Sunday 29 November 2015

প্রশ্ন: সুৎরাবিহীন অবস্থায় একজন মুছল্লীর কতটুকু সামনে দিয়ে অতিক্রম করা যাবে ?


প্রশ্ন: সুৎরাবিহীন অবস্থায় একজন মুছল্লীর কতটুকু সামনে দিয়ে অতিক্রম করা যাবে ??
-----
উত্তর: উক্ত অবস্থায় যরূরী প্রয়োজনে মুছল্লীর সিজদার স্থানের বাহির দিয়ে অতিক্রম করা যাবে।
(বুখারী হা/৫০৯, মুসলিম হা/৫০৫)
উক্ত হাদীছে بين يدي المصلي দ্বারা মুছল্লীর সিজদার স্থান পর্যন্ত বুঝানো হয়েছে।
(ইবনু হাজার, ফৎহুলবারী ঐ হাদীছের ব্যাখ্যা দ্রঃ; ফাতাওয়া ওছায়মীন, মাসআলা নং ৬২৪)
-
মসজিদ ছাড়া অন্যত্র একাকী ছালাত আদায়কারী মুছল্লী সামনে সুতরা রেখে ছালাত আদায় করবেন।
(আবুদাঊদ হা/৬৯৮; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৪১)।
-
যদি সুতরা না রেখে ছালাত আদায় করেন, তবে তার সিজদার স্থান পর্যন্ত জায়গার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করা যাবে না।
(বুখারী হা/৫১০; মুসলিম হা/৫০৭; মিশকাত হা/৭৭৬)
-
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ কোন বস্ত্তকে সম্মুখে রেখে ছালাত আদায় করবে যা তাকে লোকদের থেকে সুৎরা বা পর্দা স্বরূপ হবে, এমন অবস্থায় তার সম্মুখ থেকে যদি কেউ অতিক্রম করতে চায়, তাহ’লে সে যেন তাকে বাধা দেয়।
(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭৭৭ ‘ছালাত’ অধ্যায় ‘সুৎরা’ অনুচ্ছেদ। বিস্তারিত দ্রষ্টব্য; মির‘আতুল মাফাতীহ হা/৭৮৬-এর ব্যাখ্যা; উছায়মীন, আরকানুল ইসলাম ২/৪৯৩ পৃঃ, প্রশ্নোত্তর সংখ্যা ২৬৭)
--------------------------------
দারুল ইফতা
হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
মাসিক আত-তাহরীক প্রশ্নোওর
সহীহ্ ইসলামী জিজ্ঞাসা ভিডিও

Monday 16 November 2015

মাসালায়ে রফ'উ ইয়াদাইনঃ চূড়ান্ত পর্যালোচনা (১ম অংশ)

                                                মাসালায়ে রফউল ইয়াদাইনঃ চূড়ান্ত পর্যালোচনা



                                                              সুলাইমান আল উমাইর



                                                           বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম



আসসালামু আলাইকুম। রফউল ইয়াদাইন সম্পরকে হানাফি মত বা ব্যাখ্যা নিয়ে অনেকেই বর্তমানে এরূপ বলে থাকে যে, হানাফিদের মত বা ব্যাখ্যা সহিহ হাদিস বিরোধী, সাহাবি এবং তাবেয়িদের আমলের পরিপন্থী। এভাবে একদল লোক সাধারন মানুষকে বিভ্রান্তির মধ্যে নিপতিত করছেন। তাদের মধ্যে বরতমান আহলে হাদিসগন অন্যতম।



আরেক দল লোক বিবাদমান দুই মতের লোকদের মধ্যে হানাফিদেরকে এসব বিষয় নিয়ে ইখতিলাফের জন্য দায়ী মনে করেন। কিন্তু এই ইখতিলাফ উপমহাদেশে সর্বপ্রথম শুরু করেন আহলে হাদিসরাই।



১৮৭৯ সালের কথা। যখন মুসলমানরা ছিল ইংরেজদের কবলে পরে নির্যাতিত।সিপাহি বিদ্রহের বেরথতার পরে সবাই যখন ভগ্নহৃদয়, তখন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়ে বসল লাহোরের মুস্লিম নাম ধারি এক আলেম। তিনি হলেন মাওলানা হোসেন আহমাদ বাটালভি। যাকে বলা হয় আহলে হাদিসদের ব্যারিস্টার। তিনি হানাফিদের টার্গেট করে উপমহাদেশের মুসলমানদের ঐক্য নস্যাৎ করতে একটি লিফলেট প্রচার করল। লিফলেটে এমন ১০ টি আমল তুলে ধরা হল এবং তা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমান দিতে বলা হল  যার উপর হানাফিরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আমল করে আসছিল। এই দশটি আমলের মধ্যে রফউল ইয়াদাইন না করার ব্যাপারেও প্রমান চাওয়া হয়েছিল যা সহিহ ও সরিহ হতে হবে। এর উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের ঐক্য যেন বিনষ্ট হয় আর এর মাধমে ইংরেজদের ডিভাইড অ্যান্ড রুল নীতির প্রতিষ্ঠা করা।যাতে হানাফিদের মাঝে আগুন জলে ওঠে আর ইংরেজরা ভালভাবে দেশ শাসন করতে পারে।মাহমুদ হাসান রহ এর ‘আদিল্লায়ে কামেলা’ নামক গ্রন্থে  বাতালভি সাহেবের ১০ টি চ্যাঁলেঞ্জ এর সমুচিত জবাব প্রদান করা হয়েছে। এই বইটির সহজিকিকরন করে সাইদ আহমাদ পালন পুরি (দা। বা।) ‘তোহফায়ে আহলে হাদিস’ নামক গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশ করেছেন যা বর্তমানে বাংলাদেশে পাওয়া যায়।



রফউল ইয়াদাইন না করার হাদিসগুলো আমলি ভাবে মুতাওয়াতির।কিন্তু হাত না উঠানোর হাদিস গুলো অর্থ গতভাবে মুতাওয়াতির।(নায়লুল ফারকাদাইন ফি রফউল ইয়াদাইন)



এর প্রমান ইসলামী বিশের দুই কেন্দ্র তথা মদিনা ও কুফাতে সবার আমল হাত না উঠানর পক্ষে দলিল।

ইমাম মালিক রহ মদিনাবাসির আমল দেখে হাত না উঠানোর হাদিস গ্রহন করেছেন।(বিদায়াতুল মুজতাহিদ ১/১৪৩) । এ থেকে একটি জিনিস বিশেষ ভাবে নজরে পরে যে ইমাম মালিক রহ ইবনে উমার রা এর হাদিসের  প্রতি বেশি জোর দেন,এমনকি মুআত্তা মালিকের বেশিরভাগ হাদিস ই ইবনে উমার রা এর থেকে নাফে রহ এর সুত্রে মালিক রহ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু হাত উঠানোর ব্যাপারে মালিক রহ ইবনে উমার রা এর হাদিসকে মাঝহাবে রুপ দেননি।তিনি মদিনাবাসির আমলকে এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিয়েছেন।



আবার কুফার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, কুফাই এমন শহর যে শহরে কেউ রফউল ইয়াদাইন করতেন না।

মাওলানা আব্দুল হাই লাখনভি মুয়াত্তা মুহাম্মদ এর টিকায় ইমাম মুহাম্মদ ইবনে নাসর মারয়াযি শাফি রহ এর উধ্রিতি উল্লেখ করেনঃ

“আমরা কোন পুরো শহরবাসী সম্পর্কে এরকম জানি না, যারা সবাই রুকুতে যাওয়ার ও ওঠার সময় রফউল ইয়াদাইন ছেড়ে দিতেন,শুধু কুফাবাসি এরূপ করতেন”।(আত্তালিকুল মুমাজ্জাদ পৃষ্ঠা ৯১)



অর্থাৎ কুফা ছাড়া অন্য সকল শহরে রফুল ইয়াদাইন পক্ষে বিপক্ষে লোক ছিল কিন্তু শুধু কুফার অধিবাসীরাই এমন ছিলেন যেখানে ফকিহ মুহাদ্দিস থেকে শুরু করে  জনসাধারন পরযন্ত কেউই রফুল ইয়াদাইন করতেন না। সাদ ইবনে আবি অয়াক্কাস রা,আব্দুল্ললাহ ইবনে মাসুদ রা,আবু মুসা আসআরি রা থেকে শুরু করে কমপক্ষে ৫০০ সাহাবির বাস ছিল এই কুফা নগরিতে যা সর্বজনস্বীকৃত। আল্লামা আজালি রহঃ এর মতে ১৫০০ সাহাবির কথা উল্লেখ করেছেন এর মধ্যে আবার ৭০ জন বদরি সাহাবি এবং ৩০০ জন বায়াতে রেযঅয়ানের ছিলেন।এরা সবাই শুধু তাকবিরে তাহরিমার সময় হাত উঠাতেন, অন্য কথাও নয়।



রাসুল সাঃ এর ওফাতের পর ইলমের তিনটি কেন্দ্র ছিলঃ ১। মদিনা

                                                                       ২।মক্কা

                                                                       ৩।কুফা

মক্কা মুকাররামার প্রধান শিক্ষক ছিলেন হযরত ইবনে আব্বাস  রা, মদিনায় হযরত ইবনে উমার রা এবং হযরত জায়েদ ইবনে সাবিত রা, এবং কুফায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা। (আলা’মুল মুয়াক্কিঈন)



 তাই আল্লমা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরি বলেন, ‘এ কথা অনস্বীকার্য যে,যে আমল যে পরিমান অধিক হয় তার রেওয়াআতও  সে পরিমানে হ্রাস পায়। কেননা অবিছিন্ন আমল নিজেই একটি বড় শক্তিশালী দলিল। এবং এক্ষেত্রে রেওয়াআতেরও বেশি প্রয়োজন পরে না’।

হানাফিগণ হাত তোলা প্রমানিত এ কথা অস্বীকার করেন না। কিন্তু যারা বলেন হাত না তোলা হাদিস দ্বারা প্রমানিত নয়,  প্রমানাদির আলোকে হানাফিগণ অবশ্যই তাদের মত খণ্ডন করতে পারেন 



হাত না ওঠানোর রেওয়াআত সমুহের মধ্যে সবচেয়ে বিশুদ্ধ রেওয়াআত হচ্ছে আলকামা রহঃ এর সুত্রে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ রা এর হাদিসটি। হাদিসটি নিন্মরুপঃ







১। 



257 - حَدَّثَنَا هَنَّادٌ قَالَ: حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَلْقَمَةَ، قَالَ: قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ: «أَلَا أُصَلِّي بِكُمْ صَلَاةَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَصَلَّى، فَلَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلَّا فِي أَوَّلِ مَرَّةٍ»



“হযরত আলকামা রহঃ বলেন, হযরত ইবনে মাসুদ রা বলেছেন আমি তোমাদেরকে রাসুল সা এর নামাজ পরে দেখাব কি? একথা বলে তিনি নামাজ পরলেন এবং তাকবিরে তাহরিমা বেতিত কোথাও রফুল ইয়াদাইন করেননি। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭৪৮, সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-২৫৭, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১৩০৪, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৬৪৫,১০২৯(ইফাবা), সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৩৬৩, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৬৮১}



ইমাম তিরমিযি রহঃ বলেছেন হাদিসটি হাসান।

হাফিয ইবনে হাযার রহঃ একে সহিহ বলেছেন।

দারে কুতনি,ইবনে কাত্তান রহঃ হাদিস্তিকে সহিহ বলেছেন। (দারে কুতনি) 



আর গায়রে মুকাল্লেদ্দের ইমাম ইবনে হাযম রহঃ এই হাদিসকে সহিহ বলেছেন।(আলমুহাল্লা খণ্ড ৪ পৃষ্ঠা ৮৮,আলতালখিসুল হাবির ১/৮৩) 



এ হাদিসের সকল রাবি মুসলিমের মানসম্মত।[আল জাওহারুন নাকি ১/১৩৭]



*আবার অনেকে বলেন,ইমাম তিরমিযি রহঃ আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহঃ এর উক্তি উল্লেখ করেছেন যে, হাত না তোলার ব্যাপারে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ রা যে বলেছেন,’রাসুল সা নামাযে কেবল একবার রফুল ইয়াদাইন করেছেন তারপর আর করেননি’ এই হাদিসটি প্রতিস্তিত নয় কিন্তু

