন দলীল নেই। ছহীহ সনদে নেই, যঈফ সনদে নেই, এমনকি জাল সনদেও নেই। অনুরূপভাবে আঙ্গুল উঠিয়ে রেখে দেয়ারও কোন ভিত্তি নেই। বরং ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সালাম পর্যন্ত আঙ্গুল নড়াতে থাকতে হবে।[1] উল্লেখ্য যে, অনেকে আঙ্গুল উঠিয়ে রাখে কিন্তু ইশারা করে না। এটাও ঠিক নয়। কারণ উক্ত মর্মে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা যঈফ।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَنَّهُ ذَكَرَ أَنَّ النَّبِىَّ  كَانَ يُشِيْرُ بِأُصْبُعِهِ إِذَا دَعَا وَلاَ يُحَرِّكُهَا.

আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন দু‘আ করতেন তখন আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন। কিন্তু নাড়াতেন না।[2]

তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ।[3] ‘আঙ্গুল নাড়াতেন না’ অংশটুকু ছহীহ হাদীছে নেই। বরং আঙ্গুল নাড়ানোর পক্ষেই ছহীহ হাদীছ রয়েছে। যেমন- ثُمَّ رَفَعَ أُصْبُعَهُ فَرَأَيْتُهُ يُحَرِّكُهَا يَدْعُو بِهَا  ‘অতঃপর তিনি তাঁর আঙ্গুল উঠাতেন। রাবী ওয়ায়েল বিন হুজর বলেন, আমি দেখতাম তিনি আঙ্গুল নাড়িয়ে দু‘আ করতেন’।[4]

অতএব তাশাহ্হুদ পড়া থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত কিংবা শেষ বৈঠকে সালাম ফিরানো পর্যন্ত ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা সর্বদা ইশারা করবে। এ সময় দৃষ্টি থাকবে আঙ্গুলের মাথায়।[5] দুই তাশাহ্হুদেই ইশারা করবে।[6]

عَنِ ابْنِ أَبْزَى أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ  كَانَ يُشِيْرُ بِأُصْبُعِهِ السَّبَّاحَةِ فِى الصَّلاَةِ.

ইবনু আবযা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) ছালাতে তার শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন।[7]

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ  إِذَا قَعَدَ يَدْعُو وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى وَيَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ السَّبَّابَةِ وَوَضَعَ إِبْهَامَهُ عَلَى أُصْبُعِهِ الْوُسْطَى وَيُلْقِمُ كَفَّهُ الْيُسْرَى رُكْبَتَهُ.

আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যখন তাশাহ্হুদে বসতেন, তখন দু‘আ করতেন। তিনি ডান হাত ডান উরুর উপর এবং বাম হাত বাম উরুর উপর রাখতেন। আর শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করতেন এবং বৃদ্ধা আঙ্গুল মধ্যমা আঙ্গুলের উপর রাখতেন। আর বাম হাতের পাতা দ্বারা বাম হাঁটু চেপে ধরতেন।[8] উল্লেখ্য যে, অন্য হাদীছে এসেছে, তিপ্পান্নের ন্যায় ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ করে শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করবে।[9]

[1]. তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/৯০৬-এর টীকা দ্রঃ, ১/২৮৫ পৃঃ- والظاهر من الحديث أن الاشارة والرفع عقب الجلوس وما يقال إن الرفع إنما هو عند قوله لا إله وفي المذهب الآخر عند قوله إلا الله فكله رأي لا دليل عليه من السنة، وقول ابن حجو الفقيه كما نقله في المرقاة ويسن... أن يخصص الرفع بكونه مع إلا الله لما في رواية لمسلم. فوهم محض، فإنه لاأصل لذلك لا في مسلم ولا في غيره من كتب السنة لا باسناده صحيح ولاضعيف بل ولا موضوع. ومثله وضع الأصبع بعد الرفع لاأصل له بل ظاهر الحديث الآتى (৯০৭) وغيره استمرار تحريكها إلى السلام.। [2]. আবুদাঊদ হা/৯৮৯, ১/১৪২ পৃঃ; নাসাঈ, আল-কুবরা ১/৩৭২; বায়হাক্বী ২/১৩২; মিশকাত হা/৯১২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৮১৫, ২/৩০৬ পৃঃ। [3]. যঈফ আবুদাঊদ হা/৯৮৯; তামামুল মিন্না, পৃঃ ২১৮। [4]. নাসাঈ হা/৮৮৯, ১/১০৩ পৃঃ ও ১২৬৮, ১/১৪২ পৃঃ সনদ ছহীহ। [5]. নাসাঈ হা/১২৭৫, ১/১৪২ পৃঃ, হা/১১৬০, ১/১৩০ পৃঃ। [6]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/২৯০৩; সনদ ছহীহ, ছিফাতু ছালাতিন নবী, পৃঃ ১৫৯। [7]. আহমাদ হা/১৫৪০৫; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩১৮১। [8]. ছহীহ মুসলিম হা/১৩৩৬, ১৩৩৮, ১/২১৬ পৃঃ, (ইফাবা হা/১১৮৪); মিশকাত হা/৯০৮; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৮৪৭, ২/৩০৪ পৃঃ। [9]. ছহীহ মুসলিম হা/১৩৩৮, ১/২১৬ পৃঃ, (ইফাবা হা/১১৮৬); মিশকাত হা/৯০৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৮৪৬, ২/৩০৩ পৃঃ।
Main link:- https://m.facebook.com/groups/528178903957776?view=permalink&id=990120167763645https://m.facebook.com/groups/528178903957776?view=permalink&id=990120167763645

Tuesday 11 October 2016

রাফউল ইয়াদাইন.5 hadiths from bukari.muslim




স্বালাতত ৰফউল ইয়াদাইন তথা দুইহাত কান/কান্ধ পর্যন্ত উঠোৱা মানসূখ( Cancelled verse)নহয়।
-------------------------------------------------------------------------------------------
~~ আৰু কিমানদিন সত্য গোপন থাকিব ?
কোৱাঃ সত্য আহিছে আৰু মিথ্যাৰ বিলুপ্ত
হৈছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হোৱাটোৱেই আছিল।
( সুৰা ইসৰাঃ ৮১)
7 nos. Hadiths from Sahih Bukhari & Sahih Muslim, no.735-739.

http://sunnah.com/bukhari/10/129-133
http://sunnah.com/muslim/4/27-28
------------------------------------------------sgis------------------------------------------------------



