Sunday 21 June 2015

No dua-Ahle Hadees Farz namaz ke baad dua Kyu nahi karte hai | Abu Zaid Zameer

@ফৰজ নামাজৰ পিছত সমূহিয়া মোনাাজাত কৰা উচিত ন'হয়।
@সমুহীয় মোনাজাতৰ পৰিবৰ্তে উচ্চ স্বৰে জিকিৰ কৰা চূন্নত (JazakAllah Khaira-courtesy-Ikramul Hussain)।
@রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি ফরজ নামাযে সালাম ফেরানোর পর 
>> একবার সশব্দে 'আল্লাহু আকবার' 
[দলীল, বুখারী ১/১১৬, মুসলিম ১/১৭]
>> তিনবার 'আসতাগফিরুল্লাহ' [দলীল, মুসলিম ২/১২২২]
>> এবং একবার 'আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম, ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া যাল যালালী ওয়াল ইকরাম' দোয়াটি পড়তেন।
অর্থ- ইয়া আল্লাহ্‌ তুমি শান্তিময়, তোমার থেকেই শান্তি অবতীর্ণ হয়, তুমি বরকতময়, হে পরাক্রমশালী ও মর্যাদা প্রদানকারী।
[দলীল, মুসলিম ১/১১৮, আবূ দাউদ ১/২২১]
এবং এরপর মুক্তাদীদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন। এবং অন্যান্য দোয়া পড়তেন।
আর আমরা কি করছি ?

-------------------------------------------------------------------------------
adding more courtesy-Dr.Arfan Ali:-
২১তম খণ্ড
এজন তথাকথিত আলীমে জাল যঈফ হাদীছেৰে সন্মিলিতভাৱে ফৰজ চালাতৰ পিছত দোৱা কৰা প্ৰমাণ কৰাৰ অপচেষ্টাৰ তথ্যভিত্তিক অনুসন্ধানঃ
*********************** ************************* **********************
ওপৰৰ আৰবী আৰু উৰ্দুত থক ফটো বা টেম্পলেটখন আমাৰ সমাজৰ এজন তথাকথিত আলীম বুলি পৰিচয় দিয়া ব্যক্তিয়ে ফৰজ চালাতৰ পিছত দোৱা কৰাৰ দলীল হিচাপে আগবঢ়াইছে।
৩ নং দলীলৰ তথ্যানুসন্ধানঃ
ফটোখনত এটা হাদীছ দিয়া আছে আৰবীত আৰু তাৰ অৰ্থ দিয়া আছে উৰ্দুত এনেদৰেঃ
নামাজ কে বা’দ হাথ উঠাকৰ দোৱা মাংগনাঃ
(উৰ্দুত আছে) তৰ্জমাঃ হজৰত মুহাম্মাদ ইবনে য়াহয়া (ৰাঃ) ছে ৰিৱায়ত হে কি হজৰত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইৰ (ৰাঃ) নে এক শ্বখচ্ কো দেখা কি ৱহ নামাজ পুৰী কৰনে ছে পেহলে হাথ উঠাকৰ দোৱা মাংগ ৰহা থা। যব ৱহ নামাজ ছে ফাৰিগ হোৱা তো হজৰত ইবনে জুবাইৰ (ৰাঃ) নে ফৰমায়া ৰাছূলুল্লাহ চাল্লাল্লাহু আলাইহি ৱাছাল্লাম নামাজ ছে ফাৰিগ হোনে ছে পেহলে অপনে হাথ উঠাকৰ দোৱা না মাংতে থে (যানীনামাজ ছে ফাৰিগ হোনে কো বা’দ হাথ উঠাকৰ দোৱা মাংতে থে)।
(জামে আত-তিৰমিজী জি. ১, চ. ৮৭। বাব মা জাআ ফিত তাখুশ্বুয়ি ফিচ চালাহ; আল মুআজ্জামুল কাবিৰি লিত তাবাৰানী, জি. ১১, চ. ২২; ৰাকামুল হাদীছ ৯০; ...........)
এতিয়া হাদীছটোৰ তাহক্বীক বা তথ্যগত অৱস্থা চাওঁ আহকঃ
মূল হাদীছটো আৰবীত এনে ধৰণৰঃ
عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ اَبِىْ يَحْيَى الْاَسْلاَمِىْ قَالَ رَأَيْتُ عَبْدَ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ رَأَى رَجُلاً رَافِعًا يَدَيْهِ يَدْعُوْ قَيْلَ اَنْ يَفْرُغَ مِنْ صَلاَتِهِ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْهَا قَالَ اِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ لَمْ يَكُنْ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ صَلاَتِهِ.

বাংলাতঃ আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ) একজন লোককে ছালাত শেষ হওয়ার পূর্বে হাত তুলে দো‘আ করতে দেখলেন। যখন তিনি দো‘আ শেষ করলেন, তখন আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ)তাকে বললেন, রাসূলুল্লাহ চাল্লাল্লাহু আলাইহি ৱাছাল্লাম ছালাত শেষ না করলে হাত তুলে দো‘আ করতেন না। (মাযমাউয যাওয়ায়েদ, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৬৯)।
হাদীছটি যঈফ, মুনকার, ছহীহ হাদীছ বিরোধী। ছহীহ হাদীছে ছালাতের মধ্যে রুকূর পর কুনূতে নাযেলা পড়ার সময় হাত তোলার কথা আছে (আহমাদ, তাবারানী, সনদ ছহীহ, ইরওয়াউল গালীল, ২/১৮১, হা/৮৩৮-এর আলোচনা দ্রঃ)। তবে ছালাতের পর হাত তোলার কোন ছহীহ হাদীছ নেই।
অসমীয়াতঃ আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়েৰ (ৰাঃ) এজন লোকক চালাত শেষ হোৱাৰ আগত হাত তুলি দোৱা কৰোতে দেখিলে। যেতিয়া তেওঁ দোৱা শেষ কৰিলে, তেতিয়া আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়েৰ (ৰাঃ)য়ে তেওঁক কলে, ৰাছূলুল্লাহ চাল্লাল্লাহু আলাইহি ৱাছাল্লামে চালাত শেষ নকৰি হাত তুলি দোৱা কৰা নাছিল। (মাযমাউয যাওৱায়েদ, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৬৯)।
হাদীছটো যঈফ, মুনকাৰ, ছহীহ হাদীছ বিৰোধী। ছহীহ হাদীছত চালাতৰ ভিতৰত ৰুকূৰ পিছত কুনূতে নাযিলা পঢ়াৰ সময়ত হাত তোলাৰ কথা আছে (আহমাদ, তাবাৰানী, চনদ ছহীহ, ইৰওৱাউল গালীল, ২/১৮১, হা/৮৩৮-ৰ আলোচনা দ্রঃ)। কিন্তু চালাতৰ পিছত হাত তোলাৰ কোনো ছহীহ হাদীছ নাই।
গতিকে ছালাতৰ পিছত দলবদ্ধভাৱে দোৱাৰ প্রমাণ হিচাপে আগবঢ়োৱা এই যঈফ হাদীছৰ কাৰ্য্যটো শ্বৰীয়ত বিকৃত কৰাৰ অন্তৰ্ভূক্ত।
১৯তম খণ্ডটো চাওঁক এই লিংকতঃ
https://m.facebook.com/groups/393500214018606?view=permalink&id=952774248091197&refid=18&_ft_=qid.6224085668096551621:mf_story_key.952774248091197:tl_objid.952774248091197&__tn__=*s
২০তম খণ্ডটো চাওঁক এই লিংকতঃ
https://m.facebook.com/groups/393500214018606?view=permalink&id=954829774552311&refid=18&_ft_=qid.6224085019708846261:mf_story_key.954829774552311:tl_objid.954829774552311&__tn__=*s
***********************************