হাত তোলার ব্যাপারে হাদিসটি সুপ্রমানিত ও প্রতিস্থিত।



এর জবাব হল এই উক্তিটি রফুউ ইয়াদাইন করা শিরোনামে  তিরমিযি রহঃ উল্লেখ করেছেন। আর উক্তিতে যে হাদিসের কথা বলা হয়েছে তা হল অন্য একটি হাদিস।উক্তিতির দিকে লক্ষ্য করুন।যা মাসুদ রা সরাসরি রাসুল সা এর আমল অর্থাৎ মারফু সুত্র থেকে বর্ণনা করছেন। এটি উপরোক্ত হাদিস এর মত নয়।তিরমিযির হাদিসে মাসুদ রা নামাজ পরে দেখিয়েছেন, মুবারক রহঃ এর উক্তিতে এই হাদিসের বর্ণনা নেই যেটিকে তিনি সুপ্রথিস্তিত নয় বলেছেন  এটি হল অই হাদিস যা তাহাবি রহঃ বর্ণনা করেছেন দেখুন তাহাবি শরিফ প্রথম খণ্ড ১২৫৫ নং হাদিস এবং এই হাদিসটি সুপ্রথিস্তিত নয়।  স্বয়ং আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহঃ এর সুত্রে  সুনানে নাসায়িতে আল্কামা রহঃ এর হাদিসটি বরনিত হএছে। তাই মুবারক রহঃ এই হাদিসের কথা বলেননি কেননা তার সুত্রেই এই হাদিস বরনিত আছে দেখুন সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৬৪৫,১০২৯(ইফাবা)(দরসে তিরমিযি প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা ৩৯)



তাই ইমাম তিরমিযি রহঃ আল্কামা সুত্রে প্রাপ্ত হাদিসটি পরবর্তীতে আলাদা শিরোনামে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, ‘হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর (রাফয়ে ইয়াদাইন না করা সংক্রান্ত) হাদীস ‘হাসান’ পর্যায়ে উত্তীর্ণ এবং অনেক আহলে ইলম সাহাবা-তাবেয়ীন এই মত পোষন করতেন। ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহ. ও কুফাবাসী ফকীহগণ এই ফতোয়া দিয়েছেন’।



*এই হাদিস সম্বন্ধে  অনেকে বলেন এই হাদিসের ভিত্তি আসিম ইবনে কুলাইব এর উপর।আর এটা তার একক বিবরন।



এর জবাব হল আসিম ইবনে কুলাইব মুসলিম শরিফের একজন নির্ভরযোগ্য রাবি।[জাইলায়ি ১/২০৭] তাই তার একক বর্ণনা ক্ষতিকর নয়।

মুসলিম শরিফের ৫৩২৯ নং হাদিসের রাবি হলেন আসিম ইবনে কুলায়েব দেখুন নিচে:








আবু হাতিম বলেন,আসিম ইবনে কুলাইব  একজন সালেহ ও সৎ বেক্তি।[তাহযিবুত তাহযিব ৫/৫৫,৫৬]

ইবনে হিব্বান তাকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন, এবং ইবনে মইন ও ইমাম নাসায়ি বলেন, তিনি একজন নির্ভরযোগ্য রাবি।[তাহযিবুত তাহযিব ৫/৫৫,৫৬]



আবু দাউদ রহ বলেন, আসিম ইবনে কুলায়েব ছিলেন কুফাবাসিদের মধ্যে উত্তম বেক্তি।[তাহযিবুত তাহযিব ৫/৫৫,৫৬]





এছাড়া আবু হানিফা রহঃ  হাম্মাদ ইবনে সুলাইমান থেকে ,তিনি ইব্রাহিম নখয়ি থেকে,তিনি ইব্রাহিম রহঃ আসওয়াদ থেকে উক্ত হাদিসটি বরনিত হয়েছে,  দেখুন মুস্নাদে ইমাম আযম আবু হানিফা রহঃ হাদিস নং ৯৭।



*আরেকটি অভিযোগ অনেকে করেন যে, আসঅয়াদ রহঃ এর সাথে আল্কামা রহঃ এর সাক্ষাত প্রমানিত নয়।



এর জবাব হল আব্দুর রহমান ইবনে আসঅয়াদ রহঃ ইব্রাহিম নখই রহঃ এর সমকালীন।আর ইব্রাহিম রহঃ এর শ্রবণ আল্কামা থেকে প্রমানিত।ইমাম মুসলিম এর মতে, বিশুদ্ধতার জন্য সমকালিনতাই যথেষ্ট। তাই এই হাদিসটি মুস্লিমের শর্ত অনুযায়ী সহিহ। তাছাড়া ইমাম আবু হানিফা আসঅয়াদের পরিবর্তে ইব্রাহিম নখয়ি রহঃ থেকে বর্ণনা করেছেন যা উক্ত হাদিসকে সমরথন করে।(দরসে তিরমিযি ২/৪১)



*অনেকে এরকম বলেন যে মাসুদ রা যেরকম রুকুতে তাতবিক রহিত হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে পারেননি তেমনি হাত উত্তলনের বিষয়েও অজ্ঞ ছিলেন।



এর উত্তরে বলা হবে,  তিনি বছরের পর বছর রাসুল সা এর পেছনে নামাজ আদায় করেছেন,অথচ ইবনে উমার রা তখন শিশুদের কাতারে দাঁড়াতেন।তাই এরূপ প্রমানহিন কথা বলা এক প্রকার ধৃষ্টতা ছাড়া আর কিছুই নয়।



 আল্লামা আহমাদ মহাম্মদ শাকের রহঃ  এই হাদিসের অভিযগ খণ্ডন করতে গিয়ে বলেনঃ

এই হাদিসের সনদ সহিহ। ইবনে হাযমসহ অনেক হাফেযে হাদিস একে সহিহ বলেছেন। অন্নরা এতে যেসব ইল্লত বা ত্রুটি সাব্যস্ত করেছেন সেগুল আদৌ কোন ইল্লতি নয়।(শরহু জামি তিরমিযি ২/৪১) 









আওযাই রহঃ ও আবু হানিফা রহঃ এর বাহাসে ইমাম আবু হানিফা রহঃ তার উক্ত হাদিসের রেওয়াআতকে প্রাধান্য দিয়েছেন রাবিদের ফিকহের ভিত্তিতে। কেননা ফিকহবিদরাই হাদিসের সঠিক মর্ম সম্পর্কে  অবগত। ইমাম তিরমিযি রহ বলেন,হাদিসের আসল অর্থের যথার্থ মর্ম ইসলামী আইনবিদরাই সর্বাধিক জানেন।–(তিরমিযিঃ১/১১৮)   আর আওযাই রহঃ ইবনে উমার রা এর হাদিসকে যেটি সালিম  তার পিতা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা থেকে বর্ণনা করেছেন সনদের স্রেস্থত্তের ভিত্তিতে প্রাধান্য দিয়েছেন।



তাই ইবনে মাসুদ রা হাদিসের সব রাবি ফকিহ। আর হাদিসে মুসালসাল বিল ফুকাহা অন্যান্য হাদিসের তুলনায় অগ্রগণ্য।

অধিকাংশ ফকিহ রফুল ইয়াদাইন করতেন না।



আবু বকর ইবনে আইয়াশ রহঃ বলেনঃ আমি কোন ফকিহ কে কখনও প্রথম তাকবির বেতিত হাত তুলতে দেখিনি।(তাহাবি ১/৪৩১)





আহলে হাদিসদের অভিযোগ, হাদিসটি মালুল এবং  সুফিয়ান সাওরি রহ মুদাল্ললিস।




তাদের অভিযোগ সুফিয়ান সাওরির উস্তাদ আসিম ইবনে কুলায়েব রহ এর আরেক ছাত্র

ইবনে ইদ্রিসের কিতাবে ثُمَّ لَا يَعُودُ এই অতিরিক্ত অংশটি নেই, তাই হাদিসটি মালুল।



আমাদের উলামাদের জবাব এই যে, ইবনে ইদ্রিস থেকে সুফিয়ান সাওরি যে বড় ফকিহ ও ইমাম তা বলাই বাহুল্য।



তাই ভুল হলে ইবনে ইদ্রিসের কিতাবে উল্লেখিত হাদিসের হতে পারে সুফিয়ান সাওরির নয়।



তিনিই শুধু এই অতিরিক্ত কথাটি বর্ণনা করেননি বরং ইমাম আবু হানিফা থেকে এক ভিন্ন সুত্রে 'তারপর পুনরায় আর হাত উত্তোলন করতেন না' কথাটি রয়েছে।[দেখুন মুস্নাদে ইমাম আবু হানিফা ৯৭ নং হাদিস]



এছাড়াও অতিরিক্ত বর্ণনাটি ক্ষতিকর নয় প্রকৃতপক্ষে তিনি উক্ত কথার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেছেন মাত্র।



অতিরিক্ত কথাটা ছারাও আমাদের আমল প্রমানিত হয়।



কেননা তিরমিযির বরননায় আছে 'তিনি শুধু প্রথম বারই দু হাত উত্তোলন করলেন'।[তিরমিযি হাদিস নং ২৫৭]

মানে এরপর আর তা উঠান নি শুধু প্রথমবার উঠিয়েছেন এটা ত বলার অপেক্ষা রাখে না উক্তি দ্বারাই তা পরিষ্কার।

এই কথাটিই নাসাইর সনদে উল্লেখ আছে সুফিয়ান সাওরির বর্ণনায়।



আরেকটি অভিযোগ তিনি(সুফিয়ান সাওরি) তাদলিস করেন যা ইবনে মইন বলছেন। [আবু হাতিম এর আজ্জরাহ অয়াততাদিল ৪/২২৫]



কিন্তু প্রশ্ন হল, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদের হাদিস বর্ণনা করতে গিয়ে সুফিয়ান সাওরি রহ তাদলিস করেছেন তার প্রমান কি? এই হাদিসে তো তাদলিস করা হয় নি। তাদলিসের প্রমান দিন। 





এটা সর্বজন স্বীকৃত কথা যে রাবি সিকাহ ও হুজ্জত তার তাদলিস গ্রহনজজ্ঞ।সুফিয়ান সাওরির মত রাবির বেলায় ত কথাই নেই। তারা ত কথা লুকিয়েছেন, ইবনে মইন রহ সুফিয়ান সাওরি সম্বন্ধে বলেছেন,






সুফিয়ান সাওরি রহ সিকাহ।[ জরাহ তাদিলঃ আবু হাতিম ৪/২২৫]



আরও বলেছেন,






সুফিয়ান রহ আমিরুল মুমিনিন ফিল হাদিস। [ জরাহ তাদিলঃ আবু হাতিম ৪/২২৫]



তাদলীস বলার দ্বারা কি ইয়াহইয়া বিন মাঈন সুফিয়ান সাওরীর বদনাম করতে চাচ্ছেন? না এটা সম্ভব নয়। কারণ যিনি তাকে বলছেন আমীরুল মুমিনীনা ফিল হাদীস, আবার বলছেন সিক্বা। তিনি আবার তাদলীস করার কথা বলে বদনাম করেন কিভাবে? আসলে তাদলীসের অনেক প্রকার আছে। এখানে দোষনীয় তাদলীস উদ্দেশ্য নয়।



আমাদের প্রশ্ন হল যখন সুফিয়ান সাওরি রহ জোরে আমিন বলার হাদিস বর্ণনা করেন তখন তো আপনারা সুফিয়ান রহ কে শুবা রহ এর চেয়েও অধিক স্মরণশক্তির অধিকারি হিসেবে গণ্য করেন অথচ শুবা রহ হাদিস শাস্ত্রে শীর্ষ নেত্রিত্তের অধিকারী, এই তারতম্য আপনারা কিসের ভিত্তিতে করেন?সুফিয়ান রহ সম্বন্ধে আপনাদের অভিযোগ জোরে আমিন বলা বিষয়ে আপনাদের বিরুদ্ধে আমাদের উত্তর, ব্যাপারটা হৃদয়ঙ্গম করুন।







২।





হযরত বারা ইবনে আযিব (রা) বলেন- রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ) যখন নামাজ আরম্ভ করতেন তখন তার হস্তদ্বয় কর্ণদ্বয় পর্যন্ত উত্তোলন করতেন । অতঃপর আর তা করতেন না । [ সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭৫০, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-১৬৮৯, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৪৫৫ ]



এই হাদিসের ব্যাপারে বলা হয় যে,  হাদিসটিকে দাউদ রহঃ সহিহ নয় বলেছেন।



এর জবাব হল দাউদ রহঃ এই হাদিসটিকে তিনটি সুত্রে বর্ণনা করেছেন।

প্রথম দুটি সুত্রে হাদিসটি নির্ভর করে ইয়াযিদ ইবনে আবু যিয়াদের উপর।

আরেকটি সুত্রে এটি নির্ভরশীল আব্দুর রহমান ইবনে আবু লায়লার উপর।

ইমাম আবু দাউদ প্রথম দুই সুত্রের হাদিস সম্বন্ধে নিরব ছিলেন শুধুমাত্র যেটি আব্দুর রহমান ইবনে আবু লায়ালা থেকে বর্ণিত সেটিকে সহিহ নয় বলেছেন কেননা তিনি দুর্বল।সুতরাং প্রথম দুই সুত্র অনুযায়ী হাদিসটি সহিহ।(দরসে তিরমিযি ২/৪২)