সালাতে রাফউল ইয়াদাইন বা উভয় হাত উত্তোলন সম্পর্কে সহীহুল বুখারী ও সহিহ মুসলিমের ৫টি হাদীস নিম্নরূপঃ
১ম হাদীসঃ
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ إِذَا افْتَتَحَ الصَّلاَةَ، وَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوعِ، وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ رَفَعَهُمَا كَذَلِكَ أَيْضًا وَقَالَ ‏ "‏سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ‏"‏‏.‏ وَكَانَ لاَ يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي السُّجُودِ‏
সালিম ইবনু আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন স্বলাত শুরু করতেন, তখন তার উভয় হাত তাঁর কাঁধ বরাবর উঠাতেন। আর যখন রুকুতে যাওয়ার জন্য তাকবীর বলতেন এবং যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপভাবে দু’হাত উঠাতেন এবং সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ, রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদ বলতেন। কিন্তু সাজদাহর সময় এরূপ করতেন না। (সহীহুল বুখারী: ৭৩৫)

২য় হাদীসঃ
عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا افْتَتَحَ الصَّلاَةَ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يُحَاذِيَ مَنْكِبَيْهِ وَقَبْلَ أَنْ يَرْكَعَ وَإِذَا رَفَعَ مِنَ الرُّكُوعِ وَلاَ يَرْفَعُهُمَا بَيْنَ السَّجْدَتَيْنِ
সালিম থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি, যখন তিনি স্বলাত শুরু করতেন তখন উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন। আর রুকুতে যাওয়ার পূর্বে এবং রুকু থেকে উঠার সময়ও তিনি এরূপ করতেন। কিন্তু দুই সিজদার মাঝখানে তিনি হাত উঠাতেন না।  (সহিহ মুসলিম: ৭৪৭)

৩য় হাদীসঃ
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ لِلصَّلاَةِ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى تَكُونَا حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ ثُمَّ كَبَّرَ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ وَإِذَا رَفَعَ مِنَ الرُّكُوعِ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ وَلاَ يَفْعَلُهُ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ
সালিম ইবনু আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু   থেকে বর্ণিত। ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু   বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  যখন স্বলাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন নিজের দুই হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন, অতঃপর তাকবীর বলতেন। তিনি রুকুতে যাওয়ার সময়ও এবং রুকু থেকে উঠার সময়ও কাঁধ পর্যন্ত দুই হাত তুলতেন। কিন্তু সিজদা থেকে মাথা তোলার সময় তিনি এরূপ করতেন না। (সহিহ মুসলিম: ৭৪৮)

৪র্থ হাদীসঃ
سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، رضى الله عنهما ـ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ إِذَا قَامَ فِي الصَّلاَةِ رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى يَكُونَا حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ، وَكَانَ يَفْعَلُ ذَلِكَ حِينَ يُكَبِّرُ لِلرُّكُوعِ، وَيَفْعَلُ ذَلِكَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ وَيَقُولُ ‏ "‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ‏"‏‏.‏ وَلاَ يَفْعَلُ ذَلِكَ فِي السُّجُودِ‏
সালেম ইবনু আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু   থেকে বর্ণিত; ইবনু উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু   বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি, তিনি যখন স্বলাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এবং যখন তিনি রুকূ’র জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এরুপ করতেন। আবার যখন রূকূ’ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ করতেন এবং ‘সামি আল্লাহুলিমান হামিদা’ বলতেন। তবে সাজদাহর সময় এরূপ করতেন না। (সহীহুল বুখারী: ৭৩৬)

৫ম হাদীসঃ
سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ افْتَتَحَ التَّكْبِيرَ فِي الصَّلاَةِ، فَرَفَعَ يَدَيْهِ حِينَ يُكَبِّرُ حَتَّى يَجْعَلَهُمَا حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ، وَإِذَا كَبَّرَ لِلرُّكُوعِ فَعَلَ مِثْلَهُ، وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ‏.‏ فَعَلَ مِثْلَهُ وَقَالَ"‏رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ‏"‏‏.‏وَلاَ يَفْعَلُ ذَلِكَ حِينَ يَسْجُدُ وَلاَ حِينَ يَرْفَعُ رَأْسَهُ مِنَ السُّجُودِ‏.‏
আবদুল্লাহ্ ইবনু উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাকবীর দিয়ে স্বলাত শুরু করতে দেখেছি, তিনি যখন তাকবীর বলতেন তখন তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং কাঁধ বরাবর করতেন। আর যখন রুকূ’র তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন। আবার যখন  ‘সামিআল্লা হুলিমান হামিদা’ বলতেন, তখনও এরূপ করতেন এবং ‘রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদ’ বলতেন। কিন্তু সাজদায় যেতে এরূপ করতেন না। সাজদাহর থেকে মাথা উঠাবার সময়ও এরুপ করতেন না। (সহীহুল বুখারী: ৭৩৮)
Md saidur rahmanbd.

Sunday 9 October 2016

Importance of , তাইয়াতুল মসজিদের ২ রাকাত নামায

কি বলেছেন রাসূল ( সাঃ ) আর কি করছি। জুমায় এর বিধান আরো স্পষ্ট। সনদে কাবলাল জুমার হাদিস দূর্বল।কিন্তু তাইয়াতুল মসজিদ হাদিস অধিক সহি হওয়া সত্ত্বেও আমরা আমল করছি না।
এ সালাত আদায় করা ছাড়া রাসূল ( সাঃ ) কখনো মসজিদে বসতেন না। আমরা বোকার মত মসজিদে আগে গেলেও বসে গল্প করছি ।
,
,
তাইয়াতুল মসজিদের ২ রাকাত নামায
------------------------------
-----------------
# # আবু কাত্বাদা (রাঃ) বলেন, রাসুল(ছাঃ) বলেছেনঃ “যখন তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করবে তখন সে যেন না বসে, যতক্ষন দুই রাক’আত সালাত আদায় না করবে”। (বুখারী হা/১১৬৩, বুখারী হা/-৪৪৪ ও মুসলিম হা/-৭১৪)।
# # হযরত জাবির (রাঃ)বলেন, রাসূল (ছাঃ)খুৎবা দেওয়ার সময় বলেছেন,যখন তোমদের কেউ জুম‘আর দিনে আসে আর ইমাম তখন খুৎবা দিচ্ছেন,সে যেন দুই রাক‘আত নফল সালাত আদায় করে নেয় এবং সুরা কেরাআত সংক্ষেপ করে। (মুসলিম,মিশকাত হা/১৪১১)
# # উলামাগণ জুম’আর দিন এটা ওয়াজীবের সমমান বলেছেন ঃ
জাবের (রাঃ) বলেন,‘নবী জুম’আর দিনে খুৎবা দিচ্ছিলেন এমতাবস্থায় জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে। তখন রাসূল(ছাঃ) তাকে বললেন, তুমি কি সালাত আদায় করেছো? সে বলল না। তখন তিনি বললেন তুমি দাঁড়াও দুই রাক’আত সালাত আদায় কর’। (বুখারী হা/৯৩০,৯৩১)।
উক্ত ব্যক্তি ছিলেন সুলাইক গাতফানী (রাঃ)। (মুসলিম ৩/২১২, হা/১৮৬৫;)।
# # একদা হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) মসজিদ প্রবেশ
করলেন। তখন মারওয়ান খুৎবা দিচ্ছিলেন। তিনি নামায পড়তে শুরু করলে প্রহ্রীরা তাঁকে বসতে আদেশ করল। কিন্তু তিনি তাদের কথা না শুনেই নামায শেষ করলেন। নামায শেষে লোকেরা তাকে বলল, আল্লাহ আপনাকে রহ্ম করুন। এক্ষনি ওরা যে আপনার অপমান করত। উত্তরে তিনি বললেন, আমি সে নামায ছাড়ব কেন, যে নামায পড়তে নবী (সাঃ)-কে আদেশ
করতে দেখেছি। (তিরমিযী, সুনান ৫১১নং)