1]-Raising handa- ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন না করা 2]-video

1]- ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন না করা :
ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। এর পক্ষে শত শত ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অধিকাংশ মুছল্লী উক্ত সুন্নাতকে প্রত্যাখ্যান করেছে। উক্ত ঠুনকো যুক্তিগুলোর অন্যতম হল, কতিপয় জাল ও যঈফ হাদীছ। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা পেশ করা হল-
(১) عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْعُوْدٍ أَلَا أُصَلِّىْ بِكُمْ صَلَاةَ رَسُوْلِ اللهِ ؟ قَالَ فَصَلَّى فَلَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلَّا مَرَّةً.
(১) আলক্বামা (রাঃ) বলেন, একদা আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বললেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত শিক্ষা দিব না? রাবী বলেন, অতঃপর তিনি ছালাত পড়ালেন। কিন্তু একবার ছাড়া তিনি তার দুই হাত উত্তোলন করলেন না।[1] উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন কিতাবে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর নামে আরো কতিপয় বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে।[2]
তাহক্বীক্ব : হাদীছটি যঈফ। ইমাম আবুদাঊদ (২০৪-২৭৫ হিঃ) উক্ত হাদীছ বর্ণনা করে বলেন, هَذَا حَدِيْثٌ مُخْتَصَرٌ مِّنْ حَدِيْثٍ طَوِيْلٍ وَلَيْسَ هُوَ بِصَحِيْحٍ عَلَى هَذَا اللَّفْظِ ‘এই হাদীছটি লম্বা হাদীছের সংক্ষিপ্ত রূপ। আর এই শব্দে হাদীছটি ছহীহ নয়’।[3] উল্লেখ্য যে, ভারতীয় ছাপা আবুদাঊদে উক্ত মন্তব্য নেই। এর কারণ প্রকাশকরাই ভাল জানেন। ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেন, আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (১১৮-১৮১ হিঃ) বলেছেন,
قَدْ ثَبَتَ حَدِيْثُ مَنْ يَرْفَعُ يَدَيْهِ وَذَكَرَ حَدِيْثَ الزُّهْرِىِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيْهِ وَلَمْ يَثْبُتْ حَدِيْثُ ابْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ النَّبِىَّ لَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلاَّ فِىْ أَوَّلِ مَرَّةٍ.
‘যে ব্যক্তি রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে তার হাদীছ সাব্যস্ত হয়েছে। অতঃপর তিনি সালেম বর্ণিত যুহরীর হাদীছ পেশ করেন। তবে রাসূল (ছাঃ) একবার ছাড়া রাফ‘উল ইয়াদায়েন করেননি মর্মে ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ সাব্যস্ত হয়নি।[4] উক্ত হাদীছ সম্পর্কে ইবনু হিববান বলেন,
هَذَا أَحْسَنُ خَبَرٍ رَوَى أَهْلُ الْكُوْفَةِ فِىْ نَفْيِ رَفْعِ الْيَدَيْنِ فِي الصَّلاَةِ عِنْدَ الرُّكُوْعِ وَعِنْدَ الرَّفْعِ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْحَقِيْقَةِ أَضْعَفُ شَيْءٍ يُعَوَّلُ عَلَيْهِ لِأَنَّ لَهُ عِلَلاً تُبْطِلُهُ.
‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ না করার পক্ষে কূফাবাসীদের এটিই সবচেয়ে প্রিয় দলীল হলেও এটিই সবচেয়ে দুর্বল দলীল, যার উপরে নির্ভর করা হয়। কারণ এতে এমন ত্রুটি রয়েছে, যা একে বাতিল বলে গণ্য করে’।[5] আল্লামা ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) আলোচনা শেষে বলেন,
فَثَبَتَ بِهَذَا كُلِّهِ أَنَّ حَدِيْثَ ابْنِ مَسْعُوْدٍ لَيْسَ بِصَحِيْحٍ وَلاَ بِحَسَنٍ بَلْ هُوَ ضَعِيْفٌ لاَ يَقُوْمُ بِمِثْلِهِ حُجَّةٌ وَأَيْنَ يَقَعُ تَحْسِيْنُ التِّرْمِذِىِّ مَعَ مَا فِيْهِ مِنَ التَّسَاهُلِ وَتَصْحِيْحُ ابْنِ حَزَمٍ مِنْ طَعْنِ أُولَئِكَ الْأَئِمَّةِ.
‘অতএব এ সমস্ত দলীল দ্বারা প্রমাণিত হল যে, ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ ছহীহ নয়, হাসানও নয়। বরং যঈফ। এরূপ হাদীছ দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় না। কোথায় থাকবে ইমাম তিরমিযীর হাসান বলে মন্তব্য করা, যাতে আছে শৈথিল্য? এছাড়া হাদীছের ইমামগণের দোষারোপের মুখে ইবনু হাযামের ছহীহ হওয়ার মন্তব্য কিভাবে গ্রহণযোগ্য হবে?[6]
জ্ঞাতব্য : উক্ত মন্তব্য সমূহের পরও আলবানী এই বর্ণনাকে ছহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে তিনি যারা রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে না, তাদেরকে উক্ত হাদীছের প্রতি আমল করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘রুকূতে যাওয়ার সময় এবং রুকূ থেকে উঠার পর রাফ‘উল ইয়াদায়েন করার পক্ষে রাসূল (ছাঃ)-এর পক্ষ থেকে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। বরং মুহাদ্দিছ ওলামায়ে কেরামের নিকট এটি ‘মুতাওয়াতির’ পর্যায়ের বর্ণনা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এছাড়া প্রত্যেক তাকবীরেই রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা সম্পর্কে বহু হাদীছ রয়েছে। ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর সূত্র ছাড়া রাসূল (ছাঃ) থেকে এই আমল পরিত্যাগ করার কোন ছহীহ প্রমাণ নেই। তবে ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর হাদীছের উপর আমল করা উচিৎ নয়। কারণ এটি না-বোধক। আর হানাফীসহ অন্যান্যদের নিকট এটি বারবার উল্লেখিত হয় যে, হ্যাঁ-বোধক না-বোধকের উপর প্রাধান্য পায়। একটি হ্যাঁ-বোধক থাকার কারণে যদি এমনটি হয়, তাহলে একটি ঐক্যবদ্ধ জামা‘আত থাকলে এই মাসআলার সিদ্ধান্ত কী হতে পারে?
فَيَلْزَمُهُمْ عَمَلاً بِهَذِهِ الْقَاعِدَةِ مَعَ انْتِفَاءِ الْمُعَارِضِ أَنْ يَّأْخُذُوْا بِالرَّفْعِ وَأَنْ لاَ يَتَعَصَّبُوْا لِلْمَذْهَبِ بَعْدَ قِيَامِ الْحُجَّةِ وَلَكِنَّ الْمُؤَسَّفَ أَنَّهُ لَمْ يَأْخُذْ بِهِ مِنْهُمْ إِلاَّ أَفْرَادٌ مِنَ الْمُتَقَدِّمِيْنَ وَالْمُتَأَخِّرِيْنَ حَتَّى صَارَ التَّرْكُ شِعَارًا لَهُمْ.
‘সুতরাং তাদের উচিৎ হবে, উক্ত মূলনীতির আলোকে বিরোধিতাকে প্রত্যাখ্যান করে এই আমলকে অাঁকড়ে ধরা। অর্থাৎ তারা রাফ‘উল ইয়াদায়েন করবে এবং দলীল সাব্যস্ত হওয়ার পর মাযহাবী গোঁড়ামী প্রদর্শন করবে না। কিন্তু দুঃখজনক হল, পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের মধ্যে কতিপয় ব্যক্তি ছাড়া, তাদের কেউ এই আমল গ্রহণ করেনি। ফলে উক্ত আমল বর্জন করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে’।[7]
উল্লেখ্য যে, আলবানীর দোহায় দিয়ে অনেকে উক্ত হাদীছ উল্লেখ করে রাফ‘উল ইয়াদায়েনের বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং বিভ্রান্তি ছড়ান। কিন্তু আলবানীর মূল বক্তব্য পেশ করেন না। এটা এক ধরনের প্রতারণা। অতএব পাঠক সমাজ সাবধান!
[1]. আবুদাঊদ হা/৭৪৮, ১/১০৯ পৃঃ; তিরমিযী হা/২৫৭, ১ম খন্ড, পৃঃ ৫৯; নাসাঈ হা/১০২৬, ১ম খন্ড, পৃঃ ১১৭; বায়হাক্বী ২/৭৮। [2]. হাফেয আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আল-কূফী, আল-মুছান্নাফ ফিল আহাদীছ ওয়াল আছার (বৈরুত : দারুল ফিকর, ১৯৮৯/১৪০৯), হা/২৪৫৮, ১/২৬৭। [3]. নাছিরুদ্দীন আলবানী, তাহক্বীক্ব আবুদাঊদ (রিয়ায : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, তাবি.), হা/৭৪৮, পৃঃ ১৬১। [4]. তিরমিযী হা/২৫৬, ১/৫৯ পৃঃ-এর পর্যালোচনা দ্রঃ। [5]. নায়লুল আওত্বার ৩/১৪ পৃঃ; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৮। [6]. শায়খ আবুল হুসাইন ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী, মির‘আতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল মাফাতীহ (বেনারস : ইদারাতুল বুহূছ আল-ইসলামিয়াহ, ১৯৯৫/১৪১৫), ৩/৮৪ পৃঃ। [7]. الرفع عند الركوع والرفع منه ورد فيه أحاديث كثيرة جدا عنه صلى الله عليه وسلم بل هي متواترة عند العلماء بل ثبت الرفع عنه صلى الله عليه وسلم مع كل تكبيرة في أحاديث كثيرة ولم يصح الترك عنه صلى الله عليه وسلم إلا من طريق ابن مسعود رضي الله عنه فلا ينبغي العمل به لأنه ناف وقد تقرر عند الحنفية وغيرهم أن المثبت مقدم على النافي هذا إذا كان المثبت واحدا فكيف إذا كانوا جماعة كما في هذه المسأل؟ -সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৬৮-এর আলোচনা দ্রঃ।