আব্দুর রহমান ইবনে আবি লায়লার হাদিসটিও কমপক্ষে হাসান পর্যায়ের।[ইলাউস সুনান ২/৪২৭]



আবার মুল পাণ্ডুলিপিতে আবু দাউদ এর এই উক্তি নেই। শুধুমাত্র মুজতবায়ি নোসখায় এই মন্তব্বের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তাই এ ব্যাপারে সন্দেহ থেকেই যায় যে এটি দাউদ রহঃ এর উক্তি কিনা।(ইযাহুল মুসলিম ২/১২৪)







শায়খ আলবানী লিখেছেন, والحق أنه حديث صحيح و إسناده صحيح علي شرط مسلم ولم نجد لمن أعله حجة يصلح التعلق بها و رد الحديث من أجلها

অর্থাৎ সত্য কথা হলো,  হাদীসটি সহীহ। হাদীসের সনদ ইমাম মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ। যারা এই হাদীসের উপর অভিযোগ করেছে, তাদের এমন কোন অভিযোগ দেখিনি যা এই হাদীসের উপর আরোপিত হতে পারে এবং যার কারণে হাদীসটি প্রত্যাখ্যাত হবে। [ মেশকাতুল মাসবিহ, তাহকীক, শায়খ আলবানী, খ.১, পৃ.২৫৪।]



আলবানী সাহেব তার আবু দাউদ শরীফের তাহকীকে লিখেছেন, فالحق أنه حديث صحيح ولم نجد في كلماتهم ما ينهض علي تضعيف الحديث অর্থাৎ যারা হাদীসটির উপর অভিযোগ করেছে, তাদের এমন কোন অভিযোগ পাইনি যার দ্বারা হাদীসটি যয়ীফ বলা যাবে। বরং সত্য কথা হলো, হাদীসটি সহীহ। [সহীহু সুনানি আবি দাউদ, পৃ.৩৩৮, হাদীস নং ৭৩৩]



অত:পর, আলবানী সাহেব এই হাদীসের উপর যারা অভিযোগ করেছে, তাদের অমূলক অভিযোগগুলোর উত্তর দিয়েছেন এবং সেগুলো খণ্ডন করেছেন।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, আহলে হাদীস আলেম আতাউল্লাহ সাহেব তার তালি’কাতুস সালাফিয়্যা আলান নাসায়ি কিতাবে হাদীসটি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। এবং বলেছেন, ইনসাফের কথা হলো হাদীসটি সহীহ। (তা’লিকাতুস সালাফিয়্যা আলান নাসায়ি, খ.১, পৃ.১২৩)।



৩।  عن ابن عباس قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ترفع الايدى فى سبعة مواطن، افتتاح الصلاة، واستقبال البيت و الصفا والمروة والموقفين وعند الحجر، (مصنف ابن ابى شيبة، رقم الحديث-2465)



হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেছেন-সাতটি জায়গায় হাত তুলতে হবে, ১-নামাযের শুরুতে। ২-কাবা শরীফের সামনে আসলে। ৩-সাফা পাহাড়ে উঠলে। ৪-মারওয়া পাহাড়ে উঠলে। ৫-আরাফায়। ৬-মুযাদালিফায়। ৭-হাজরে আসওয়াদের সামনে। {মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৪৬৫, আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-১২০৭২,মাযমাউয জাওয়াএদ ২/১০৩,সুনানে বায়হাকী-৫/৭২-৭৩}



ইমাম তাবরানি মারফু সূত্রে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম নাসায়ি থেকে। ইমাম নাসায়ি থেকে প্রসিদ্ধ আছে যে, তিনি কোন অগ্রহনযোগ্য হাদিস বর্ণনা করেন না, না কোন অনিরভরযোগ্য রাবি থেকে তা বর্ণনা করেন। সুতরাং হাদিসটি গ্রহন যোগ্য।



৪। হাফিয ইবনে হাযার আস্কালানি রহঃ ‘আদ দিরায়া ফি তাখরিযি আহাদিসিল হিদায়া’ তে হযরত আব্বাদ ইবনে যুবায়ের রহঃ এর মারফু রেওয়াআত বর্ণনা করেন,



‘রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওআ সাল্লাম যখন নামাজ শুরু করতেন তখন নামাজের শুরুতে হস্তদয় উঠাতেন।অতঃপর নামাজ শেষ করা পর্যন্ত আর হস্তদয় উত্তলন করতেন না।‘[বায়হাকি এই হাদিসটি খিলাফিয়াতে বর্ণনা করেছেন-নাসবুর রায়াহ১/৪০৪] 



শাহ সাহেব রহঃ বলেছেন এর সমস্ত রাবি নির্ভরযোগ্য।কিন্তু যুবায়ের রহঃ তাবীঈ। হাদিসটি মুরসাল। মুরসাল হাদিস আমাদের ও জুমহুরের মতে প্রমান।



৫। قال أخبرني سالم بن عبد الله عن أبيه قال : رأيت رسول الله صلى الله عليه و سلم إذا أفتتح الصلاة رفع يديه حذو منكبيه وإذا أراد أن يركع وبعد ما يرفع رأسه من الركوع فلا يرفع ولا بين السجدتين (مسند الحميدى، أحاديث عبد الله بن عمر بن الخطاب رضي الله عنه، رقم الحديث-614)



অনুবাদ-হযরত সালেম বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন-আমি রাসূল সাঃ কে দেখেখি, তিনি যখন নামায শুরু করতেন তখন কাঁধ বরাবর হাত উঠাতেন। আর যখন রুকু করতে চাইতেন এবং রুকু থেকে উঠতেন, তখন হাত উঠাতেন না। দুই সেজদার মাঝেও না। {মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-৬১৪}



৬।আসওয়াদ রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

আমি হযরত ওমর রাঃ-কে দেখেছি, তিনি শুধু প্রথম তাকবীরের সময় রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন, পরে করতেন না।রাবি জুবাইর ইবনে আদি রহঃ বলেনঃ এবং আমি ইব্রাহিম রহঃ এবং শাবি রহঃ কেও অনুরুপ করতে দেকেছি। ’ (তাহাবী: ১/১৬৪), ( তহাবি ১/৪৩০ হাদিস নং ১২৬৯ [ইফাবা])



তাহাবি রহঃ বলেনঃ এটা সহিহ হাদিস। যেহেতু এর ভিত্তি হাসান ইবনে আইয়াশ রহঃ এর উপর এবং তিনি নির্ভরযোগ্য প্রামাণ্য ও হুজ্জত রাবি।ইয়াহইয়া ইবনে মইন রহঃ তাকে নিরভরযজ্ঞ বলেছেন। (তাহাবী: ১/১৬৪,,মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ১/২৩৭),( তহাবি ১/৪৩০ হাদিস নং ১২৬৯ [ইফাবা])



আল্লামা যায়লায়ী রহঃ এই হাদীসকে সহীহ বলেছেন। সহীহ বুখারীর বিখ্যাত ভাষ্যকার আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী রহ. এই বর্ণনার সকল রাবীকে ছিকাহ (নির্ভরযোগ্য) বলেছেন। আলজাওহারুন নাকী গ্রন্থে বলা হয়েছে এই হাদীসের সনদ সহীহ মুসলিমের সনদের মতো শক্তিশালী।



৭। হযরত আলী (রা) নামাযে প্রথম তাকবীরে হাত উঠাতেন এরপর আর হাত উঠাতেন না। (সুনানে বায়হাকী : ২/৮০, তাহাবি ১/৪২৬ হাদিস নং ১২৫৯,৬০)



আল্লামা যায়লায়ী রহ. বর্ণনাটিকে সহীহ বলেছেন। সহীহ বুখারীর বিখ্যাত ভাষ্যকার আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী রহ. এই বর্ণনার সকল রাবীকে ছিকাহ (নির্ভরযোগ্য) বলেছেন। সহীহ বুখারীর অপর ভাষ্যকার আল্লামা আইনী রহ. বলেন, “এ সনদটি সহীহ মুসলিমের সনদের সমমানের।

(নাসবুর রায়াহ : ১/৪০৬, উমদাতুল কারী :৫/২৭৪, দিরায়াহ : ১/১১৩)



এছাড়াও, ইবনে ইসহাক রহঃ বলেনঃ ‘ইবনে মাসউদ রা এবং হযরত আলী রা এর শিস্যগন কেবল তাকবিরে তাহরিমা বেতিত হাত উত্তলন করতেন না’। আবি শাইবা এর সনদ সহিহ বলেছেন।(মুসান্নাফে আবি শাইবা ১/১৩৯)



৮।আসওয়াদ রহ. বলেছেন-

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. শুধু প্রথম তাকবীরের সময় রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন, এরপর আর করতেন না।

(জামউল মাসানীদ)



৯।ইব্রাহিম রহঃ বলেনঃ আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ রা সালাতের শুরু বেতিত কোথাও হাত তুলতেন না।(তাহাবি ১/৪২৯ হাদিস নং ১২৬৮,মুসান্নাফে আবি শাইবা ১/২৩৬,মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ২/৭১)



৯।মুজাহিদ রহ. বলেন-

আমি আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর পিছনে নামায পড়েছি। তিনি প্রথম তাকবীর ছাড়া অন্য সময় রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন না।

(তাহাবী : ১/১৬৩, ইবনে আবী শাইবা : ২/৪১৮ হাদীছ নং ২৪৬৭ [শায়খ আওয়ামা দা.বা.



তাহক্বীআল্লামা তুরকুমানী রহ. বলেছেন, এ বর্ণনার সনদ সহীহ

(আল-জাওহারুন নাকী)

এর সনদ সহিহ ।[তাহাবি ১/১০৮]



যারা আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা এর হাদিস দ্বারা দলিল পেশ করেন,তাদের সেই হাদিস এর পরিপন্থী আমল তিনি নিজেই করেছেন, এটা শুধু তখনই সম্ভব যখন তার কাছে রফুল ইয়াদাইন রহিত প্রমানিত হয়।

 ইবনে উমার রা থেকে রফুল ইয়াদাইন বিষয়ে যেসব হাদিস আছে তা অস্পষ্ট।কেননা তার  থেকে বিভিন্ন  রেওয়ায়াত পাওয়া যায়।



বায়হাকি রহঃ খিলাফিয়াতে মালিক রহঃ এর সুত্রে বর্ণনা করেন,ইবনে উমার রা বলেন, রাসুল সা প্রথম তাকবির বেতিত রফুল ইয়াদাইন করতেন না।(নসবুর রায়াহ ১/২১০)



এছাড়া ইমাম মালিক রহঃ  আলমুদানাওয়াতুল কুবরা গ্রন্থে ইবনে উমার রা থেকে মারফু হাদিস উল্লেখ করেছেন যেখানে রফুল ইয়াদাইনের কথা নেই।



এছারা সহিহ বুখারি ১/১০২ এ চার স্থানে ইবনে উমার রা থেকে ,উভয় সিজদার মাঝখানেও(আবু দাউদ ১/১০৮ সুনানে নাসায়ি ১/১৭২০, সিজদায় যাওয়ার সময়,( নাসায়ি ১/১৬৫),প্রতিবার উচু নিচু হয়ার ক্ষেত্রে (ইবনে মাজাহ) রফুল ইয়াদাইন এর বিবরন পাওয়া যায়।

ইমামগন জথা শাফি রহঃ তিন স্থানে গ্রহন করেছেন, অর্থাৎ তিনি রহিতের দিকেই গেছেন, কেননা সিজদা সিজদায় যাওয়ার সময়, ও সিজদা থেকে ওঠার সময় রফুল ইয়াদাইন তিনি রহিত মনে করেন।



 গভির ভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় আস্তে আস্তে নামাজ প্রশান্তির ও স্থিরতার দিকেই  গেছে।  প্রথমে নামজে  কথা বলা জায়েজ ছিল পরবর্তীতে রহিত,এদিক অদিক তাকান জায়েজ ছিল তাও রহিত হয়ে যায়, এভাবে প্রথম দিকে প্রচুর পরিমান রফুল ইয়াদাইন জায়েজ ছিল  তারপর তা হ্রাস করা হয় এবং পাচ স্থানে তা বিধিবদ্ধ হয়ে যায়, তারপর চার, তারপর শুধু তাকবিরের সময় তা অবশিষ্ট থেকে যায়। এর উদ্দেশ্য নামাযে স্থিরতা ও ধিরতা আনয়ন। কেননা কুরআন বলছেঃ ‘আল্লাহর ওয়াস্তে ধিরস্থিরভাবে নামাযে দাড়াও’ 