সালাতে হাত কোথায় বাধবেন?



সালাতে হাত কোথায় বাধবেন?
video-শায়েখ মোজাফ্ফর বিন মহসিন! https://www.facebook.com/abuanas.ctg/videos/327549754275640/ 

 সালাতে হাত কোথায় বাধবেন?

মোহাম্মদ সাইদুর রহমান

 সহীহ বুখারীর হাদীসে এসেছে;
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُوْنَ أَنْ يَّضَعَ الرَّجُلُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِى الصَّلَوةِ، قَالَ أبو حَازِمٍ : لاَ أَعْلَمُ إِلاَّ يَنْمِىْ ذَالِكَ إِلَى النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ
সাহল ইবনু সা’দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; ‘লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হতো যেন তারা ছালাতের সময় ডান হাত বাম হাতের উপরে রাখে। আবু হাযেম বলেন যে, ছাহাবী সাহল বিন সা‘দ এই আদেশটিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে সম্পর্কিত করতেন বলেই আমি জানি’। (সহীহুল বুখারী: ৭৪০)

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের একাধিক সরকারী ও বেসরকারী প্রকাশনা সংস্থা কর্তৃক অনুদিত ও প্রকাশিত বঙ্গানুবাদ বুখারী শরীফে উপরোক্ত হাদীছটির অনুবাদে “ডান হাত বাম হাতের কব্জির উপরে”- লেখা হয়েছে। তারা অনুবাদের মধ্যে ذِرَاعٌ (যিরা) অর্থ ‘কব্জি’ কথাটি যোগ করেছেন। হাদীছের অনুবাদে এভাবে কমবেশী করা ভয়ংকর গর্হিত কাজ। এইসব গর্হিত কাজ বুজার জন্য ذِرَاعٌ (যিরা) শব্দের সঠিক অর্থ জানা ও বুঝার প্রয়োজন।

ذِرَاعٌ (যিরা)- শব্দের শাব্দিক অর্থঃ
ذِرَاعٌ (যিরা) শব্দটি (ذ ر ع) ধাতু থেকে এসেছে। কুরআনের দুই জায়গায় শব্দটি এসেছে। আল-কাহফ, ১৮/১৮ এবং আল-হাক্কাহ, ৬৯/৩২। আরবী-বাংলা অভিধানে ذِرَاعٌ (যিরা) অর্থ এসেছে বাহু, হাত, গজ। আর كَفّ (কাফ) অর্থ এসেছে হাতের তালু, হাতের কব্জি, হাতের থাবা।
ذِرَاعٌ (যিরা) অর্থ কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ হাত’ (আল-মু‘জামুল ওয়াসীত্ব)।

ذِرَاعٌ (যিরা) মানে কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুল পর্যন্ত অংশকে বোঝায়। সেই জন্য আল-হারবী গারীবুল হাদীস (১/২৭৭) এ লিখেছেন যে, “আয-যিরা কনুই এর নিম্ন অংশ থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের উপরিভাগের সম্পূর্ণ অংশ”।
তাছাড়া, যিরার এই অর্থ এসেছে লুগাত কিতাবেও, উদাহরণস্বরূপ দেখুন; “লিসান আল-আরাব ৮/৯৩, তাজ উল-উরুস ১/৫২১৭, কিতাব আল-আয়ানঃ ২/৯৬ , আল-মুজাম আল-ওয়াসিতঃ ১/৩১১, তাহযীব আল-লুগাহ; ২/১৮৯, কিতান আল-খুলিয়াত ১/৭৩০, এবং অন্যান্য”।

দারুল উল দেওবন্দের প্রাক্তন শিক্ষক মাওলানা ওয়াহিদ উয-জামান কাসমী আল-কায়রাওনী, লিখেছেন যে, “যিরা মানে; কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অংশকে বোঝায়।” (কামুস আল যাদীদ, পৃষ্ঠা-৩০৮, কুতুবখানা হোশাইনিয়া দেওবন্দ)

কুরআন ও হাদীসের দলীলঃ

১ম দলীলঃ

একটি হাদীসে দুটি দলীল আছে; ذِرَاع (যিরা) ও (কাফ) كَفّ উভয় শব্দ আছে।
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ فِي سَفَرٍ فَعَرَّسَ بِلَيْلٍ اضْطَجَعَ عَلَى يَمِينِهِ وَإِذَا عَرَّسَ قُبَيْلَ الصُّبْحِ نَصَبَ ذِرَاعَهُ وَوَضَعَ رَأْسَهُ عَلَى كَفِّهِ
আবু কাতাদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফররত অবস্থায় রাতে ঘুম থেকে জাগ্রত হলে তাঁর ডান কাতে শুয়ে থাকতেন। আর ভোরের কাছাকাছি সময়ে জাগ্রত হলে তাঁর (ذِرَاع) বাহু দাঁড় করিয়ে (كَفّ) হাতের তালুতে ভর রেখে শুয়ে থাকতেন। (সহিহ মুসলিম: ১৪৫১)

এই হাদীসে ذِرَاع (যিরা) বলতে সম্পুর্ণ বাহুকে বুজাচ্ছে। এবং (কাফ) كَفّ বলতে হাতের কব্জি বা হাতের তালুকে বুজাচ্ছে।