2]-Rafadain Ki Haqeeqat Aur Ghalat Fahmiyan - Adv. Faiz Syed





Witr salah elaboration in bn



বিত্‌র নামায সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। এ নামায আদায় করতে মহানবী (সাঃ) উম্মতকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করতেন। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, ‘বিত্‌র ফরয নামাযের মত অবশ্যপালনীয় নয়; তবে আল্লাহর রসূল (সাঃ) তাকে সুন্নতের রুপদান করেছেন; তিনি বলেছেন, “অবশ্যই আল্লাহ বিত্‌র (জোড়হীন), তিনি বিত্‌র (জোড়শূন্যতা বা বেজোড়) পছন্দ করেন। সুতরাং তোমরা বিত্‌র (বিজোড়) নামায পড়, হে আহলে কুরআন!” (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, ইবনে খুযাইমাহ্‌, সহীহ, সহিহ তারগিব ৫৮৮নং)

বনী কিনানার মুখদিজী নামক এক ব্যক্তিকে আনসার গোত্রের আবূ মুহাম্মাদ নামক এক লোক বলল যে, বিতরের নামায ওয়াজেব। এ কথা শুনে সাহাবী উবাদাহ্‌ বিন সামেত (রাঃ) বললেন, ‘আবূ মুহাম্মাদ ভুল বলছে।’ আমি আল্লাহর রসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, “পাঁচ ওয়াক্ত নামায আল্লাহ বান্দাগণের উপর ফরয করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি তা যথার্থরুপে আদায় করবে এবং তাতে গুরুত্ব দিয়ে তার কিছুও বিনষ্ট করবে না, সেই ব্যক্তির জন্য আল্লাহর এই প্রতিশ্রুতি আছে যে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আর যে ব্যক্তি তা আদায় করবে না, সে ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কোন প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দেবেন, নচেৎ ইচ্ছা হলে জান্নাতেও দিতে পারেন।” (মালেক, মুঅত্তা, আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে হিব্বান, সহীহ, সহিহ তারগিব ৩৬৩ নং)