১০।ইবরাহীম নাখায়ী রহঃ বলেন-

নামাযের শুরু রাফয়ে ইয়াদাইন করার পর অন্য কোথায় রাফয়ে ইয়াদাইন করো না

(জামিউস মাসানীদ : ১/৩৫৩)



১১।মুগিরা রহঃ বলেনঃআমি একবার ইব্রাহিম রহঃ কে অয়ায়িল রা এর হাদিস সম্পর্কে বললাম তিনি নবি করিম সা কে দেখেছেন তিনি সালাতের শুরুতে  এবং রুকুর সময় এবং রুকু থেকে মাথা উথাবার সময় হাত তুলতেন। ইব্রাহিম রহঃ বল্লেন,অয়ায়িল রা তাকে একবার এরূপ করতে দেখে থাকেন তাহলে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ রা তাকে পঞ্চাশ বার এরূপ না করতে দেখেছেন।(তাহাবি ১/৪২৫ ইফাবা) 

এখানে অয়ায়িল ইবনে হুযর রা এর হাদিসের উত্তর দেওয়া হয়েছে।







আরেকটি ব্যাপারে অনেকে বলেন,তাহলে বুখারি রহঃ কি ভুল বলল। তিনি তো রফুল ইয়াদাইন নিয়ে একটি বইই লিখল।

এর উত্তরে বলা হবে,তিনি মুহাদ্দিস ছিলেন,মুফতি বা ফকিহ নন।ইমাম আবু হাফস কাবির রহঃ তাকে ইজতিহাদ করতে নিষেধ করেছিলেন,কিন্তু তিনি ফতোয়া দিলেন, যে শিশুর দুধপান কালিন সময়ে সে যদি কোন বকরির দুধ পান করে তাহলে দুধ সম্পর্ক স্থাপন হয়ে যাবে। এতে করে বুখারার আলেমরা তার উপর অসন্তুষ্ট হন।এ ব্যাপারে দেখুন ফাতহুল কাদিরঃ ৩/৩২০ –কিতাবুর রিযা তারিখুল খামিস ২/৩৮২



আল্লামা ইবনে হাযার মক্কি শাফী রহ আল খাইরাতুন হিসানে ৭০ পৃষ্ঠায় লিখেনঃ ইমাম বুখারি রহ আমিরুল মুমিনিন ফিল হাদিস ছিলেন , কিন্তু ফিকহের ব্যাপারে তিনি অবশ্যই দুর্বল ছিলেন। বস্তুত প্রতিটি শাস্ত্রের ন্যই আলাদা আলাদা মনিষী ছিলেন।

 তাই তিনি  ফিকহের ক্ষেত্রে অনুসরনযোগ্য নন।



এছারাও তিনি শাফি মাজহাবের ছিলেন।[দ্রষ্টব্য-তাবাক্বাতে শাফেয়ীয়্যাহ-৩/২, আল হিত্তাহ-১২১,আল ইনসাফ=৬৭,,আবজাদুল উলুম—৮১০ }

শাফি মাঝহাবে যেহেতু রফুল ইয়াদাইন রয়েছে সেহেতু তিনি এর পক্ষে বাহাস করতেই পারেন।



রফউল ইয়াদাইন নিয়ে সাহাবিদের যুগ থেকেই মতপার্থক্য দেখা যায়। কিন্তু এই ইখতিলাফ ছিল ইখতিলাফে মুবাহ। অর্থাৎ রফউল ইয়াদাইন নিয়ে ইখতিলাফ জায়েজ নাজায়েজ নিয়ে নয় বরং উত্তম অনুত্তম নিয়ে।



 ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. জোরে আমিন বলার প্রসঙ্গে  বলেন, ‘এটা ইখতিলাফে মুবাহর অন্তর্ভুক্ত, যেখানে কোনো পক্ষেরই নিন্দা করা যায় না। যে কাজটি করছে তারও না, যে করছে না তারও না। এটা নামাযে রাফয়ে ইয়াদাইন করা ও না-করার মতোই বিষয়।’

وهذا من الاختلاف المباح الذي لا يعنف فيه من فعله ولا من تركه وهذا كرفع اليدين في الصلاة وتركه

(যাদুল মাআদ ১/৭০, মিসর ১৩৬৯ হি., কুনূত প্রসঙ্গ)



বক্তব্বের শেষে তিনি বললেন যে, রফউল ইয়াদাইন যেমন ইখতিলাফে মুবাহ তেমনি আমিন জোরে বা আস্তে বলার বেপারটিও ইখতিলাফে মুবাহ। এ নিয়ে কোন পক্ষেরই নিন্দা করা যায় না।



ইমাম হুমাম রহঃ বলেনঃ তুমুল তর্ক বাহাসের পর প্রমান সিদ্ধ কথা এই যে উভয় রেওয়াআতি রাসুল সা থেকে প্রমানিত।সুতরাং বইপরিত্তের ক্ষেত্রে, প্রাধান্য দেওয়ার প্রয়োজন পরবে।(ফাতহুল কাদির ১/২৭০)



আনোয়ার কাস্মিরি শাহ বলেনঃ উভয়ক্ষেত্রেই নিরবিছিন্ন ভাবে আমল হয়ে আসছে সাহাবি, তাবীঈ ও তাবে তাবীঈ দের যুগ থেকেই তবে মতপারথক্ক হল কোনটি উত্তম(নাইলুল ফাকাদাইন)



সাঈদ ইবনে জুবাইর রা  রফে ইয়াদাইনের রহস্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেনঃ রফে ইয়াদাইনের উদ্দেশ্য নিছক মানুশের নামাজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা।(নাইলুল ফারকাদাইন)



 সাহাবি রা এর ব্যাপারে বাড়াবাড়ি থেকে বিরত ছিলেন।



আল্লামা ইবনে আবদুল বার রহ. রাফয়ে ইয়াদাইন সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরামের অবস্থান বর্ণনা করেছেন-



হযরত হাসান রা. সাহাবায়ে কেরামের কর্মনীতি সম্পর্কে বলেছেন, ‘তাদের মধ্যে যারা রাফয়ে ইয়াদাইন করতেন তারা রাফয়ে ইয়াদাইন পরিত্যাগকারীদের উপর আপত্তি করতেন না।

এ থেকে বোঝা যায়, রাফয়ে ইয়াদাইন জরুরি কিছু নয়।

(আত-তামহীদ : ৯/২২৬)



স্বয়ং রাসুল সা এর প্রিয় নাতি হাসান রা এর উক্তি থেকেই বঝা যায় রফউল ইয়াদাইন করা বা না করা নিয়ে আপত্তি করার কিছু নেই। কেননা সাহাবি রাদিয়াল্লাহু আনহুম এ ব্যাপারে ইখতিলাফে জড়াননি। কিন্তু বর্তমানে আহলে হাদিস ভাইরা ছাড়াও অনেকে এরকম রএছেন তারা এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেন এটা সাহাবীদের আমলের পরিপন্থী।



এই প্রবন্ধটি রফুল ইয়াদাইন প্রমানিত নয় বলে না, কিন্তু রফুল ইয়াদাইন না করাও প্রমানিত বলে। কিন্তু যারা বলে রফুল ইয়াদাইন না করা প্রমানিত নয়, এবং যারা রফুল ইয়াদাইন না করে আসছেন হঠাৎ তাদের আমল সহিহ কিনা এই বিষয়ে সন্দিহান হয়ে পরেছেন তাদের জন্য আমি এই অধম আল্লাহ তা আলার ইচ্ছায় প্রবন্ধটি লিখলাম,ভুল ভ্রান্তি ক্ষমার চোখে দেখবেন।

আসসালামু আলাইকুম।   [sourse- clicksgis]
more [-]= http://cellectionoffacebook.blogspot.in/2014/01/blog-post_3413.html

Rafee Yadin : ঈমাম বুখারি রাহঃ কেনো এই কিতাব টি লিখলেন? একটু পড়ে দেখুন দয়া করে।

সালাতে (নামাযে) রাফয়িল ইয়াদাইন (দুইহাত কাঁধ পর্যন্ত উঠানো) এবং সশব্দে (উচ্চস্বরে) আমীন বলা সংক্রান্ত


সালাতে (নামাযে) রাফয়িল ইয়াদাইন (দুইহাত কাঁধ পর্যন্ত উঠানো) এবং সশব্দে (উচ্চস্বরে) আমীন বলা সংক্রান্ত