২য় দলীলঃ

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ قَالَ اعْتَدِلُوا فِي السُّجُودِ، وَلاَ يَبْسُطْ أَحَدُكُمْ ذِرَاعَيْهِ انْبِسَاطَ الْكَلْبِ
আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; তোমরা সিজদার মধ্যে (অঙ্গ প্রত্যঙ্গের) ভারসাম্য বজায় রাখ আর তোমাদের কেউ যেন তার (ذِرَاعَيْ) বাহুদ্বয়কে কুকুরের মত বিছিয়ে না দেয়। (সহীহুল বুখারী: ৮২২, ৫৩২; সহিহ মুসলিম: ৯৮৯)

যদি এখানে কব্জি অনুবাদ করি তাহলে অর্থ হবে;
“তোমরা সিজদার মধ্যে (অঙ্গ প্রত্যঙ্গের) ভারসাম্য বজায় রাখ আর তোমাদের কেউ যেন তার কব্জিদ্বয়কে কুকুরের মত বিছিয়ে না দেয়।”
এখন আপনারা মাটিতে কব্জি না রেখে কিভাবে সিজদা করবেন?
অতএব ذِرَاع (যিরা) অর্থ হবে বাহু বা হাত।

৩য় দলীলঃ

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোসলের হাদীসে ذِرَاع (যিরা) শব্দ এসেছে। কুলি করে, নাকে পানি দিয়ে, মুখ-মন্ডল ধৌত করে তারপর আপনি কি দু’হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবেন নাকি দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করবেন?
عَنْ مَيْمُونَةَ، قَالَتْ وَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ وَضَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَضُوءًا لِجَنَابَةٍ فَأَكْفَأَ بِيَمِينِهِ عَلَى شِمَالِهِ مَرَّتَيْنِ، أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ غَسَلَ فَرْجَهُ، ثُمَّ ضَرَبَ يَدَهُ بِالأَرْضِ ـ أَوِ الْحَائِطِ ـ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ، وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَذِرَاعَيْهِ، ثُمَّ أَفَاضَ عَلَى رَأْسِهِ الْمَاءَ، ثُمَّ غَسَلَ جَسَدَهُ، ثُمَّ تَنَحَّى فَغَسَلَ رِجْلَيْهِ‏.‏ قَالَتْ فَأَتَيْتُهُ بِخِرْقَةٍ، فَلَمْ يُرِدْهَا، فَجَعَلَ يَنْفُضُ بِيَدِهِ‏
মায়মূনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাবাতের গোসলের জন্য পানি রাখলেন, তারপর দু’বার বা তিনবার ডান হাতে বাম হাতের উপর পানি ঢাললেন এবং তাঁর লজ্জাস্থান ধুলেন। তারপর তাঁর হাত মাটিতে বা দেওয়ালে দু’বার বা তিনবার ঘষলেন। পরে তিনি কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন এবং মুখ ও (ذِرَاعَيْ) দু’ হাত ধুলেন। তারপর তাঁর মাথায় পানি ঢাললেন এবং তাঁর শরীর ধুলেন। একটু সরে গিয়ে তাঁর দুই পা ধুলেন। মায়মূনা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, এরপর আমি একখন্ড কাপড় দিলে তিনি তা নিলেন না, বরং নিজ হাতে পানি ঝেড়ে ফেলতে থাকলেন। (সহীহুল বুখারী : ২৭৪)
এই হাদীস প্রমাণ করছে ذِرَاع (যিরা) মানে ‘কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ হাত’।

৪র্থ দলীলঃ
অজুর ক্ষেত্রে মুখ-মন্ডলের পর কি সম্পুর্ণ হাত ধৌত করবেন নাকি কব্জি পর্যন্ত ধৌত করবেন?
عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِيَقْضِيَ حَاجَتَهُ فَلَمَّا رَجَعَ تَلَقَّيْتُهُ بِالإِدَاوَةِ فَصَبَبْتُ عَلَيْهِ فَغَسَلَ يَدَيْهِ ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثُمَّ ذَهَبَ لِيَغْسِلَ ذِرَاعَيْهِ فَضَاقَتِ الْجُبَّةُ فَأَخْرَجَهُمَا مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ فَغَسَلَهُمَا وَمَسَحَ رَأْسَهُ وَمَسَحَ عَلَى خُفَّيْهِ ثُمَّ صَلَّى بِنَا
মুগীরা ইবনু শু’বা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজত পূরণের জন্য বের হলেন। (হাজত শেষে) তিনি যখন ফিরে এলেন তখন বদনা নিয়ে আমি তাঁর কাছে গেলাম। আমি তাঁকে পানি ঢেলে দিলাম। তিনি তাঁর উভয় হাত ধুইলেন। তারপর মুখমন্ডল ধুইলেন। তারপর (ذِرَاعَيْ) উভয় বাহু ধোয়ার ইচ্ছা করলেন, কিন্তু জোববায় (অপ্রশস্ততার কারণে) তা আটকে গেল। তিনি জোববার নিচে দিয়ে বের করে উভয় বাহু ধুইয়ে ফেললেন এবং মাথা মাসেহ করলেন ও উভয় মোযার ওপর মাসেহ করলেন। তারপর আমাদের সাথে স্বলাত আদায় করলেন। (সহিহ মুসলিম: ৫১৮)

এই হাদীসও প্রমাণ করছে ذِرَاع (যিরা) মানে ‘কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ হাত’।

৫ম দলীলঃ

سَبْعُونَ ذِرَاعًا (সাবউ’না যিরা-‘আ) অর্থ কি হবে সত্তর হাত নাকি সত্তর কব্জি?
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَعْرَقُ النَّاسُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يَذْهَبَ عَرَقُهُمْ فِي الأَرْضِ سَبْعِينَ ذِرَاعًا، وَيُلْجِمُهُمْ حَتَّى يَبْلُغَ آذَانَهُمْ
আবূ হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; কিয়ামতের দিন মানুষের ঘাম হবে এমনকি তাদের ঘাম যমীনে সত্তর হাত ছড়িয়ে যাবে এবং তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে নিমজ্জিত হবে; এমনকি কান পর্যন্ত। (সহীহুল বুখারী: ৬৫৩২)

কুরআনের বাণী;
خُذُوهُ فَغُلُّوهُ ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ ثُمَّ فِي سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوهُ
(ফেরেশতাদেরকে বলা হবে;) ধর ওকে, গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও, অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। ‘তারপর তাকে বাঁধ এমন এক শেকলে যার দৈর্ঘ্য হবে সত্তর হাত।’ (আল-হাক্কাহ, ৬৯/৩০-৩২)

কুরআনের আয়াতে সবাই سَبْعُونَ ذِرَاعًا (সাবউ’না যিরা-‘আ) অর্থ করেছে সত্তর হাত। যদি এখানে কব্জি অনুবাদ করি তাহলে কি অনুবাদ হবে? সত্তর কব্জি আর কেউই এ অনুবাদ করেন নাই।