মহানবী (সাঃ) সওয়ারীর উপর বিতরের নামায পড়েছেন। (বুখারী, মুসলিম, সুনানু আরবাআহ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্‌) দারাক্বুত্বনী, সুনান ১৬১৭নং) অথচ ফরয নামাযের সময় তিনি সওয়ারী থেকে নেমে কিবলামুখ করতেন। (আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী)

বিতরের সময়

বিতরের সময় এশার পর থেকে নিয়ে ফজরের আগে পর্যন্ত। মহানবী (সাঃ) বলেন, “আল্লাহ তোমাদেরকে একটি অতিরিক্ত নামায প্রদান করেছেন। আর তা হল বিতরের নামায সুতরাং তোমরা তা এশা ও ফজরের মধ্যবর্তী সময়ে পড়ে নাও।” (আহমাদ, মুসনাদ, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১০৮নং)

সাহাবী গুযাইফ বিনহারেস বলেন, একদা আমি আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, ‘--- নবী (সাঃ) বিতরের নামায প্রথম রাত্রিতে পড়তেন, নাকি শেষ রাত্রিতে?’ তিনি বললেন, ‘কখনো তিনি প্রথম রাত্রিতে বিত্‌র পড়তেন, আবার কখনো শেষ রাত্রিতে।’ আমি বললাম, ‘আল্লাহু আকবার! সেই আল্লাহর প্রশংসা যিনি (দ্বীনের) ব্যাপারে প্রশস্ততা রেখেছেন।---’ (মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান ২০৯, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, মিশকাত ১২৬৩নং)

অবশ্য যে ব্যক্তি মনে করে যে, সে শেষ রাত্রে উঠতে পারবে না, তার জন্য উত্তম হল প্রথম রাত্রে বিত্‌র পড়ে ঘুমানো। পক্ষান্তরে যে মনে করে যে, সে শেষ রাত্রে উঠতে পারবে তার জন্য উত্তম হল শেষ রাত্রে বিত্‌র পড়া।

মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি ধারণা করে যে, সে শেষ রাত্রে উঠতে পারবে না, তার জন্য উত্তম হল প্রথম রাত্রে বিত্‌র পড়ে নেওয়া। পক্ষান্তরে যে ধারণা করে যে, সে শেষ রাত্রে উঠতে পারবে তার জন্য উত্তম হল শেষ রাত্রে বিত্‌র পড়া। কারণ, শেষ রাতের নামাযে ফিরিশ্‌তা উপস্থিত হন এবং এটাই হল শ্রেষ্ঠতম।” (আহমাদ, মুসনাদ, মুসলিম, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, মিশকাত ১২৬০নং)

একদা তিনি হযরত আবূ বাক্‌র (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কখন বিত্‌র পড়?” আবূ বাক্‌র (রাঃ) বললেন, ‘প্রথম রাত্রে এশার পরে।’ অতঃপর তিনি হযরত উমার (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, “আর উমার তুমি?” উমার (রাঃ) বললেন, ‘শেষ রাতে।’ পরিশেষে তিনি বললেন, “কিন্তু তুমি হে আবূ বাক্‌র! স্থির-নিশ্চয়তা অবলম্বন করে থাক। আর তুমি হে উমার! (শেষ রাতে উঠার পূর্ণ) আত্মবিশ্বাস গ্রহণ করে থাক।” (আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক)

শেষ জীবনে মহানবী (সাঃ) শেষ রাতেই বিত্‌র পড়তেন। কেননা, সেটাই ছিল উত্তম। এতদসত্ত্বেও তিনি তাঁর একাধিক সাহাবীকে স্থির-নিশ্চয়তা অবলম্বন পূর্বক প্রথম রাত্রে বিত্‌র পড়ে নিতে বিশেষ উপদেশ দিতেন। যেমন উপদেশ দিয়েছিলেন হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ)-কে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১২৬২নং) হযরত সা’দ বিন আবী অক্কাস (রাঃ) রসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর মসজিদে এশার নামায পড়ে এক রাকআত বিত্‌র পড়ে নিতেন। তাঁকে বলা হল, ‘আপনি কেবল এক রাকআত বিত্‌র পড়েন, তার বেশী পড়েন না (কি ব্যাপার)?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি আল্লাহর রসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, “যে ব্যক্তি বিত্‌র না পড়ে ঘুমায় না, সে হল স্থির-নিশ্চিত মানুষ।” (আহমাদ, মুসনাদ)

বিত্‌র নামাযের রাকআত সংখ্যা

• বিত্‌র নামায একটানা এক সালামে ৯, ৭, ৫, ৩ রাকআত পড়া যায়।

৯ রাকআত বিতরের নিয়ম হল, ৮ রাকআত একটানা পড়ে তাশাহ্‌হুদে বসতে হবে। তাতে আত্‌-তাহিয়্যাত ও দরুদ-দুআ পড়ে সালাম না ফিরে উঠে গিয়ে আরো এক রাকআত পড়ে সালাম ফিরতে হবে। (মুসলিম, মিশকাত ১২৫৭নং)

৭ রাকআত বিতরের নিয়ম হল, ৬ রাকআত একটানা পড়ে তাশাহ্‌হুদে বসতে হবে। তাতে আত্‌-তাহিয়্যাত ও দরুদ-দুআ পড়ে সালাম না ফিরে উঠে গিয়ে আরো এক রাকআত পড়ে সালাম ফিরতে হবে। (সুনানু আরবাআহ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্‌), আবূদাঊদ, সুনান ১৩৪২, নাসাঈ, সুনান ১৭১৯নং)

কোন কোন বর্ণনা মতে ষষ্ঠ রাকআতে না বসে একটানা ৭ রাকআত পড়ে সর্বশেষে তাশাহহুদ পড়ে সালাম ফিরতে হবে। (নাসাঈ, সুনান ১৭১৮নং)

৫ রাকআত বিতরের নিয়ম হল, ৫ রাকআত একটানা পড়ে তাশাহ্‌হুদে বসতে হবে। তাতে আত্‌-তাহিয়্যাত ও দরুদ-দুআ পড়ে সালাম ফিরতে হবে। (বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ, সুনান ১৭১৭, মিশকাত ১২৫৬নং)