মহান আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালা আমাদেরকে সঠিক জ্ঞান দান করুন, যাতে করে আমরা সহীহ হাদীসের আলোকে আমাদের আমলগুলো করতে পারি। নিম্নে কতিপয় তথ্য ‘রাফয়িল ইয়াদাইন’ (কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠানো) ও সশব্দে (উচ্চস্বরে)আমীন বলা সংক্রান্ত তথ্যাদি সহীহুল বুখারী ও মুসলিম এবং সুনান কিতাব- আবু দাউদ, মালিকী মুয়াত্তা, ইবনু নাসাঈ ও ইবনু মাজাহ থেকে সংকলিত হাদীসগুলো খণ্ড নম্বর, হাদীস নম্বর, পৃষ্ঠা নম্বর, এবং প্রকাশনীর নামসহ উপস্থাপন করা হলঃ-(যাতে করে প্রমাণ খুজতে কষ্ট না হয়)
রাফয়িল ইয়াদাইন (দুইহাত কাঁধ পর্যন্ত উঠানো)-
০১ । আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রঃ)--- সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত যে, নাবী (সাঃ) যখন সালাত শুরু করতেন, তখন উভয়হাত তাঁর কাঁধ বরাবর উঠাতেন। আর রুকু’তে যাওয়ার জন্য তাকবীর বলতেন এবং যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপভাবে দু’হাত উঠাতেন এবং সামিআল্লাহু লিমান হামিদা ও রাব্বানা অলাকাল হামদ্‌ বলতেন। কিন্তু সিজদার সময় এরূপ করতেন না। সহীহ বুখারী, ২য় খণ্ড, হাদিস নং ৬৯৯, পৃষ্ঠা নং১০০, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০২ । মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল(রঃ)---আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)কে দেখেছি, তিনি যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতেন তখন উভয়হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এবং যখন তিনি রুকুর জন্য তাকবীর বলতেন তখনও এরূপ করতেন। আবার যখন রুকু হতে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ করতেন এবং সামিআল্লাহু লিমান হামিদা বলতেন। তবে সিজদার সময় এরূপ করতেন না। সহীহ বুখারী, ২য় খণ্ড, হাদিস নং ৭০০, পৃষ্ঠা নং১০০, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৩ । ইসহাক ওয়াসিতি(রঃ)---আবু কিলাবা(রঃ)হতে বর্ণিত, তিনি মালিক ইবনু হুওয়ায়রিশ(রাঃ)কে দেখেছেন তিনি যখন সালাত আদায় করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং তাঁর দু’হাত উঠাতেন। আর রুকু করার ইচ্ছা করতেন তখনও তাঁর উভয়হাত উঠাতেন। আবার, যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখনও তাঁর উভয়হাত উঠাতেন এবং তিনি বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এরূপ করেছেন। সহীহ বুখারী, ২য় খণ্ড, হাদিস নং ৭০১, পৃষ্ঠানং১০১, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৪ । ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আত তামীমী, সাঈদ ইবনু মানসুর, আবু বাকর আবু শায়বা, আমর আন নাকিদ, যুহায়র ইবনু হারব ও ইবনু নুমায়র(রঃ)---সালিম এর পিতা ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)কে দেখেছি তিনি যখন সালাত আরম্ভ করতেন তখন উভয়হাত উঠাতেন। এমনকি তা একেবারে তাঁর উভয় কাঁধ বরাবর হয়ে যেত। আর রুকু করার পূর্বে এবং যখন রুকু থেকে উঠতেন তখনও অনুরূপভাবে হাত উঠাতেন। কিন্তু উভয় সিজদাহ’র মাঝখানে তিনি হাত উঠাতেন না। সহীহ মুসলিম, ২য় খণ্ড, হাদিস নং ৭৪৫, পৃষ্ঠা নং১৪১, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৫ । মুহাম্মদ ইবনু রাফী(রঃ)---- ইবনু উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ(সাঃ) যখন সালাতেরজন্য দাঁড়াতেন তখন উভয়হাত উঠাতেন। এমনকি তা তাঁর উভয় কাঁধ বরাবর হয়ে যেত। পরে যখন রুকু করার ইরাদা করতেন তখনও অনুরূপ করতেন। আবার রুকু থেকে যখন উঠতেন তখনও অনুরূপ করতেন। কিন্তু সিজদাহ থেকে যখন মাথা তুলতেন তখন এরূপ করতেন না। সহীহ মুসলিম, ২য় খণ্ড, হাদিস নং ৭৪৬, পৃষ্ঠা নং১৪১, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৬ । ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া--- আবু কিলাবা(রঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি মালিক ইবনু হুওয়ায়রিশ(রাঃ)কে দেখলেন, তিনি যখন সালাত আদায় করতে দাঁড়ালেন তখন তাকবীর বলে উভয়হাত উঠালেন। আর যখন রুকু করার ইচ্ছা করলেন তখন উভয়হাত উঠালেন।আর রুকু থেকে যখন মাথা উঠালেন তখনও আবার হাত উঠালেন। এবং পরে বর্ণনা করলেন যে, রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এরূপ করেছেন। সহীহ মুসলিম, ২য়খণ্ড, হাদিস নং ৭৪৮, পৃষ্ঠা নং১৪২, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৭ । আবু কামিল জাহদারী(রঃ) মালিক ইবনুল হুওয়ায়রিশ(রাঃ)থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)তাকবীর (তাকবীরে তাহরীমা) বলে উভয় কান বরাবর হাত উঠাতেন। আর যখন রুকু করতেন তখনও কান বরাবর উভয়হাত উঠাতেন। আবার যখন রুকু থেকে মাথা তুলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ বলতেন তখনও অনুরূপ করতেন। সহীহ মুসলিম, ২য় খণ্ড, হাদিস নং ৭৪৯, পৃষ্ঠা নং১৪২, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।এছাড়াও ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত সহীহ মুসলিম শরীফএর ২য় খণ্ডের ৭৫৮,৭৫৯,৭৬১ ও ৭৬২ নং হাদীস দেখুন।
০৮ । আহ্‌মাদ ইবনু হাম্বল---সালিম থেকে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ(সাঃ)কে সালাত আরম্ভ করার সময় তাঁর দু’হাত স্বীয় কাঁধ পর্যন্ত উঠাতে দেখেছি। অনুরূপভাবে রুকু করার সময় এবং রুকু থেকে মাথা উঠানোর পরও তাঁকে হাত উঠাতে দেখেছি। কিন্তু তিনি দুই সিজদাহ’র মাঝখানে হাত উঠাতেন না। এই হাদিসটি অনুরূপ-বুখারী,মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ ও ইবনু মাজাহতে বর্ণিত আছে। সুনানু আবু দাউদ, ১ম খণ্ড, হাদিস নং ৭২১, পৃষ্ঠা নং৩৯১, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৯ । ইবনুল মুসাফ্‌ফা আল হিমসী---আবদুল্লাহ ইবনু উমার(রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ(সাঃ) সালাতে দাঁড়ানোর সময় নিজের দুইহাত কান পর্যন্ত উঠাতেন। তিনি তাকবীর বলে রুকুতে যেত তখন দুইহাত উপরে তুলতেন। এবং রুকু হতে উঠার সময়ও স্বীয় উভয়হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ বলতেন। তিনি দুই সিজদাহ’র মধ্যে হাত উঠাতেন না এবং প্রত্যেক রুকুর জন্য তাকবীর বলার সময় তিনি হাত উঠাতেন এবং এরূপ সালাত শেষ করতেন। সুনানু আবু দাউদ, ১ম খণ্ড, হাদিস নং ৭২২, পৃষ্ঠা নং৩৯২, প্রকাশনী-ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১০ । উবায়দুল্লাহ ইবনু উমার---আবু ওয়ায়েল ইবনু হুজর(রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর সাথে সালাত আদায় করি। তিনি তাকবীর বলার সময় নিজের দুইহাত উঠাতেন, পরে তিনি তাঁর হাত কাপড়ের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে ডান হাত দিয়ে বাম হাত ধরতেন। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি যখন রুকুর ইরাদা করেন, তখন স্বীয় হাত দু’খানা বের করে উপরে উঠাতেন। তিনি রুকু হতে মাথা উঠানোর সময়ও দু’হাত উপরে উঠান। অতঃপর তিনি সিজদায় যান এবং স্বীয় চেহারা দুইহাতের তালুর মধ্যবর্তী স্থানে স্থাপন করেন। অতঃপর তিনি সিজদাহ হতে মাথা উঠাবার সময়ও স্বীয় হাত দু’খানা উত্তোলন করেন। এভাবে তিনি তাঁর সালাত শেষ করেন। রাবী মুহাম্মদ বলেন, এ সম্পর্কে আমি হাসান ইবনু আবুল হাসানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এমনি ছিল রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর সালাত(নামায) আদায়ের নিয়ম। যে ব্যক্তি এর অনুসরণ করেছে-সেতো করেছে এবং যে ব্যক্তি ত্যাগ করেছে- সেতো তা ত্যাগ করেছে-মুসলিম। ইমাম আবু দাউদ(রঃ) বলেন, হাম্মাম-ইবনু জাহাদা থেকে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু উক্ত বর্ণনায় সিজদাহ হতে মাথা উঠানোর সময় হাত উঠানোর কথা উল্লেখ্য নেই। সুনানু আবু দাউদ, ১ম খণ্ড, হাদিস নং ৭২৩, পৃষ্ঠা নং৩৯২-৩৯৩, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ। এ ছাড়াও আবু দাউদ এর পরবর্তী হাদীসগুলো যেমন- ৭২৬,৭৩০,৭৪৩,৭৪৪ ও ৭৪৫ নং হাদীসে বর্ণিত আছে।
১১ । আব্দুল্লাহ ইবনু উমার(রাঃ)---হতে বর্ণিত যে, নাবী (সাঃ) যখন সালাত (নামায)আরম্ভ করার সময় উভয়হাত কাঁধ বরাবর তুলতেন এবং যখন রুকু হইতে মাথা তুলতেন তখনও দুইহাত অনুরূপভাবে তুলতেন এবং বলতেন ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদা রাব্বানা অলাকাল হামদ্‌। অবশ্য সিজদাহ’র সময় তিনি হাত উঠাতেন না। মুয়াত্তা মালিক, ১ম খণ্ড, পরিচ্ছেদ-৪, রেওয়াত নং১৬, পৃষ্ঠা নং১২৮, প্রকাশণী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১২ । সলিম ইবনু আবদুল্লাহ(রঃ)হতে বর্ণিত,আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ)যখন নিচের দিকে ঝুঁকতেন ও মাথা উপরে তুলতেন তখন তাকবীর বলতেন। নাফি (রঃ) বর্ণিত, আবদুল্লাহ ইবনু উমার সালাত (নামায) আরম্ভ করার সময় উভয়হাত কাঁধ বরাবর তুলতেন। আর যখন রুকু হতে মাথা তুলতেন তখন দুইহাত কাঁধের একটু নিচ পর্যন্ত তুলতেন।মুয়াত্তা মালিক, ১ম খণ্ড, পরিচ্ছেদ-৪, রেওয়াত নং১৬, পৃষ্ঠা নং১২৮, প্রকাশণী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৩ । আলী ইবনু হুজর(রঃ)---মালিক ইবনু হুওয়ায়রিস(রাঃ)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ(সাঃ) দেখেছি,তিনি যখন তাকবীর বলতেন এবং রুকু থেকে মাথা তুলতেন তখন স্বীয় উভয়হাত উঠাতেন যা তাঁর কানের নিম্নভাগ (লতি) পর্যন্ত পেীছত। সুনান আন নাসাঈ, ২য় খণ্ড, হাদিস নং১০২৭, পৃষ্ঠা নং৯৮, প্রকাশণী- ইসঃ ফাউঃবাংলাদেশ।
১৪ । কুতায়বা(রঃ)---আবদুল্লাহ ইবনু উমার(রাঃ)থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ(সাঃ)কে দেখেছি, যখন তিনি সালাত আরম্ভ করতেন তখন স্বীয় উভয়হাত তুলতেন কাঁধ পর্যন্ত। এ রকম হাত তুলতেন যখন তিনি রুকু করতেন এবং রুকু থেকে মাথা উঠাতেন। সুনান আন নাসাঈ, ২য় খণ্ড, হাদিস নং১০২৮, পৃষ্ঠা নং৯৯, প্রকাশণী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৫ । আলী ইবনু মুহাম্মদ, হিশাম ইবনু আম্মার ও আবু উমার যারীর(রঃ)---ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)কে দেখেছি, তিনি যখন সালাত শুরু করতেন তখন তিনি তাঁর দু’হাত কাঁধ পর্যন্তউঠাতেন এবং রুকুতে যেতেন ও যখন তিনি তাঁর মাথা রুকু থেকে উঠাতেন (তখনও হাত উঠাতেন)। তবে, তিনি দুই সিজদাহ’র মাঝখানে হাত উঠাতেন না। সুনান আন নাসাঈ, ২য় খণ্ড, হাদিস নং১০২৮, পৃষ্ঠা নং৯৯, প্রকাশণী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৬ । হুমায়ুদ ইবনু মাসআদা(রঃ)--- মালিক ইবনু হুওয়ায়রিস(রাঃ)থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)যখন তাকবীর বলতেন তখন তিনি তাঁর দু’হাত উভয় কানের কাছাকাছি উঠাতেন। আর যখন তিনি রুকুতে যেতেন, তখন অনুরূপ করতেন এবং যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখনও অনুরূপ করতেন। সুনান ইবনু মাজাহ, ১ম খণ্ড, হাদিস নং৮৫৯, পৃষ্ঠা নং৩২৮, প্রকাশণী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৭ । মুহাম্মদ ইবনু বাশ্‌শার(রঃ)--- আবু হুমায়দ সায়ীদ(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর অন্যান্য দশ সাহাবীর একজন। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)এর সালাত সম্পর্কে অধিক অবহিত। তিনি যখন সালাতে দাঁড়াতেন তখন সোজা হয়ে দাঁড়াতেন এবং তিনি তাঁর দু’হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন, এরপর তিনি বলতেন আল্লাহু আকবর। আর যখন তিনি রুকু করার ইরাদা করতেন তখন তিনি তাঁর দু’হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এবং যখন তিনি বলতেন ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ তখন তিনি তাঁর দু’হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন এবং সোজা হয়ে দাঁড়াতেন আর যখন তিনি দ্বিতীয় রাকাত থেকে দাঁড়াতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং তাঁর দু’হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন, যেমন তিনি সালাত শুরু করার সময় করতেন। সুনান ইবনু মাজাহ, ১ম খণ্ড, হাদিস নং৮৬২, পৃষ্ঠা নং৩২৯, প্রকাশণী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।

১৮ । মুহাম্মদ ইবনু বাশ্‌শার(রঃ)---আব্বাস ইবনু সাহলসায়িদী(রঃ) বর্ণিত, একদা আবু হুমায়দ, উসায়দ সায়িদী, সাহল ইবনু সাদ ও মুহাম্মদ ইবনু মাস্‌লামা(রাঃ) একত্রিত হয়ে রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর সালাত সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করছিলেন; তখন আবু হুমায়দ(রাঃ) বলেন- আমি তোমাদের চেয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। রাসুলুল্লাহ(সাঃ)সালাতে দাঁড়াতেন, এরপর তিনি তাকবীর বলতেন এবং তাঁর উভয়হাত উঠাতেন। এরপর তিনি তাকবীর বলে রুকুতে যাওয়ার সময় হাত উঠাতেন। এরপর তিনি দাঁড়াতেন এবং তাঁর দু’হাত উঠাতেন এবং এমনভাবে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন যে, যাতে সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যথাস্থানে এসে যেত। সুনান ইবনু মাজাহ, ১ম খণ্ড, হাদিস নং৮৬২, পৃষ্ঠা নং৩২৯, প্রকাশণী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ। ইবনু মাজাহ’তে এ সংক্রান্ত আরো হাদীস দেখুন- ৮৬৪ থেকে ৮৬৭ নং পর্যন্ত।
স্বশব্দে আমীণ (উচ্চস্বরে)বলাঃ-
০১। আতা (রঃ) বলেন, আমীন হল দু’আ। তিনি আরো বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ) ও তার পিছনের মুসল্লীগণ এমনভাবে আমীন বলতেন যে মসজিদে গুমগুম আওয়াজ হতো। আবু হুরায়রা (রাঃ) ইমামকে ডেকে বলতেন, আমাকে আমীন বলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবেন না। নাফি(রঃ)বলেন, ইবনু উমার (রাঃ) কখনই আমীন বলা ছাড়তেন না এবং তিনি তাদের (আমীন বলার জন্য)উৎসাহিত করতেন। আমি তাঁর কাছ থেকে এ সম্পর্কে হাদিস শ্তনেছি । সহীহ বুখারী,২য় খন্ড, অনুচ্ছেদ-৫০২, পৃষ্ঠা নং ১২০ও১২১, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।