৬ষ্ট দলীলঃ

আদম (আলাইহিস সালাম)-এর দৈর্ঘ্য কত ছিল سِتُّونَ ذِرَاعًا ষাট হাত নাকি ষাট কব্জি? এবং যারা জান্নাতে যাবে তাদের দৈর্ঘ্য হবে আদমের আকৃতিতে। সেটা কত হবে سِتُّونَ ذِرَاعًا ষাট হাত নাকি ষাট কব্জি?
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ عَلَى صُورَتِهِ، طُولُهُ سِتُّونَ ذِرَاعًا، فَلَمَّا خَلَقَهُ قَالَ اذْهَبْ فَسَلِّمْ عَلَى أُولَئِكَ النَّفَرِ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ جُلُوسٌ، فَاسْتَمِعْ مَا يُحَيُّونَكَ، فَإِنَّهَا تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ ذُرِّيَّتِكَ‏.‏ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ‏.‏ فَقَالُوا السَّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ‏.‏ فَزَادُوهُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ، فَكُلُّ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ آدَمَ، فَلَمْ يَزَلِ الْخَلْقُ يَنْقُصُ بَعْدُ حَتَّى الآنَ
আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আল্লাহ তাআলা আদম (আলাইহিস সালাম)-কে তার আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন, তার দৈর্ঘ্য ছিল سِتُّونَ ذِرَاعًا ষাট হাত, তিনি তাকে সৃষ্টি করে বলেন: যাও সেখানে উপবিষ্ট ফেরেশতাদের দলকে সালাম কর, খেয়াল করে শোন তারা তোমাকে কি অভিবাদন জানায়, কারণ তাই হচ্ছে তোমার ও তোমার সন্তানের অভিবাদন। তিনি বললেন: السَّلَامُ عَلَيْكُمْ তারা বলল: السَّلَامُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللَّهِ তারা অতিরিক্ত বলল। সুতরাং যে কেউ জান্নাতে যাবে সে আদমের আকৃতিতে যাবে, আর তারপর থেকে মানুষ ছোট হওয়া আরম্ভ করছে, এখন পর্যন্ত তা হচ্ছে। (সহীহুল বুখারী: ৬২২৭; ৩৩২৬; সহিহ মুসলিম: ৭০৫৫)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أَوَّلَ زُمْرَةٍ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ عَلَى أَشَدِّ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي السَّمَاءِ إِضَاءَةً، لاَ يَبُولُونَ وَلاَ يَتَغَوَّطُونَ وَلاَ يَتْفِلُونَ وَلاَ يَمْتَخِطُونَ، أَمْشَاطُهُمُ الذَّهَبُ، وَرَشْحُهُمُ الْمِسْكُ، وَمَجَامِرُهُمُ الأَلُوَّةُ الأَنْجُوجُ عُودُ الطِّيبِ، وَأَزْوَاجُهُمُ الْحُورُ الْعِينُ، عَلَى خَلْقِ رَجُلٍ وَاحِدٍ عَلَى صُورَةِ أَبِيهِمْ آدَمَ، سِتُّونَ ذِرَاعًا فِي السَّمَاءِ
আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; সর্বপ্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের মুখমণ্ডল হবে পূর্ণিমার রাতের চাঁদের মত উজ্জ্বল। তারপর যে দল তাদের অনুগামী হবে তাদের মুখমণ্ডল হবে আকাশের সর্বাদিক দীপ্তমান উজ্জ্বল তারকার মত। তারা পেশাব করবে না আর পায়খানা করবে না। তাদের থুথু ফেলার প্রয়োজন হবে না এবং তাদের নাক ঝাড়বে না। তাদের চিরুনি হবে স্বর্ণের তৈরি। তাদের ঘাম হবে মেশকের ন্যায় সুগন্ধপূর্ণ। তাদের ধনুচি হবে সুগন্ধযুক্ত চন্দন কাঠের। বড় চক্ষু-বিশিষ্ট হুরগণ হবে তাদের স্ত্রী। তাদের সকলের দেহের গঠন হবে একই। তারা সবাই তাদের আদি-পিতা আদম (আলাইহিস সালাম)-এর আকৃতিতে হবে। উচ্ছতায় তাদের দেহের দৈর্ঘ্য হবে سِتُّونَ ذِرَاعًا ষাট হাত বিশিষ্ট। (সহীহুল বুখারী: ৩৩২৭: সহিহ মুসলিম: ৭০৪২)

হাদীসগুলো দ্বারা প্রমাণ হয় ذِرَاع (যিরা) মানে সম্পুর্ণ এক হাত।

৭ম দলীলঃ

আমরা আল্লাহ দিকে এক বিঘত অগ্রসর হলে মহান আল্লাহ কি ذِرَاعًا (যিরা‘আ) অর্থাৎ এক হাত অগ্রসর হবেন নাকি এক কব্জি অগ্রসর হবে?
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا وَأَزِيدُ وَمَنْ جَاءَ بِالسَّيِّئَةِ فَجَزَاؤُهُ سَيِّئَةٌ مِثْلُهَا أَوْ أَغْفِرُ وَمَنْ تَقَرَّبَ مِنِّي شِبْرًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ ذِرَاعًا وَمَنْ تَقَرَّبَ مِنِّي ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ مِنْهُ بَاعًا وَمَنْ أَتَانِي يَمْشِي أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً وَمَنْ لَقِيَنِي بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطِيئَةً لاَ يُشْرِكُ بِي شَيْئًا لَقِيتُهُ بِمِثْلِهَا مَغْفِرَةً
আবু যার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; আল্লাহ রাববুল আলামীন ইরশাদ করেছেন; যে ব্যক্তি একটি নেক কাজ করবে তার জন্য রয়েছে দশগুন পূরস্কার; আর আমি তাকে আরও বাড়িয়ে দেব। অ্যর যে ব্যক্তি একটি মন্দ কাজ করবে তার প্রতিফল সেই কাজের অনুরুপ কিংবা আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। যে ব্যক্তি আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয় আমি তার দিকে ذِرَاعًا এক হাত এগিয়ে আসি। আর যে ব্যক্তি আমার দিকে ذِرَاعًا এক হাত অগ্রসর হয় আমি তার দিকে এক গজ এগিয়ে আসি। যে ব্যক্তি আমার কাছে হেঁটে আসে আমি তার দিকে দৌড়িয়ে আসি। যে ব্যক্তি আমার কাছে পৃথিবী সমান গোনাহ করে এবং আমার সংগে কাউকে শরীক করে নাই আমি তার সংগে অনুরুপ তুল্য মাগফিরাত নিয়ে সাক্ষাৎ করি। (সহিহ মুসলিম: ৬৭২৬)