৩ রাকআত বিতরের নিয়ম হল দুই প্রকার:

(ক) ২ রাকআত পড়ে সালাম ফিরে দিতে হবে। অতঃপর উঠে পুনরায় নতুন করে আরো এক রাকআত পড়ে সালাম ফিরতে হবে। (ইবনে আবী শাইবা, ইর: ২/১৫০) ইবনে উমারও এইভাবে বিত্‌র পড়তেন। (বুখারী)

(খ) ৩ রাকআত একটানা পড়ে তাশাহ্‌হুদে বসতে হবে। তাতে আত্‌-তাহিয়্যাত ও দরুদ-দুআ পড়ে সালাম ফিরতে হবে। (হাকেম, মুস্তাদরাক ১/৩০৪, বায়হাকী ৩/২৮, ৩/৩১) এ ক্ষেত্রে মাগরেবের নামাযের মত মাঝে (২ রাকআত পড়ে) আত্‌-তাহিয়্যাত পড়া যাবে না। যেহেতু আল্লাহর রসূল (সাঃ) বিতরকে মাগরেবের মত পড়তে নিষেধ করেছেন। (ইবনে হিব্বান, সহীহ ২৪২০,হাকেম, মুস্তাদরাক ১/৩০৪, বায়হাকী ৩/৩১, দারাক্বুত্বনী, সুনান ১৬৩৪নং)

এতদ্ব্যতীত ৩ রাকআত বিত্‌র মাগরেবের মত করে পড়া, (দারাক্বুত্বনী, সুনান ১৬৩৭নং) নতুন করে তাহ্‌রীমার তকবীর দেওয়ার মত (উল্টা) তকবীর দিয়ে পুনরায় হাত বেঁধে কুনূত পড়া ইত্যাদি কিছু সলফ কর্তৃক বর্ণনা করা হলেও তা সহীহ নয়। (ইর: ৪২৭নং, তুহ্‌ফাতুল আহওয়াযী ১/৪৬৪) অতএব তা বিদআত ও পরিত্যাজ্য।

১ রাকআত বিত্‌র :

বিত্‌র এক রাকআতও পড়া যায়। খোদ মহানবী (সাঃ) এক রাকআত বিত্‌র পড়তেন। তিনি বলেন, “রাতের নামায দু রাকআত দু রাকআত। অতঃপর তোমাদের কেউ যখন ফজর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে তখন সে যেন এক রাকআত বিত্‌র পড়ে নেয়।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১২৫৪নং)

তিনি আরো বলেন, “বিত্‌র হল শেষ রাতে এক রাকআত।” (মুসলিম, মিশকাত ১২৫৫নং)

তিনি বলেন, “বিত্‌র হল প্রত্যেক মুসলিমের জন্য হ্‌ক বা সত্য। সুতরাং যে ৫ রাকআত বিত্‌র পড়তে পছন্দ করে সে তাই পড়ুক, যে ৩ রাকআত পড়তে পছন্দ করে সে তাই পড়ুক এবং যে এক রাকআত পড়তে পছন্দ করে সে তাই পড়ুক।” (আবূদাঊদ, সুনান ১৪২২, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, মিশকাত ১২৬৫নং)

ইবনে আব্বাস (রাঃ)-কে বলা হল যে, মুআবিয়া (রাঃ) এশার পরে এক রাকআত বিত্‌র পড়লেন (সেটা কি ঠিক)? উত্তরে তিনি বললেন, ‘তিনি ঠিকই করেছেন। তিনি তো ফকীহ্‌। তাঁকে নিজের অবস্থায় ছেড়ে দাও, তিনি নবী (সাঃ)-এর সাহাবী।’ (বুখারী, মিশকাত ১২৭৭নং)

এ ছাড়া আরো অন্যান্য বহু সলফ ১ রাকআত বিত্‌র পড়তেন। (ইবনে আবী শাইবা দ্র:)

বিত্‌র নামাযের মুস্তাহাব ক্বিরাআত

এ নামাযে সূরা ফাতিহার পর যে কোন সূরা পড়া যায়। তবে মুস্তাহাব হল, প্রথম রাকআতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকআতে সূরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকআতে সূরা ইখলাস পড়া। (আহমাদ, মুসনাদ, নাসাঈ, সুনান, দারেমী, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, মিশকাত ১২৭০-১২৭২নং)

মহানবী (সাঃ) কখনো কখনো তৃতীয় রাকআতে সূরা ইখলাসের সাথে সূরা নাস ও ফালাকও পাঠ করতেন। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক ১/৩০৫)

বিতরের কুনূত :

মহানবী (সাঃ) হযরত হাসান বিন আলী (রাঃ)-কে নিম্নের দুআ বিত্‌র নামাযে ক্বিরাআত শেষ করার পর (রুকূর আগে) পড়তে শিখিয়েছিলেন:-
اَللّهُمَّ اهْدِنِيْ فِيْمَنْ هَدَيْتَ وَعَافِنِيْ فِيْمَنْ عَافَيْتَ وَتَوَلَّنِيْ فِيْمَنْ تَوَلَّيْتَ وَبَارِكْ لِيْ فِيْمَا أَعْطَيْتَ وَقِنِيْ شَرَّ مَا قَضَيْتَ فَإِنَّكَ تَقْضِيْ وَلاَ يُقْضى عَلَيْكَ إِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَّالَيْتَ وَلاَ يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ لاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ (وَصَلَّى اللهُ عَلى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ)।
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাহ্‌দিনী ফী মানহাদাইত। অআ-ফিনী ফীমান আ ফাইত। অতাওয়াল্লানী ফী মান তাওয়াল্লাইত। অবা-রিকলী ফী মা আ’ত্বাইত। অকি¸নী শার্রামা ক্বাযাইত। ফাইন্নাকা তাক্বয্ব অলা ইউক্বযা আলাইক। ইন্নাহু লা য়্যাযিল্লু মাঁ উওয়া-লাইত। অলা য়্যাইযযু মান আ’-দাইত। তাবা-রাকতা রাব্বানা অতাআ’-লাইত। লা মানজা মিনকা ইল্লা ইলাইক। (অ স্বাল্লাল্লাহু আলা নাবিয়িনা মুহাম্মাদ।)

অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হেদায়াত করে তাদের দলভুক্ত কর যাদেরকে তুমি হেদায়াত করেছ। আমাকে নিরাপদে রেখে তাদের দলভুক্ত কর যাদেরকে তুমি নিরাপদে রেখেছ, আমার সকল কাজের তত্তাবধান করে আমাকে তাদের দলভুক্ত কর যাদের তুমি তত্তাবধান করেছ। তুমি আমাকে যা কিছু দান করেছ তাতে বরকত দাও। আমার ভাগ্য তুমি যা ফায়সালা করেছ তার মন্দ থেকে রক্ষা কর। কারণ তুমিই ফায়সালা করে থাক এবং তোমার উপর কারো ফায়সালা চলে না। নিশ্চয় তুমি যাকে ভালোবাস সে লাঞ্জিত হয় না এবং যাকে মন্দ বাস সে সম্মানিত হয় না। তুমি বরকতময় হে আমাদের প্রভু এবং তুমি সুমহান। তোমার আযাব থেকে তুমি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল নেই। আর আমাদের নবীর উপর আল্লাহ রহ্‌মত বর্ষণ করেন। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ, বায়হাকী, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, মিশকাত ১২৭৩নং, ইর: ২/১৭২)

প্রকাশ থাকে যে, দুআর শেষে দরুদের উল্লেখ উক্ত হাদীস সমূহে না থাকলেও সলফদের আমল শেষে দরুদ পড়ার কথা সমর্থন করে। আর সে জন্যই দুআর শেষে এখানে যুক্ত করা হয়েছে। (তামামুল মিন্নাহ্‌, আলবানী ২৪৩পৃ:, সিফাতু স্বালাতিন নাবী (সাঃ), আলবানী)

হযরত আলী (রাঃ) বলেন মহানবী (সাঃ) তাঁর বিতরের শেষ (রাকআতের রুকূর আগে কুনূতে) এই দুআ বলতেন,
اَللّهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوْبَتِكَ وَ أَعُوْذُ بِكَ مِنْكَ لاَ أُحْصِيْ ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلى نَفْسِكَ।
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিরিযা-কা মিন সাখাতিক, অবিমুআফা-তিকা মিন উক্ববাতিক, অ আঊযু বিকা মিন্‌কা লা উহ্‌সী ষানা-আন আলাইকা আন্তা কামা আসনাইতা আলা নাফসিক।

অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার সন্তুষ্টির অসীলায় তোমার ক্রোধ থেকে, তোমার ক্ষমাশীলতার অসীলায় তোমার শাস্তি থেকে এবং তোমার সত্তার অসীলায় তোমার আযাব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি তোমার উপর তোমার প্রশংসা গুনে শেষ করতে পারি না, যেমন তুমি নিজের প্রশংসা নিজে করেছ। (সুনানু আরবাআহ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্‌), মিশকাত ১২৭৬নং, ইর: ২/১৭৫)

প্রকাশ থাকে যে, অনেকে বলেছেন, উক্ত দু'আটি বিতরের নামাযের শেষে অর্থাৎ, সালাম ফিরার পর পড়া মুস্তাহাব। (আউনুল মা’বূদ ৪/২১৩, তুহ্‌ফাতুল আহওয়াযী ১০/৯, ফিকহুস সুন্নাহ্‌ আরবী ১/১৭৪, ফিকহুস সুন্নাহ্‌ উর্দু১৮৫পৃ: দ্র:)

পক্ষান্তরে মানারুস সাবীল (১/১০৮) আসসালসাবীল (১/১৬২) প্রভৃতি ফিকহের কিতাবে উক্ত দুআকে দুআয়ে কুনূত বলেই প্রথমোক্ত দুআর পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে। আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ্‌ প্রভৃতি হাদীস গ্রন্থের পরিচ্ছেদের শিরোনাম বাঁধার ভাবধারায় বুঝা যায় যে, এ দুআ বিতরের কুনূতে পঠনীয়। নাসাঈ শরীফের উক্ত হাদীসের টীকায় আল্লামা সিন্ধী বলেন, ‘হতে পারে তিনি উক্ত দুআ কিয়ামের শেষাংশে (রুকূর আগে) বলতেন। সুতরাং ওটাও একটি দুআয়ে কুনূত; যেমন গ্রন্থকার (নাসাঈর) কথা দাবী করে। আবার এও হতে পারে যে, তিনি (বিতরের) তাশাহহুদের বৈঠকে (সালাম ফিরার পূর্বে) উক্ত দুআ পড়তেন। আর শব্দের বাহ্যিক অর্থও তাই।’ (নাসাঈ, সুনান ১৭৪৬নং, ২/২৭৫) অাল্লাহু আ’লাম।

বিতরের কুনূতকে কুনূতে গায়র নাযেলাহ্‌ বলা হয়। আর তা সব সময় প্রত্যেক রাত্রে বিত্‌র নামাযে পড়া হয়। অবশ্য কুনূতের দুআ পড়া মুস্তাহাব; জরুরী নয়। সুতরাং কেউ ভুলে ছেড়ে দিয়ে সিজদায় গেলে সহু সিজদা লাগে না। যেমন প্রত্যেক রাত্রে তা নিয়মিত না পড়ে মাঝে মাঝে ত্যাগ করা উচিত। (সিফাতু স্বালাতিন নাবী (সাঃ), আলবানী ১৭৯পৃ:, আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ৪/২৭)

প্রকাশ থাকে যে, বিতরের কুনূত (দুআ) মুখস্থ না থাকলে তার বদলে তিনবার ‘ক্বুল’ বা ‘রাব্বানা আতেনা’ পড়ে কাজ চালানো শরীয়ত-সম্মত নয়। মুখস্থ না থাকলে করতে হবে। আর ততদিন কুনূত না পড়ে এমনিই কাজ চলবে।

বিতরের দুআয় ইমাম সাহেব বহুবচন শব্দ ব্যবহার করবেন। এরুপ করা বিধেয়। এটা নিষিদ্ধ নববী শব্দ পরিবর্তনের আওতাভুক্ত নয়। কারণ, এটা কেবলমাত্র শব্দের বচন পরিবর্তন। পক্ষান্তরে হাদীসের কোন কোন বর্ণনায় বিতরের দুআ বহুবচন শব্দেও বর্ণিত হয়েছে। (ত্বাবারানী, মু’জাম কাবীর ২৭০০নং, শারহুস সুন্নাহ্‌, বাগবী ৩/১২৯, সাতা: ইবনে বায ৪১পৃ:, মুখতাসারু মুখালাফাতু ত্বাহারাতি অসস্বালাহ, আব্দুল আযীয সাদহান ১৭১পৃ: দ্র:)