০২ । আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রঃ)---- আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ইমাম যখন আমীন বলেন, তখন তোমরাও আমীন বলো। কেননা, যারআমীন (বলা) ফিরিশতাদের আমীন (বলা) এক হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। ইবনু শিহাব (রঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)ও আমীন বলতেন। সহীহ বুখারী,২য় খন্ড, হাদিছ নং ৭৪৪, পৃষ্ঠা নং ১২১ প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৩ । আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রঃ)---- আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ (সালাতে) আমীন বলে, আর আসমানের ফিরিশ্তাগণ আমীন বলেন এবং উভয়ের আমীন একই সময়ে হলে তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। সহীহ বুখারী,২য় খন্ড, হাদিছ নং ৭৪৫,পৃষ্ঠা নং ১২১ প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ। এ সংক্রান্ত আরো দেখুন ৭৪৬ নং হাদিস।
০৪ । ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রঃ) ---আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলছেন, যখন ইমাম আমীন বলবেন, তখন তোমরাও আমীন বলবে। কেননা, যে, ব্যক্তি ফিরিশতাদের আমীন বলার সাথে একই সময় আমীন বলবে। তার পূর্ববর্তী সমস্ত পাপ মোচন হয়ে যাবে। ইবনু শিহাব (রঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)ও আমীন বলতেন। সহীহ মুসলিম,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৭৯৮, পৃষ্ঠা নং ১৬০ও ১৬১, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৫ । কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রঃ) ---- আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলছেন, ইমাম যখন গাইরিল মাগ---- ওয়ালাদ্দোয়াল্লীন বলবেন, তার পিছনের ব্যক্তি মুক্তাদি আমীন বলবে এবং তার বাক্য আকাশবাসীর (ফিরিশতা) বাক্যের অনুরূপ একই সময়ে উচ্চারিত হবে,তখন তার পূর্ববর্তী সমূদয় পাপ মোচন হয়ে যাবে। সহীহ মুসলিম,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৮০৩, পৃষ্ঠা নং ১৬২, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ। এ সংক্রান্ত আরো দেখুন ৭৯৯-৮০২ নং হাদিস।
০৬ । আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ইমাম যখন আমীন বলে, তোমরাও তখন আমীন বলো। কেননা, যার আমীন বলা ফিরিশতাদের আমীন বলার সাতে মিলেযাবে,তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। ইবনু শিহাব (রঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)ও আমীন বলতেন। সহীহ মুসলিম,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৮১০, পৃষ্ঠা নং ১৭৮, প্রকাশনী- ইসলামিক সেন্টার বাংলাদেশ। এ সংক্রান্ত আরো দেখুন ৮১১-৮১৫ নং হাদিস।
০৭ । মুহাম্মদ ইবনু কাছীর (রঃ) ---ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ওয়ালাদ্দোয়াল্লীন পাঠ করার পর জোরে ‘আমীন বলতেন’। আবু দাউদ,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৯৩২, পৃষ্ঠা নং ৩৬, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৮ । মাখলাদ ইবনু খালিদ (রঃ)ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের পিছনে সালাত আদায় করা কালে তিনি উচ্চস্বরে আমীন বলেন এবং (সালাত শেষে) ডান ও বাম দিকে সালাম ফিরান এভাবে যে, – আমি তাঁর গন্ডদেষের সাদা অংশ পরিষ্কারভাবে দেখি। আবু দাউদ,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৯৩৩, পৃষ্ঠা নং ৩৬, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
০৯ । নাসর ইবনু আলী (রঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ) এর চাচাত ভাই আবু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম “গায়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দোয়াল্লীন” পাঠের পরে এমন জোরে আমীন বলতেন যে প্রথম কাতারে তাঁরনিকটবর্তী লোকেরা তা শুনতে পেত। আবু দাউদ,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৯৩৪, পৃষ্ঠা নং ৩৭, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১০ । আল কানাবী (রঃ) --- আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ যখন ইমাম আমীন বলবে , তখন তোমরাও আমীন বলবে। কেননা যে ব্যক্তির আমীন শব্দ ফিরিশতাদের আমীন শব্দের সাথে মিলবে ,তার পূর্ব জীবনের সমস্ত গুনাহ মার্জিত হবে। ইবনু শিহাব (রঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)ও আমীন বলতেন। আবু দাউদ,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৯৩৬, পৃষ্ঠা নং ৩৮, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১১ । আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ)বলছেন, যখন ইমাম আমীন বলেন, তখন তোমরাও আমীন বল।কেননা যার আমীন ফিরিশতাদের আমীন এর সাথে একত্রে উচ্চারিত হয় তার পূর্বের গুনাহ মাফ করা হয়। মুয়াত্তা মালিক ১ম খণ্ড,পরিচ্ছেদ নং ১১, পৃষ্ঠা নং ১৪০, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।

১২। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলছেন, যখন ইমাম ‘গায়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দোয়াল্লীন’ বলবে তখন তোমরা আমীন বল। যাহার বাক্য ফিরিশতাদের (আমীন)বাক্যের সাথে মিলে যাবে তার পূর্বের গুনাহ মাফ করা হবে। মুয়াত্তা মালিক ১ম খণ্ড,পরিচ্ছেদ নং১১, রেওয়াত নং৪৫,পৃষ্ঠা নং১৪০, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৩ । আমর ইবনু উসমান (রঃ)---আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যখন তিলাওয়াতকারী আমীন বলে , তখন তোমরাও আমীন বলবে। কেননা, ফিরিশতাগনও আমীন বলে থাকেন। অতএব, যার আমীন বলা ফিরিশতার আমীন বলার মত হবে,আল্লাহপাক তার পূর্বের পাপ মার্জনা করবেন। সুনানু ইবনু নাসাই,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৯২৮, পৃষ্ঠা নং ৫৬, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৪ । মুহাম্মদ ইবনু মানসুর(রঃ)---আবু হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,যখন তিলাওয়াতকারী (ইমাম) আমীন বলে, তখন তোমরাও আমীন বলবে। কেননা, ফিরিশতাগনও আমীন বলে থাকেন। অতএব, যার আমীন বলা ফিরিশতার আমীন বলার মত হবে,আল্লাহপাক তার পূর্বের পাপ মার্জনা করবেন। সুনানু ইবনু নাসাই,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৯২৯, পৃষ্ঠা নং ৫৬, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৫ । ইসমাইল ইবনু মাসুদ (রঃ) --- আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলছেন, যখনইমাম ‘গায়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দোয়াল্লীন’ বলবে তখন তোমরা আমীন বল। কেননা, ফিরিশতাগণ আমীন বলে থাকেন। ইমামও আমীন বলে থাকেন, যার আমীন বলা ফিরিশতার আমীন বলার মত হবে, আল্লাহপাক তার পূর্বের পাপ ক্ষমা করে দেবেন। সুনানু ইবনু নাসাই,২য় খণ্ড,হাদিস নং ৯৩০, পৃষ্ঠা নং ৫৬, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৬ । আবু বকর ইবনু আবু শায়বা ও হিসাম ইবনু আম্মার (রঃ) --- আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলছেন, যখন ক্বারী (ইমাম) আমীন বলে, তখন তোমরা আমীন বলবে। কেননা, ফিরিশতাগণ আমীন বলে থাকেন। আর যারআমীন বলা, ফিরিশতাদের আমীন বলার সাথে মিলে যায় তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। সুনানু ইবনু মাজাহ,১ম খণ্ড,হাদিস নং ৮৫১, পৃষ্ঠা নং ৩২৬, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৭ । বকর ইবনু খালফ ও জামীল ইবনু হাসান ও আহমদ ইবনু আমর ইবনু সারাহ মিসরী ও হাশিম ইবনু কাশিম হাররানী ---আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সঃ)বলছেনঃ যখন ইমাম আমীন বলে, তখন তোমরা আমীন বলবে। কেননা, যার আমীন ফিরিশতাদের আমীন বলার সাথে মিলে যায়, তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। সুনানু ইবনু মাজাহ,১ম খণ্ড,হাদিস নং ৮৫২, পৃষ্ঠা নং ৩২৬, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৮ । মুহাম্মদ ইবনু বাশ্‌শার (রঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা আমীন বলা ছেড়ে দিয়েছে। অথচ, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যখন গাইরিল---ওয়ালাদ্দোয়াল্লীন বলতেন; তখন তিনি বলতেন আমীন। এমনকি প্রথম সারির লোকেরা তা শুনতে পেত এবং এতে মসজিদ গুঞ্জরিত হত। সুনানু ইবনু মাজাহ,১ম খণ্ড,হাদিস নং ৮৫৩, পৃষ্ঠা নং ৩২৬, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ।
১৯ । ইসহাক ইবনু মানসুর (রঃ) ---আয়েশা (রাঃ) এর সূত্রে নাবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন। ইয়াহুদীরা তোমাদের কোন ব্যাপারে এত ঈর্ষান্বিত হয় না,যতটা না তারা তোমাদের সালাত ও আমীনের উপর ঈর্ষান্বিত হয়। সুনানু ইবনু মাজাহ,১ম খণ্ড,হাদিস নং ৮৫৬, পৃষ্ঠা নং ৩২৭, প্রকাশনী- ইসঃ ফাউঃ বাংলাদেশ। এ সংক্রান্ত আরো দেখুন ৮৫৪,৮৫৫ ও ৮৫৭ নং হাদিস।[sourse-logonsgis]

নামাজে বুকের উপর হাত বাধা হল সুন্নাহ : নাভির নীচে হাত বাঁধা যঈফ , দলীল গ্রহণযোগ্য নয়




Ehsanul Karim published a note.