এ হাদীস প্রমাণ করছে ذِرَاع (যিরা) মানে সম্পুর্ণ এক হাত।
ব্যতিক্রমঃ
চতুষ্পদ জন্তুর ক্ষেত্রে ذِرَاعِ (যিরা) অর্থ সামনের পা। যা সুরা আরাফের ১৮ নং আয়াত ও হাদীসে পাওয়া যায়।
وَتَحْسَبُهُمْ أَيْقَاظًا وَهُمْ رُقُودٌ ۚ وَنُقَلِّبُهُمْ ذَاتَ الْيَمِينِ وَذَاتَ الشِّمَالِ ۖ وَكَلْبُهُمْ بَاسِطٌ ذِرَاعَيْهِ بِالْوَصِيدِ ۚ لَوِ اطَّلَعْتَ عَلَيْهِمْ لَوَلَّيْتَ مِنْهُمْ فِرَارًا وَلَمُلِئْتَ مِنْهُمْ رُعْبًا
তুমি তাদেরকে মনে করতে জাগ্রত, অথচ তারা ছিল ঘুমন্ত, আমি তাদেরকে পার্শ্ব পরিবর্তন করাতাম ডানে ও বামে এবং তাদের কুকুর ছিল সামনের পা দুটি গুহাদ্বারে প্রসারিত করে। যদি তুমি উঁকি দিয়ে তাদেরকে দেখতে, তবে পেছন ফিরে পলায়ন করতে এবং তাদের ভয়ে আতংক গ্রস্ত হয়ে পড়তে। (আল-কাহফ, ১৮/১৮)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْ دُعِيتُ إِلَى ذِرَاعٍ أَوْ كُرَاعٍ لأَجَبْتُ، وَلَوْ أُهْدِيَ إِلَىَّذِرَاعٌ أَوْ كُرَاعٌ لَقَبِلْتُ
আবূ হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; যদি আমাকে হালাল পশুর পায়া খেতে আহবান করা হয়, তবু তা আমি গ্রহণ করব আর যদি আমাকে পায়া হাদিয়া দেওয়া হয়, তবে আমি তা গ্রহণ করবো। (সহীহুল বুখারী: ২৫৬৮, ৫১৭৮)

عَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ، أَنَّ أَبَاهُ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُ ذِرَاعًا يَحْتَزُّ مِنْهَا، فَدُعِيَ إِلَى الصَّلاَةِ فَقَامَ فَطَرَحَ السِّكِّينَ، فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ‏
আমর ইবনু উমাইয়্যা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি দেখলাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বকরির) সামনের রানের গোশত কেটে খাচ্ছেন, এমন সময় তাঁকে স্বলাতের জন্য ডাকা হল। তখনই তিনি ছুরি রেখে দিয়ে উঠে গেলেন ও স্বলাত আদায় করলেন, কিন্তু এজন্য নতুন উযু করেননি। (সহীহুল বুখারী: ৬৭৫)

এবার মুল আলোচনায় আসা যাক; সালাতে হাত কোথায় বাধবেন?

১ম দলীলঃ
বুখারীর সহীহ হাদীস পুনরায় উল্লেখ করলাম;
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُوْنَ أَنْ يَّضَعَ الرَّجُلُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِى الصَّلَوةِ، قَالَ أبو حَازِمٍ : لاَ أَعْلَمُ إِلاَّ يَنْمِىْ ذَالِكَ إِلَى النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ
সাহল ইবনু সা’দ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; ‘লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হতো যেন তারা ছালাতের সময় ডান হাত বাম হাতের উপরে রাখে। আবু হাযেম বলেন যে, ছাহাবী সাহল বিন সা‘দ এই আদেশটিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে সম্পর্কিত করতেন বলেই আমি জানি’। (সহীহুল বুখারী: ৭৪০)

পুর্বে উল্লেখিত কুরআনের আয়াত এবং হাদীসের দলীলের আলোকে স্পষ্ট যে, ذِرَاعٌ (যিরা) মানে কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ হাত। মূলতঃ মধ্যমা আঙ্গুল থেকে কনুই পর্যন্ত পুরো ডান হাত বাম হাতের উপরে রাখলে উভয় হাতই বুকের উপরই চলে আসে। এমতাবস্থায় হাত নাভীর নীচে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এইভাবে হাত রেখে নাভীর নীচে স্থাপন করতে চাইলে মাজা বাঁকা করে নাভীর নীচে হাত নিয়ে যেতে হবে, যা উচিত নয়।

২য় দলীলঃ
নিম্নোক্ত রেওয়ায়াত সমূহে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা এসেছে হাত বুকের উপর রাখতে হবে।
عَنْ طَاوُسٍ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ يَضَعُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى ثُمَّ يَشُدُّ بَيْنَهُمَا عَلَى صَدْرِهِ وَهُوَ فِي الصَّلَاةِ
ত্বাঊস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বলাতের মধ্যে তাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতেন এবং উভয় হাত বুকের উপর শক্ত করে ধরে রাখতেন। [আবু দাঊদ হা/৭৫৯, সনদ সহিহ]
উল্লেখ্য যে, উক্ত হাদীছকে অনেকে নিজস্ব গোঁড়ামী ও ব্যক্তিত্বের বলে যঈফ বলে প্রত্যাখ্যান করতে চান। মুহাদ্দিছগণের মন্তব্যের তোয়াক্কা করেন না। নিজেকে শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ বলে পরিচয় দিতে চান অথচ আলবানী উক্ত হাদীছ উল্লেখ করে বলেন,
رَوَاهُ أَبُوْ دَاوُدَ بِإِسْنَادٍ صَحِيْحٍ عَنْهُ
‘আবুদাঊদ ত্বাঊস থেকে এই হাদীছকে সহিহ সনদে বর্ণনা করেছেন’। অতঃপর তিনি অন্যের দাবী খন্ডন করে বলেন,
وَهُوَ وَإِنْ كَانَ مُرْسَلاً فَهُوَ حُجَّةٌ عِنْدَ جَمِيْعِ الْعُلَمَاءِ عَلَى اخْتِلاَفِ مَذَاهِبِهِمْ فِى الْمُرْسَلِ لِأَنَّهُ صَحِيْحُ السَّنَدِ إِلَى الْمُرْسَلِ وَقَدْ جاَءَ مَوْصُوْلاً مِنْ طُرُقٍ كَمَا أَشَرْنَا إِلَيْهِ آنِفًا فَكاَنَ حُجَّةً عِنْدَ الْجَمِيْعِ.
‘ত্বাউস যদিও মুরসাল রাবী তবুও তিনি সকল মুহাদ্দিছের নিকট দলীল যোগ্য। কারণ তিনি মুরসাল হলেও সনদের জন্য সহিহ। তা ছাড়াও এই হাদীছ মারফূ‘ হিসাবে অনেক গুলো সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। যেমনটি আমি এই মাত্রই উল্লেখ করলাম। অতএব তা সকল মুহাদ্দিছের নিকট দলীলযোগ্য। [ইরওয়াউল গালীল ২/৭১ পৃঃ।]
এছাড়াও এই হাদীছকে আলবানী সহিহ আবু দাঊদে উল্লেখ করেছেন। [সহিহ আবু দাঊদ হা/৭৫৯]