কুনূতের স্থান ও নিয়ম

কুনূতের দুআ (শেষ রাকআতের) রুকুর আগে বা পরে যে কোন স্থানে পড়া যায়। হুমাইদ বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, কুনূত রুকূর আগে না পরে? উত্তরে তিনি বললেন, ‘আমরা রুকূর আগে ও পরে কুনূত পড়তাম।’ (ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, মিশকাত ১২৯৪নং)

অনুরুপ (দুআর মত)হাত তোলা ও না তোলা উভয় প্রকার আমলই সলফ কর্তৃক বর্ণিত আছে। (তুহ্‌ফাতুল আহওয়াযী ১/৪৬৪)

অবশ্য দুআর পরে মুখে হাত বুলানো সুন্নত নয়। কারণ, এ ব্যাপারে যত হাদীস এসেছে সবগুলোই দুর্বল। (ইর: ২/১৮১, আলমুমতে’, শারহে ফিক্‌হ, ইবনে উষাইমীন ৪/৫৫) বলা বাহুল্য, দুর্বল হাদীস দ্বারা কোন সুন্নত প্রমাণ করা সম্ভব নয়। তাই কিছু উলামা স্পষ্টভাবে তা (অনুরুপ বুকেহাত ফিরানোকে) বিদআত বলেছেন। (ইর: ২/১৮১, মু’জামুল বিদা’ ৩২২পৃ:)

ইযয বিন আব্দুস সালাম বলেন, ‘জাহেল ছাড়া এ কাজ অন্য কেউ করে না।’ পক্ষান্তরে দুআয় হাত তোলার ব্যাপারে অনেক সহীহ হাদীস এসেছে। তার মধ্যে কোন হাদীসেই মুখে হাত ফিরানোর কথা নেই। আর তা এ কথারই দলীল যে, উক্ত আমল আপত্তিকর ও অবিধেয়। (ইর: ২/১৮২, সিফাতু স্বালাতিন নাবী (সাঃ), আলবানী ১৭৮পৃ:)

বিতরের নামাযের সালাম ফিরে দুআ:

سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُدُّوْسِ، 
উচ্চারণ: সুবহা-নাল মালিকিল কুদ্দূস।

অর্থ: আমি পবিত্রময় বাদশাহ্‌র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি।

এই দুআটি তিনবার পড়তে হয়। তন্মধ্যে তৃতীয় বারে উচ্চস্বরে পড়া কর্তব্য। (আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান, মিশকাত ১২৭৪-১২৭৫নং)

এক রাতে দুইবার বিত্‌র নিষিদ্ধ

রাত্রের সর্বশেষ নামায হল বিতরের নামায। বিতরের পর আর কোন নামায নেই। অতএব যদি কেউ শেষ রাত্রে উঠতে পারবে না মনে করে এশার পর বিত্‌র পড়ে নেয় অতঃপর শেষ রাত্রে উঠতে সক্ষম হয়, সে তাহাজ্জুদ পড়বে কিন্তু আর দ্বিতীয় বার বিত্‌র পড়বে না। কারণ, মহানবী (সাঃ) বলেন, “এক রাতে দুটি বিত্‌র নেই।” (আহমাদ, মুসনাদ, আদ:, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে হিব্বান, সহীহ, বায়হাকী, জামে ৭৫৬৭নং) “তোমরা বিত্‌র নামাযকে রাতের শেষ নামায কর।” (বুখারী, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, ইর: ৪২২নং)

বিতরের পর নফল ২ রাকআত

অবশ্য এ ব্যাপারে একটি ব্যতিক্রম নামায হল, বিতরের পরে ২ রাকআত সুন্নত বসে বসে পড়া। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, রসূল (সাঃ) (বিত্‌র নামাযের) সালাম ফিরার পর বসে বসে ২ রাকআত নামায পড়তেন। (মুসলিম, সহীহ) হযরত উম্মে সালামাহ্‌ বলেন। ‘তিনি বিতরের পর বসে বসে (হাল্কা করে) ২ রাকআত নামায পড়তেন।’ (আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ১২৮৪নং)

মহানবী (সাঃ) বলেন, “নিশ্চয় এই (সফর) রাত্রি জাগরণ ভারী ও কষ্টকর। সুতরাং তোমাদের কেউ যখন বিত্‌র পড়বে তখন সে যেন ২ রাকআত পড়ে নেয়। অতঃপর সে যদি রাত্রে উঠতে পারে তো উত্তম। নচেৎ, ঐ ২ রাকআত তার (রাতের নামায) হয়ে যাবে।” (দারেমী, সুনান, মিশকাত ১২৮৬, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৯৯৩নং দ্র:)

উক্ত হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, ঐ ২ রাকআত আমাদেরও পড়া উচিত। আর তা মহানবী (সাঃ)-এর জন্য খাস নয়।

আবূ উমামাহ্‌ বলেন, ‘নবী (সাঃ) ঐ ২ রাকআত নামায বিতরের পর বসে বসে পড়তেন। আর তার প্রথম রাকআতে সূরা যিলযাল ও দ্বিতীয় রাকআতে সূরা কাফিরুন পাঠ করতেন।’ (আহমাদ, মুসনাদ, মিশকাত ১২৮৭নং)

বিতরের কাযা

বিত্‌র নামায যথা সময়ে না পড়া হলে তা কাযা পড়া বিধেয়। মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি বিত্‌র না পড়ে ঘুমিয়ে যায় অথবা তা পড়তে ভুলে যায় সে ব্যক্তি যেন তা স্মরণ হওয়া মাত্র তা পড়ে নেয়।” (আহমাদ, মুসনাদ, সুনানু আরবাআহ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্‌),হাকেম, মুস্তাদরাক, জামে ৬৫৬২নং) তিনি আরো বলেন, “যে ব্যক্তি ঘুমিয়ে থেকে বিত্‌র না পড়তে পারে সে ব্যক্তি যেন ফজরের সময় তা পড়ে নেয়।” (তিরমিযী, সুনান, ইর: ৪২২, জামে ৬৫৬৩নং)

খোদ মহানবী (সাঃ)-এর কোন রাত্রে বিত্‌র না পড়ে ফজর হয়ে গেলে তখনই বিত্‌র পড়ে নিতেন। (আহমাদ, মুসনাদ ৬/২৪৩, বায়হাকী ১/৪৭৯, ত্বাবারানী, মু’জাম, মাজমাউয যাওয়াইদ,হাইষামী ২/২৪৬)