নামাজে বুকের উপর হাত বাধা হল সুন্নাহ

নামাজে বুকের উপর হাত বাধা হল সুন্নাহ।নাভীর নিচে হাত বাধার হাদীস গুলো সব জইফ।বুকের উপর হাত বাধা হল সুন্নাত তা হাদীস থেকে প্রমান করছি:বুকের উপর হাত বাধা হাদীস বর্নিত হয়েছে যথাক্রমে ওয়াইল ইবনে হুজর,হালব আত-তায়ী এবং তাউস থেকে।কিছু মানুষ হয়তো প্রশ্ন তুলতে পারে ওয়াইল ইবনে হুজরের বুকের উপর হাত বাধা নিয়ে যা শুধু মুয়াম্মল থেকে বর্নিত হয়েছে এবং হালব আত-তায়ী যা শুধু সুফিয়ান থেকে বর্নিত হয়েছে।কিন্তুু উভয় হাদীস একে অপরের সহায়ক হওয়ায় হাসান হয়ে গেছে এবং মুরসাল হাদীস ততক্ষণ পযন্ত বাতিল হয়না যদি এর শাহেদ থাকে।কিন্তুু আমরা দেখি এই ক্ষেত্রে যথেষ্ট শাহিদ আছে যা এই হাদীস গুলো সহিহ হয়ে যায়।এবং কি মুহাদ্দিসরা হালবের হাদীসটা গ্রহণ করেছে।শেইখ আবদুর রাহমান মুবারকপুরী(রাহ) এই হাদীসের সনদ সহিহ হওয়ার বিশুদ্ধত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তার বিক্ষ্যত বই "আবকার উল-মুনান ফি তানকীদ আতাহার আস - সুন্নাহ "।আরো প্রমাণ দেখুন বুকে হাত বাধার:1)সাহিল বিন সাদ বলেন,আমরা নির্দেশিত হয়েছি নামাজে ডান হাত বাম হাতের জেরার উপর রাখার(সহিহ বুখারী 740 নং হাদীস)।যেরা অর্থ কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ হাত’ (গরীব উল-হাদীস 1/277,লিসান উল-আরব 8/93,তাজ উল-উরস 1/5217,কিতাবুল আইন 2/96,আল-মু'জাম আল-ওয়াসিয়াত 1/311,তাহদীব আল-লুগাহ 2/189,কিতাব আল-কুলিয়াত 1/730) এই হাদীসটা মারফু বর্ননাকারী হলেন আবু হাজিম।এই কারণে হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি তার ফাতউল বারীর 2/124 পেইজে এবং আল্লামা আইনী তার উমদাতুল কারীর 5/278 পেইজে বলেন,এই বর্ননা মারফু এবং এই হাদীস হল প্রমাণ বুকে হাত বাধার কারণ যখন বাম হাতের বাহু এবং কনুইর উপর ডান হাত রাখা হয় তখন হাত বুকের নিচে আসার সমর্থ হবেনা।প্রিয় পাঠক,এই পদ্ধতি আপনি পরীক্ষা করেন আল্লাহর ইচ্ছায় হাত বুকে এসে যাবে।
2)ওয়াইল বিন হুজর থেকে বর্নিত,রাসুল(সা) বাম হাতের তালু,কব্জি এবং বাহুর উপর ডান হাত রাখতেন(সুনান আবু দাউদ 727 নং হাদীস,সুনান আল সুগরাহ লিল নাসাঈ 889,মুসনাদ আহমদ 22017,ইবনে হিব্বান 1860,ইবন খুজায়মাহ 480 নং হাদীস,সনদ সহিহ) এই হাদীস অনুসারে যদি ডান হাত দিয়ে পুরো অংশ ধরা হয় তাহলে হাত এমনিতে বুকের উপর উঠে যাবে।যুগ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম নাসিরউদ্দিন আলবানী(রাহ:)বলেন,এই হাদীসের বর্ননাক্রিত অবস্থার ফলে হাত বুকে আসে(হিদায়াতুর
রুওয়াত 1/367)।এই হাদীসের সাথে ওয়াইলের অন্য হাদীস যেখানে বলা আছে হাত বুকে বাধার"এই থেকে পরিস্কার হয় যে হাত বুকে বাধতে হবে।
3)আলী(রাদি:)থেকে বর্নিত,রাসুল(সা) নাবীর উপরে(বুকের কাছে) হাত বাধতেন(আবু দাউদ 757)
4)তাউস থেকে বর্নিত,রাসুল(সা) বুকের উপর হাত বাধতেন(আবু দাউদ 759 নং হাদীস সনদ সহিহ)
5)ওয়াইল ইবন হুজর বর্ননা করেন অন্য সনদে,রাসুল(সা) বুকের উপর হাত বাধতেন(সুনান আল বায়হাকী 2166 সনদ জইফ)
6)ওয়াইল বিন হুজর থেকে আবার বর্নিত অন্য সনদে যা সুফীয়ান বর্ননা করেছে আসিম বিন কুলায়ব(সিমাকের পরিবর্তে)যে রাসুল(সা) হাত বুকে রাখতেন(বায়হাকী 2384)
7)ইবনে আব্বাস(রাদি)থেকে বর্নিত যে রাসুল(সা) যখন আল্লাহর আয়াত " "Fasallili Rabbika Wanhar"এর ব্যাখ্যায় বলেন,এর মানে হল বাম হাতের উপর ডান হাত বুকের উপর রাখা(সুনান বায়হাকী 2168,2387 সনদ জইফ)
8)একই রেয়াআতে আলী(রাদি:)থেকে ও হাদীসটা বর্নিত হয়েছে(সুনান বায়হাকী 2167 সনদ জইফ)
9)আনাস(রাদি:)থেকে ও একই রেয়াআতে বর্নিত হয়েছে(সুনান বায়হাকী 2386 সনদ জইফ)
10)ওয়াইল বিন হুজর থেকে বর্নিত অন্য হাদীসে বলা হয়েছে রাসুল(সা) বুকে হাত বাধত(মুজাম আল কাবীর 17969 সনদ জইফ)
11)ওয়াইল ইবন হুজর থেকে বর্নিত তিনি বলেন,আমি রাসুল(সা)কে দেখলাম,তিনি নামাজে প্রবেশ করলেন বললেন আল্লাহু আকবর,তারপর ডান বাহু তার বাহুর উপর রাখলেন(মুজাম আল কাবীরা 17901 হাদীস সহিহ)পুরো বাহু অন্য বাহুতে রাখলে হাত বুকের নিচে নামবেনা।
12)ওয়াইল থেকে বর্নিত রাসুল(সা) বুকের কাছে হাত বাধতেন(মুসনাদ আল বাযযার 4488 নং হাদীস)
13)আয়েশা(রাদি:) বর্নিত,রাসুল(সা)এর তিনটা সুন্নাত হল:1)ইফতারের জন্য দ্রুত করা 2)দেরিতে সেহেরি খাওয়া 3) বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে বুকে হাত বাধা(আল আওসাত 1239)
এখন,উপরে বর্নিত কিছু হাদীস সনদের কারণে দুর্বল মনে হলেও সে গুলো হাসান লিগাহরিহ হয়না "জইফ+জইফ =হাসান।আল সিন্দী আল হানাফী তার হাশিয়াত ইবনে মাজাহাতে বলেন,এটা প্রমাণিত যে হাত বুকে বাধতে হবে অন্য কোথাও নয় এবং আলেমরা এই বিষয়ে একমত যে নাভীর নিচে হাত বাধা হাদীস জইফ।বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফকিহ ইমাম ইসহাক বিন রাহয়াই(রাহ) সিনায় হাত বাধতেন অথবা সিনার একটু নিচে হাত বাধতেন(মা'সাইল পেইজ 222) অথচ এক মিথ্যাবাদী বলল ইসহাক বিন রাহয়াই(রাহ) নাকি নাভীর নিচের হাদীস কে শক্তিশালী বলেছে!! আমি বলি তাহলে ইসহাক বিন রাহুয়াই(রাহ)কেন সিনায় হাত বেঁধেছেন?কাদী লিয়াদ আল মালেকী বলেন,হাত বুকে বাধতে হবে(আল ইলাম পেইজ 15)। ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) বলেন,

صَلَّيْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى عَلَى صَدْرِهِ، رواه ابْنُ خُزَيْمَةَ وَصَحَّحَهُ ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করলাম। এমতাবস্থায় দেখলাম যে, তিনি বাম হাতের উপরে ডান হাত স্বীয় বুকের উপর রাখলেন’। ( ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৪৭৯; আবুদাঊদ হা/৭৫৫, ইবনু মাস‘ঊদ হ’তে; ঐ, হা/৭৫৯, ত্বাঊস বিন কায়সান হ’তে; ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, ‘ছালাতে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখা’ অনুচ্ছেদ-১২০।)

উপরোক্ত ছহীহ হাদীছ সমূহে ‘বুকের উপরে হাত বাঁধা’ সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য এসেছে। ইমাম শাওকানী বলেন, وَلاَ شَيْءَ فِي الْبَابِ أَصَحُّ مِنْ حَدِيْثِ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ الْمَذْكُوْرِ فِيْ صَحِيْحِ ابْنِ خُزَيْمَةَ- ‘হাত বাঁধা বিষয়ে ছহীহ ইবনু খুযায়মাতে ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) বর্ণিত হাদীছের চাইতে বিশুদ্ধতম কোন হাদীছ আর নেই’( নায়লুল আওত্বার ৩/২৫) উল্লেখ্য যে, বাম হাতের উপরে ডান হাত রাখা সম্পর্কে ১৮ জন ছাহাবী ও ২ জন তাবেঈ থেকে মোট ২০টি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। ইবনু আব্দিল বার্র বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে এর বিপরীত কিছুই বর্ণিত হয়নি এবং এটাই জমহূর ছাহাবা ও তাবেঈনের অনুসৃত পদ্ধতি( নায়লুল আওত্বার ৩/২২; ফিক্বহুস সুন্নাহ (কায়রো : ১৪১২/১৯৯২) ১/১০৯) নাভির নীচে হাত বাঁধা’ সম্পর্কে আহমাদ, আবুদাঊদ, মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ প্রভৃতি হাদীছ গ্রন্থে চারজন ছাহাবী ও দু’জন তাবেঈ থেকে যে চারটি হাদীছ ও দু’টি ‘আছার’ বর্ণিত হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে মুহাদ্দেছীনের বক্তব্য হ’ল-لاَ يَصْلُحُ وَاحِدٌ مِنْهَا لِلْاِسْتِدْلاَلِ ‘(যঈফ হওয়ার কারণে) এগুলির একটিও দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়’( মির‘আতুল মাফাতীহ দিল্লী: ৪র্থ সংস্করণ, ১৪১৫/১৯৯৫) ৩/৬৩; তুহফাতুল আহওয়াযী ২/৮৯ )

প্রকাশ থাকে যে, ছালাতে দাঁড়িয়ে মেয়েদের জন্য বুকে হাত ও পুরুষের জন্য নাভীর নীচে হাত বাঁধার যে রেওয়াজ চালু আছে, হাদীছে বা আছারে এর কোন প্রমাণ নেই( মির‘আত লাহোর ১ম সংস্করণ, ১৩৮০/১৯৬১) ১/৫৫৮; ঐ, ৩/৬৩; তুহফা ২/৮৩ ) এটাই স্বতঃসিদ্ধ যে, ছালাতের মধ্যকার ফরয ও সুন্নাত সমূহ মুসলিম নারী ও পুরুষ সকলে একই নিয়মে আদায় করবে( মির‘আত ৩/৫৯ পৃঃ; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৯; নায়লুল আওত্বার ৩/১৯) বুকে হাত বাঁধার তাৎপর্য : ত্বীবী বলেন, ‘হৃৎপিন্ডের উপরে বুকে হাত বাঁধার মধ্যে হুঁশিয়ারী রয়েছে এ বিষয়ে যে, বান্দা তার মহা পরাক্রান্ত মালিকের সম্মুখে দাঁড়িয়েছে হাতের উপর হাত রেখে মাথা নিচু করে পূর্ণ আদব ও আনুগত্য সহকারে, যা কোনভাবেই ক্ষুণ্ণ করা যাবে না’( মির‘আত ৩/৫৯ পৃঃ, হা/৮০৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)।
---------------------------------------------------
extract from above:-
 --বুকে হাত বাধার:সহিহ হাদীস--
1)সাহিল বিন সাদ বলেন,আমরা নির্দেশিত হয়েছি নামাজে ডান হাত বাম হাতের জেরার উপর রাখার(সহিহ বুখারী 740 নং হাদীস)।যেরা অর্থ কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ হাত।[এই পদ্ধতি আপনি পরীক্ষা করেন আল্লাহর ইচ্ছায় হাত বুকে এসে যাবে।]
2]-- 2)ওয়াইল বিন হুজর থেকে বর্নিত,রাসুল(সা) বাম হাতের তালু,কব্জি এবং বাহুর উপর ডান হাত রাখতেন(সুনান আবু দাউদ 727 নং হাদীস,সুনান আল সুগরাহ লিল নাসাঈ 889,মুসনাদ আহমদ 22017,ইবনে হিব্বান 1860,ইবন খুজায়মাহ 480 নং হাদীস,সনদ সহিহ) এই হাদীস অনুসারে যদি ডান হাত দিয়ে পুরো অংশ ধরা হয় তাহলে হাত এমনিতে বুকের উপর উঠে যাবে।যুগ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম নাসিরউদ্দিন আলবানী(রাহ:)বলেন,এই হাদীসের বর্ননাক্রিত অবস্থার ফলে হাত বুকে আসে।
3]-- আবু দাউদ 757
4]-- আবু দাউদ 759 নং হাদীস সনদ সহিহ।
5]-- বায়হাকী 2384
6]-- মুজাম আল কাবীরা 17901 হাদীস সহিহ।
7]-- মুসনাদ আল বাযযার 4488 নং হাদীস।
8]-- ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৪৭৯; আবুদাঊদ হা/৭৫৫, ইবনু মাস‘ঊদ হ’তে; ঐ, হা/৭৫৯।
ETC.

Sunday 15 November 2015

ছালাতু তাছবীহ্‌ নামায কি পড়া যাবে ? : না, হাদীছ ছহীহ্‌ নয়

প্রশ্নঃ ছালাতু তাছবীহ্‌ নামায কি পড়া যাবে ?
===============================
উত্তরঃ ছালাতুত্‌ তাছবীহ্‌ নামায নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বিশুদ্ধভাবে প্রমাণিত নয়।
ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রহঃ) বলেন, এসম্পর্কিত হাদীছ ছহীহ্‌ নয়।
শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়া (রহঃ) বলেন, ‘এসম্পর্কিত হাদীছ মিথ্যা।
ইমাম আহমাদ এবং তাঁর অনুসারী ইমামগণ এ নামাযকে মাকরূহ মনে করতেন।
কোন ইমামই এ নামাযকে মুস্তাহাব বলেন নি।
আর অন্যান্য ইমামগণ আবু হানীফা, মালেক ও শাফেঈ এ সম্পর্কে কোন কিছু শোনেন নি তাই কোন মন্তব্যও করেন নি।”
শায়খুল ইসলামের এ কথা খুবই সত্য। কেননা এ নামায বিশুদ্ধ হলে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উম্মতের কাছে সন্দেহাতীতভাবে ছহীহ্‌ সনদে বর্ণনা করা হত। কেননা তাতে রয়েছে বিরাট প্রতিদান ও উপকার।
তাছাড়া সাধারণ নামাযের পদ্ধতি থেকেও তা সম্পূর্ণ আলাদা। বরং সমস্ত ইবাদত থেকে এটি মূলতঃ আলাদা ধরণের।
কেননা এমন কোন ইবাদত আমরা দেখিনা, যা আদায় করার জন্য এধরণের এখতিয়ার দেয়া হয়েছে- প্রতিদিন আদায় করবে অথবা সপ্তাহে একবার অথবা মাসে একবার অথবা বছরে একবার অথবা সারা জীবনে হলেও একবার।
তাছাড়া কোন বিষয় মৌলিকতা থেকে আলাদা হলে মানুষ তার প্রতি গুরুত্বারোপ করতো, বিষয়টি অন্যরকম হওয়ার কারণে মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রচলিত থকাতো। এর কোনটিই না হওয়ার কারণে বুঝা যায়, এ নামায শরীয়ত সম্মত নয়। আর এ কারণেই কোন ইমাম একে মুস্তাহাব বলেননি। (আল্লাহ্‌ই অধিক জ্ঞান রাখেন।)
-ফাতওয়া আরকানুল ইসলাম
লিখেছেন শাইখ উসাইমিন রহঃ

Saturday 14 November 2015

ফযর সালাতের ওয়াক্ত : ফযরের কাযা সালাত কখন, কিভাবে পড়তে হবে?