৩য় দলীলঃ
ওয়ায়েল বিন হুজর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
صَلَّيْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى عَلَى صَدْرِهِ، رواه ابْنُ خُزَيْمَةَ وَصَحَّحَهُ
‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছালাত আদায় করলাম। এমতাবস্থায় দেখলাম যে, তিনি বাম হাতের উপরে ডান হাত স্বীয় বুকের উপরে রাখলেন’। (ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৪৭৯; আবু দাঊদ হা/৭৫৫, ইবনু মাস‘ঊদ হ’তে; ঐ, হা/৭৫৯)
উপরোক্ত সহীহ হাদীসে বুকের উপরে হাত বাঁধা সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য এসেছে। উক্ত হাদীছের টীকায় শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন,
إِسْنَادُهُ ضَعِيْفٌ لِأَنَّ مُؤَمَّلاً وَهُوَ ابْنُ إِسْمَاعِيْلَ سَيِّئُ الْحِفْظِ لَكِنَّ الْحَدِيْثَ صَحِيْحٌ جَاءَ مِنْ طُرُقٍ أُخْرَى بِمَعْنَاهُ وَفِى الْوَضْعِ عَلَى الصَّدْرِ أَحَادِيْثُ تَشْهَدُ لَهُ.
এর সনদ যঈফ। কারণ তা ত্রুটিপূর্ণ। আর তিনি হলেন ইবনু ইসমাঈ। তার স্মৃতি শক্তি দুর্বল। তবে হাদীছ সহিহ। এই হাদীছ অন্য সূত্রে একই অর্থে বর্ণিত হয়েছে। বুকের উপর হাত রাখার আরো যে হাদীছগুলো আছে, সেগুলো এর জন্য সাক্ষ্য প্রদান করে’।
ইমাম শাওকানী বলেন,
وَلاَ شَيْءَ فِي الْبَابِ أَصَحُّ مِنْ حَدِيْثِ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ الْمَذْكُوْرِ فِيْ صَحِيْحِ ابْنِ خُزَيْمَةَ
‘হাত বাঁধা বিষয়ে ছহীহ ইবনু খুযায়মাতে ওয়ায়েল বিন হুজর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীছের চাইতে বিশুদ্ধতম কোন হাদীছ আর নেই’। (নায়লুল আওত্বার ৩/২৫।)
উল্লেখ্য যে, বাম হাতের উপরে ডান হাত রাখা সম্পর্কে ১৮ জন ছাহাবী ও ২ জন তাবেঈ থেকে মোট ২০টি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। ইবনু আব্দিল বার্র বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এর বিপরীত কিছুই বর্ণিত হয়নি এবং এটাই জমহূর ছাহাবা ও তাবেঈনের অনুসৃত পদ্ধতি। (নায়লুল আওত্বার ৩/২২; ফিক্বহুস সুন্নাহ; কায়রো: ১৪১২/১৯৯২) ১/১০৯।)

৪র্থ দলীলঃ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ الله عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله إِنَّا مَعْشَرَ الأَنْبِيَاءِ أُمِرْنَا أَنْ نُعَجِّلَ إِفْطَارَنَا وَأَنْ نُؤَخِّرَ سَحُوْرَنَا وَنَضَعَ أَيْمَانَنَا عَلَى شَمَائِلِنَا فِي الصَّلاَةِ.
ইবনু আববাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আমরা নবীদের দল। আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; আমরা যেন দ্রুত ইফতার করি এবং দেরিতে সাহারী করি আর স্বলাতের মধ্যে আমাদের ডান হাত বাম হাতের উপর যেন রাখি। [ইবনু হিববান হা/১৭৬৭; সনদ সহিহ]

উল্লেখ্য যে, ‘নাভির নীচে হাত বাঁধা’ সম্পর্কে আহমাদ, আবুদাঊদ, মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ প্রভৃতি হাদীছ গ্রন্থে চারজন ছাহাবী ও দু’জন তাবেঈ থেকে যে চারটি হাদীছ ও দু’টি ‘আছার’ বর্ণিত হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে মুহাদ্দেছীনের বক্তব্য হ’ল- لاَ يَصْلُحُ وَاحِدٌ مِنْهَا لِلْاِسْتِدْلاَلِ ‘(যঈফ হওয়ার কারণে) এগুলির একটিও দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়’। (মির‘আতুল মাফাতীহ (দিল্লী: ৪র্থ সংস্করণ, ১৪১৫/১৯৯৫) ৩/৬৩; তুহফাতুল আহওয়াযী ২/৮৯।)
ছালাতে দাঁড়িয়ে মেয়েদের জন্য বুকে হাত ও পুরুষের জন্য নাভীর নীচে হাত বাঁধার যে রেওয়াজ চালু আছে, হাদীছে বা আছারে এর কোন প্রমাণ নেই। (মির‘আত (লাহোর ১ম সংস্করণ, ১৩৮০/১৯৬১) ১/৫৫৮; ঐ, ৩/৬৩; তুহফা ২/৮৩।)

বরং এটাই স্বতঃসিদ্ধ যে, ছালাতের মধ্যকার ফরয ও সুন্নাত সমূহ মুসলিম নারী ও পুরুষ সকলে একই নিয়মে আদায় করবে। (মির‘আত ৩/৫৯ পৃঃ; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৯; নায়লুল আওত্বার ৩/১৯।)

Sunday 2 October 2016

কাযা আদায় করার নিয়ম কি?

(২০৯) নিদ্রা বা ভুলে যাওয়ার কারণে যদি আমার এক বা ততোধিক ফরয ছালাত ছুটে যায়, তবে তা কাযা আদায় করার নিয়ম কি? প্রথমে কি বর্তমান সময়ের ছালাত আদায় করব তারপর কাযা নামায আদায় করব? নাকি আগে কাযা নামায সমূহ তারপর বর্তমান নামায আদায় করব?

ছুটে যাওয়া কাযা নামায সমূহ প্রথমে আদায় করবে। তারপর বর্তমান সময়ের নামায আদায় করবে। দেরী করা ঠিক হবে না। মানুষের মধ্যে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে, কারো যদি একাধিক ফরয নামায ছুটে গিয়ে থাকে, তবে ঐ নামাযের সময় উপস্থিত হলে তার কাযা আদায় করবে। যেমন, আজ কারো ফজর নামায ছুটে গেছে। সে উক্ত নামায পরবর্তী দিন ফজরের সময়ে কাযা আদায় করবে। এটা মারাত্মক ভুল এবং নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাণী ও কর্মের বিরোধী।

নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণীঃ

مَنْ نَسِيَ صَلَاةً أَوْ نَامَ عَنْهَا فَكَفَّارَتُهَا أَنْ يُصَلِّيَهَا إِذَا ذَكَرَهَا

“যে ব্যক্তি ছালাত আদায় না করে ঘুমিয়ে পড়ে অথবা ভুলে যায়, সে যেন ইহা আদায় করে যখনই স্মরণ হবে।” এখানে এরূপ বলা হয়নি, দ্বিতীয় দিন উহা আদায় করে নিবে।

খন্দক যুদ্ধের সময় নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর কয়েকটি নামায ছুটে যায়। তখন তিনি বর্তমান সময়ের নামাযের আগেই উক্ত নামাযগুলোর কাযা আদায় করেন।

অতএব ছুটে যাওয়া নামাযের ক্বাযা প্রথমে আদায় করবে তারপর বর্তমান সময়ের নামায আদায় করবে। কিন্তু যদি ভুলক্রমে বা অজ্ঞতা বশতঃ ক্বাযা নামাযের আগে বর্তমান সময়ের নামায আদায় করে ফেলে তবে তা বিশুদ্ধ হবে। কেননা এটা তার ওযর।

উল্লেখ্য যে, ক্বাযা নামায সমূহ তিন ভাগে বিভক্তঃ

প্রথম প্রকারঃ দেরী করার ওযর দূর হয়ে গেলেই ক্বাযা আদায় করে নিবে। তা হচ্ছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের ক্ষেত্রে। অনুরূপভাবে বিতর ও সুন্নাত নামায সমূহ।

দ্বিতীয় প্রকারঃ যার পরিবর্তে অন্য নামায ক্বাযা হিসেবে আদায় করবে। তা হচ্ছে, জুমআর নামায। এ নামায ছুটে গেলে তার পরিবর্তে যোহর নামায আদায় করবে। কেউ যদি জুমআর দিন ইমামের দ্বিতীয় রাকাআতের রুকূ থেকে মাথা উঠানোর পর নামাযে শামিল হয়, তবে সে যোহর নামায আদায় করবে। ঐ অবস্থায় যোহরের নিয়ত করে ইমামের সাথে নামাযে শামিল হবে। অনুরূপভাবে কেউ যদি ইমামের সালামের পর আসে তবে সেও যোহর পড়বে।

তবে কেউ যদি দ্বিতীয় রাকাআতে ইমামের সাথে রুকূ পায়, তবে সে জুমআর নামাযই আদায় করবে। অর্থাৎ ইমাম সালাম ফিরালে এক রাকাআত আদায় করবে। অনেক লোক ইমামের দ্বিতীয় রাকাআতের রুকূ থেকে মাথা উঠানোর পর জুমআর নামাযে শামিল হয়। অতঃপর সালাম শেষে জুমআর নামায হিসেবে দু‘রাকাআত নামায আদায় করে। এটা ভুল। বরং তার জন্য উচিত হচ্ছে ইমামের সালাম ফেরানোর পর যোহর হিসেবে চার রাকাআত নামায আদায় করা। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

مَنْ أَدْرَكَ رَكْعَةً مِنَ الصَّلاةِ فَقَدْ أَدْرَكَ الصَّلاةَ

“যে ব্যক্তি নামাযের এক রাকআত পেয়ে গেল, সে পূর্ণ ছালাত পেয়ে গেল।” এদ্বারা বুঝা যায় কেউ যদি এর কম পায় সে নামায পেল না। তখন জুমআর কাযা আদায় করবে যোহর নামায আদায় করার মাধ্যমে। এই কারণে নারীরা বাড়িতে, মসজিদে আসতে অপারগ অসুস্থ ব্যক্তিরা যোহর নামায আদায় করবে। তারা জুমআ আদায় করবে না। তারা যদি জুমআ আদায়ও করে, তাদের নামায প্রত্যাখ্যাত হবে- বাতিল বলে গণ্য হবে।

তৃতীয় প্রকারঃ এমন নামায যা ছুটে যাওয়া সময়েই কাযা আদায় করতে হবে। আর তা হচ্ছে ঈদের নামায। ঈদের দিন সম্পর্কে জানা গেল না। কিন্তু সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে যাওয়া পর জানা গেল যে আজকে ঈদের দিন ছিল। এক্ষেত্রে বিদ্বানগণ বলেন, পরবর্তী দিন সকাল বেলা উক্ত ঈদের নামাযের কাযা আদায় করতে হবে। কেননা ঈদের নামায আদায় করার সময় হচ্ছে সকাল বেলা।

ফুটনোটঃ  ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম:  সালাত
  শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)
Main link=
http://www.hadithbd.com/showqa.php?pageNum_RsQA=2&b1=2&s1=47

Q.Ans. no.of salat rakats.fard.sunnat.

আমি আপনাকে একটা প্রশ্ন করতে চাই, তাহলো এই যে, নামাযের পূর্বে ওযু করতে হয়, এরপর নামাযে কত রাকায়াত ফরয কত রাকায়াত ওয়াজিব কত রাকায়াত সুন্নাত এই গুলো আপনি জেনেছেন কিভাবে? আশা করি আপনি যেভাবে যেনেছেন ওইটাই আমার করা এই প্রশ্নের উত্তরে দিবেন, রিফারেন্স সহ।  (যদিও প্রশ্নগুলো অনেক সহজ বলে মনে করতে পারেন)
Ans:- sunnat= https://islamqa.info/en/1048


fard:- http://islam.stackexchange.com/questions/11188/where-do-we-find-the-number-of-rakats-in-prayers-in-the-hadith-literature.
---------------------------------------
Who can answer of madhbi brothers as following question regarding rakats of salat(namaz)?
++++++++++++++
Q:- We are aware of the number of rakats that are there in each salat. How did we get these numbers ? Are they mentioned in any hadith ? Also, the number of rakats that are farz and those that are wajib.. where are all these mentioned ?
--------------------------sgis-------------------------