প্রশ্নঃ ফযর সালাতের ওয়াক্ত কখন শুরু ও শেষ হয়?
উত্তরঃ এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্যে প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে,
‘সুবহি সাদিক্ব’ বলতে কি বোঝায়?
রাত শেষ হয়ে যখন ভোর হওয়া শুরু হয়, তখন আকাশের বুক চিরে পূর্ব দিক থেকে প্রথম সাদা একটা আলোর রেখা পশ্চিম দিকে যায়, একে ‘সুবহি সাদিক্ব’ বা বাংলায় ‘সত্য সকাল’ বলা হয়।
দিনের প্রথম সালাত হচ্ছে ফযর সালাত, আর ফযর সালাতের ওয়াক্ত শুরু হয় যখন ‘সুবহি সাদিক্ব’ দেখা যায় তখন থেকে। আর ফযর সালাতের ওয়াক্ত শেষ হয় যখন পূর্ব আকাশে ‘সূর্য উদয়’ হওয়া শুরু হয়।
উল্লেখ্য, ‘সুবহি সাদিক্ব’ দেখা গেলে সাওমের জন্যে ‘সাহরী’ খাওয়ার সময়ও শেষ হয়ে যায়। এর পর থেকে সাওম ভংগকারী বিষয়গুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। আমাদের দেশে প্রচলিত মসজিদগুলোতে রমযান মাসে সাধারণত ফযরের আযান দেওয়া হয় সুবহি সাদিক্বের ৩ থেকে ৫ মিনিট পরে। আর সারা বছর ফযরের ওয়াক্ত হওয়ার কোথাও ১০ মিনিট পরে, কোথাও ২০ মিনিট পরে আবার, কোন মসজিদে আরো অনেক পরে ফযরের আযান দেওয়া হয়। এটা সুন্নতের খেলাপ, কারণ ‘সুন্নাহ’ হচ্ছে সুবহি সাদিক্ব দেখা গেলে ফযরের আযান দেওয়া, বিনা কারণে ইচ্ছাকৃত দেরী না করা। অনেকে মনে করেন, ফযরের আযান দেওয়া পর্যন্ত সাহরী খাওয়া যায়, নিঃসন্দেহে এটা ভুল ধারণা। কারণ ‘সুবহি সাদিক্ব’ বা ‘ফযরের ওয়াক্ত’ শুরু হওয়া মাত্র আপনার পাশ্বর্বর্তী মসজিদে আযান দেওয়া হোক বা না হোক, ঐ সময় থেকে পানাহার থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব। সেইজন্য আপনারা সাহরী খাওয়ার জন্য ক্যালেন্ডারে সময়ের দিকে খেয়াল রাখবেন এবং যেই মসজিদ দেরী করে তাদের উপর নির্ভর করবেন না।
সাহরী সম্পর্কে একটা কথা হচ্ছে, অনেক সময় সাহরী খাওয়ার জন্যে হাতে খুব সময় থাকে। এমন অবস্থায় খাওয়া শুরু করলে আর খেতে খেতে সাহরীর সময় শেষ হয়ে গেলে, আপনার মুখে যেই খাবার থাকে, বা প্লেইটে খেলে প্লেইট হাতের কাছে ও গ্লাসে যেই পানি থাকে সামান্য সময়ের মাঝে সেটা আপনি খেতে পারবেন, সেটা ফেলে দিতে হবেনা। তবে সেটা যেন অল্প সময়ের মাঝেই হয়, এবং নতুন করে কোন খাবার নেওয়া যাবেনা।
________________________
আধুনিক যুগে আমাদের অনেকেই আকাশ দেখে ‘সুবহি সাদিক’ এবং ‘সূর্য উদয়’ হওয়া ধরতে পারিনা। সেইজন্য বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পূর্ব নির্ধারতি ক্যালেন্ডারে সালাতের সময়সূচী দেখে আমরা ফযর সালাতের প্রথম ও শেষ ওয়াক্ত হওয়া জানতে পারি। ‘হাদীস ফাউন্ডেশান’ বা ‘তাওহীদ পাবলিকেশান’ থেকে আপনারা সালাতের সময়সূচীর ক্যালেন্ডার কিনে সেখান থেকে প্রতিদিনের ওয়াক্ত জানতে পারবেন, এইগুলো নির্ভরযোগ্য ক্যলেন্ডার প্রকাশ করে। অথবা নিচের এই ওয়েব সাইট থেকেও আপনারা অনলাইনে প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময়সূচী সম্পর্কে জানতে পারবেন, এটাও নির্ভরযোগ্য একটা সাইট।
http://www.islamicfinder.org/cityPrayerNew.php…
এই ওয়েব সাইটে ‘Fajr’ দ্বারা বোঝাচ্ছে ফযর ওয়াক্ত শুরু, আর ‘Sunrise’ (সূর্য উদয়) কথার দ্বারা অর্থ হচ্ছেঃ ফযর সালাত পড়ার শেষ সময়। সুতরাং সে অনুযায়ী আজ (১৬ই আগস্ট, ২০১৫-ইং তারিখে) ঢাকাতে ফযরের ওয়াক্ত শুরু ৪:১৫ মিনিটে, আর ফযরের ওয়াক্ত শেষ ৫:৩৪ মিনিটে।
এছাড়া আপনারা প্রতিদিন খবরের কাগজে, টিভি থেকে বা স্থায়ী ক্যালেন্ডার যা কিনতে পাওয়া যায়। সেখান থেকে প্রতিদিনের সালাতের ওয়াক্তের সময়সূচী জানতে পারবেন।
সালাতের সময় ঢাকা থেকে দেশের অন্যান্য জেলা শহরগুলোর মাঝে ১-৫/৭ মিনিট পর্যন্ত কম বা বেশি হয়। সাধারণত ক্যালেন্ডারে রাজধানী ঢাকার সালাতের ওয়াক্ত দেওয়া থাকে। সুতরাং আপনি আপনার শহরে নিকটস্থ মসজিদ, মাদ্রাসা থেকে জেনে নেবেন, আপনার এলাকাতে সালাতের সময় হিসাব জন্য ক্যালেন্ডারের সময়ের সাথে কত মিনিট যোগ বা বিয়োগ করতে হবে। এটা ক্যলেন্ডারে সময়সূচীর নিচেও দেওয়া থাকে।
________________________
প্রশ্নঃ ফযরের কাযা সালাত কখন, কিভাবে পড়তে হবে?
এখানে আরো একটি কথা আমি উল্লেখ করতে চাই, অনেক সময় এলার্ম দিয়েও ঘুম থেকে উঠতে না পারলে ফযরের ‘কাযা’ সালাত কখন পড়বেন, সেটা নিয়ে অনেকে ভুল ধারণার উপরে আছেন। অনেকে মনে করেন, ঘুম থেকে উঠে যখন ইচ্ছা তখন পড়বেন, অনেক মনে করেন পরবর্তী সালাত (অর্থাৎ যোহরের সময় পড়তে হবে)...
এই ধারণাগুলো ভুল। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ফযরের সালাতের জন্যে উঠতে না পারলে, বান্দা যখনই ঘুম থেকে উঠবে ঠিক তখনই ফযরের সালাত ‘কাযা’ আদায় করে নিবে। নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“যে ব্যক্তি সালাতের কথা ভুলে যায়, কিংবা সালাত না পড়ে ঘুমিয়ে থাকে, তার কাফফারা হলঃ যখন সালাতের কথা স্মরণ হবে তখনই সে তা আদায় করে নেবে।” [সহীহুল বুখারী]
সুতরাং, ফযরের সময় টের না পেলে যখনই উঠবেন তখনই কাযা সালাত পড়ে নেবেন। কাযা সালাতের জন্যে আলাদা কোন নিয়ত নেই। শুধু সালাতের পূর্বে মনে মনে চিন্তা করে নিলেই হবে বা স্থির করে নিলেই হবেঃ আমি ফযরের ২ রাকাত সুন্নাত সালাতের কাযা আদায় করছি অথবা, আমি ফযরের ২ রাকাত ফরয সালাতের কাযা আদায় করছি। উল্লেখ্য, ফযরের সুন্নত সালাতের অনেক বড় ফযীলত রয়েছে, সুতরাং ফযরের সুন্নত সালাতের কাযা আদায় করা ভালো, যদিও সুন্নত সালাতের কাযা আদায় করা ফরয নয়। তবে সওয়ার অনেক বেশি, সুতরাং পড়াই উত্তম। আর সে ক্ষেত্রে, স্বাভাবিক নিয়মের মতোই প্রথমে ফযরের সুন্নত, এর পরে ফরয সালাত পড়বেন।
________________________
চলবে। ইন শা' আল্লাহ আগামী পর্বে অন্যান্য ওয়াক্তের সময় দেওয়া হবে।
বিনীত
- আনসারুস সুন্নাহ।

চেয়ারে বসা সালাত আদায় করা ফতোয়া

 আস্‌সালামু আলাইকুম শায়খ,
একটি জরুরী মাসআ’লা জানতে চাই।
এক্সিডেন্টের ফলে আমার হাঁটতে কষ্ট হয় বিধায় আমি চেয়ারে বসে সালাত আদায়ের চেষ্টা করি। আলহামদুলিল্লাহ্, এখন অনেকটা সুস্থ। চেয়ার ছাড়াই আজ আসরের সালাত আদায় করতে গিয়ে হাঁটুতে ব্যথা অনুভব করলাম। আমি যদি হাঁটুতে নরম কোন প্যাড লাগিয়ে অথবা জায়নামাজে যদি ছোট একটি বালিশের উপর হাঁটু রেখে সালাত আদায় করতে চাই, তাহলে কি তা শুদ্ধ হবে?
____________________________
শায়খ Abdur Raquib উত্তরে বলেনঃ
ওয়ালাইকুমুস সালাম। আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ
“আল্লাহ সাধ্যের অতিরিক্ত কাউকে বাধ্য করেন না।” [বাকারাহ/২৮৬]
নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
“দাঁড়িয়ে নামায পড়, যদি না পারো তাহলে বসে পড়, তাও যদি না পারো তাহলে পার্শ্বদেশে ভর দিয়ে।” [সহীহ বুখারীঃ ১১১৭]
তাই যে অসুস্থ ব্যক্তি দাঁড়াতে অক্ষম, কিংবা দাঁড়াতে কষ্ট হয়, কিংবা দাঁড়ালে অসুখ বেশী হওয়ার আশংকা থাকে কিংবা অসুখ সারতে দেরী হওয়ার আশংকা থাকে, তাহলে সে বসেই নামায আদায় করবে। এবং তাকে যেই ভাবে ও যাতে বসতে সহজ হবে সে সেই ভাবে ও তাতে বসবে। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়াতে অক্ষম হলে বসার কথা বলেছেন এবং কোনো এক বসার নিয়ম বা স্থান নির্ধারণ করে দেন নি। আর যেহেতু আপনি এখনও পুরো সুস্থ নন, তাই ঝুকলে ব্যাথা হয়, যা অসুখ বিলম্বে সারার কারণ। সে কারণে পুরো সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আপনি চেয়ারে বসেই নামায পড়বেন এবং এই অপারগতার কারণে আপনি পুরো সওয়াব পাবেন। হাঁটুতে পট্টি বা নিচে বালিশ ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। কারণ এমন করার অর্থ দাঁড়ায় আপনি অসুস্থতার কারণে বসে নামায পড়ার যেই ছাড় শরিয়াহ আপনাকে দিয়েছে তা কোনো না কোনোরূপে অপছন্দ করছেন; অথচ এটা একটি ছাড় আর আল্লাহ পছন্দ করেন যে, বান্দা যেন তার ছাড় গ্রহণ করে।
ওয়াল্লাহু আ’লাম।
---------------------------------------------------------------------------------------------