একদা এক ব্যক্তি মহানবীর দরবারে এসে বলল, ‘হে আল্লাহর নবী! ফজর হয়ে গেছে অথচ আমি বিত্‌র পড়তে পারিনি।’ তিনি বললেন, “বিত্‌র তো রাত্রেই পড়তে হয়।” লোকটি পুনরায় বলল, ‘হে আল্লাহর নবী! ফজর হয়ে গেছে অথচ আমি বিত্‌র পড়তে পারিনি।’ এবারে তিনি বললেন, “এখন পড়ে নাও।” (ত্বাবারানী, মু’জাম, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৭১২নং)

এ হাদীস থেকে স্পষ্ট হয় যে, ফজর হয়ে গেলেও বিতর নামায বিতরের মতই কাযা পড়া যাবে। (সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ৪/২৮৯ দ্র:)

বিত্‌র নামাযে জামাআত

মহানবী (সাঃ) যে কয় রাত তারাবীহ্‌র নামায পড়েছিলেন সে কয় রাতে জামাআত সহকারে বিত্‌র পড়েছিলেন। অনুরুপ সাহাবীগণও রমযান মাসে জামাআত সহকারে তারাবীহ্‌র সাথে বিত্‌র পড়েছেন।

পাঁচ-ওয়াক্ত নামাযে কুনূত

মুসলিমদের প্রতি কাফেরদের অত্যাচারের সময় পাঁচ-ওয়াক্ত নামাযের শেষ রাকআতের রুকূ থেকে মাথা তুলে কুনূত পড়া বিধেয়। (আবূদাঊদ, সুনান, মিশকাত ১২৯০নং) এই কুনূতকে কুনূতে নাযেলাহ্‌ বলা হয়। এই কুনূতে মুসলিমদের জন্য দুআ এবং অত্যাচারী কাফেরদের বিরুদ্ধে বদ দু’আ করা বিধেয়। দুই হাত তুলে দুআ করবেন ইমাম এবং ‘আমীন-আমীন’ বলবে মুক্তাদীগণ। এই কুনূতের দুআর ভূমিকা নিম্নরুপ:-
اَللّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُثْنِيْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ كُلَّهُ، وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ، وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ، اَللّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ، وَلَكَ نُصَلِّيْ وَ نَسْجُدُ، وَإِلَيْكَ نَسْعى وَنَحْفِدُ، نَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشى عَذَابَكَ، إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحَقٌ।
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা অ নাসতাগফিরুক, অনুষনী আলাইকাল খায়রা কুল্লাহ্‌, অনাশকুরুকা অলা নাকফরুক, অনাখলাউঅনাতরুকু মাঁই য়্যাফজুরুক, আল্লা-হুম্মা ইয়্যাকা না’বুদ, অলাকা নুসাল্লী অনাসজুদ, অইলাইকা নাসআ অ নাহ্‌ফিদ, নারজু রাহ্‌মাতাকা অনাখশা আযা-বাক, ইন্না আযা-বাকা বিল কুফফা-রি মুলহাক্ব।

অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমরা তোমার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি এবং ক্ষমা ভিক্ষা করছি, তোমার নিমিত্তে যাবতীয় কল্যাণের প্রশংসা করছি, তোমার কৃতজ্ঞতা করি ও কৃতঘ্নতা করি না, তোমার যে অবাধ্যতা করে তাকে আমরা ত্যাগ করি এবং তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই ইবাদত করি, তোমার জন্যই নামায পড়ি এবং সিজদা করি, তোমার দিকেই আমরা ছুটে যাই। তোমার রহ্‌মতের আশা রাখি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি, নিশ্চয় তোমার আযাব কাফেরদেরকে পৌঁছবে।

এরপর অত্যাচারিতদের জন্য দুআ এবং অত্যাচারীদের উপর বদদু’আ করতে হয়। যেমন,
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ، وَأَلِّفْ بَيْنَ قُلُوْبِهِمْ، وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِهِمْ، وَانْصُرْهُمْ عَلَى عَدُوِّكَ وَعَدُوِّهِمْ،
اَللَّهُمَّ عَذِّبِ الْكَفَرَةَ الَّذِيْنَ يَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِكَ، وَيُكَذِّبُوْنَ رُسُلَكَ، وَيُقَاتِلُوْنَ أَوْلِياَءَكَ، اَللَّهُمَّ خَالِفْ بَيْنَ كَلِمَتِهِمْ، وَزَلْزِلْ أَقْدَامَهُمْ، وَأَنْزِلْ بِهِمْ بَأْسَكَ الَّذِيْ لاَ تَرُدُّهُ عَنِ الْقَوْمِ الْمُجْرِمِيْنَ।
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মাগফির লিল মু’মিনীনা অল মু’মিনা-ত, অলমুসলিমীনা অলমুসলিমাত, অ আল্লিফ বাইনা ক্বুলবিহিম, অ আসলিহ্‌ যা-তা বাইনিহিম, অনসুরহুম আলা আদুউবিকা অ আদুউবিহিম।

আল্লা-হুম্মা আযযিবিল কাফারাতাল্লাযীনা য়্যাসুদ্দূনা আন সাবীলিক, অয়্যুকাযযিবূনা রুসুলাক, অয়্যুক্বা-তিলনা আউলিয়া-আক। আল্লাহুম্মা খা-লিফ বাইনা কালিমাতিহিম, অযালযিল আক্বদামাহুম, অআনযিল বিহিম বা’সাকাল্লাযী লা তারুদ্দুহু আনিল ক্বাউমিল মুজরিমীন।

অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি মুমিন ও মুসলিম নারী-পুরুষদেরকে ক্ষমা করে দাও। তাদের হৃদয়ে হৃদয়ে মিল দাও। তাদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি কর। তাদেরকে তোমার ও তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সাহায্য কর।

হে আল্লাহ! যে কাফেররা তোমার পথে বাধা সৃষ্টি করছে, তোমার রসূলদেরকে মিথ্যা মনে করছে এবং তোমার বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তাদেরকে তুমি আযাব দাও। হে আল্লাহ! তুমি ওদের মাঝে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি কর। ওদেরকে বিক্ষিপ্ত ও বিচলিত কর এবং ওদের উপর তোমার সেই আযাব অবতীর্ণ কর, যা অপরাধী জাতি থেকে তুমি রদ করো না। (বাইহাকী, ২/২১১, ইবনে আবী শাইবাহ্‌ প্রমুখ, ইরওয়াউল গলীল ২/ ১৬৪- ১৭০)

রমযানের কুনূতে উক্ত দুআ, অর্থাৎ কাফেরদের উপর বদদুআ এবং মুমিনদের জন্য দুআ ও ইস্তেগফার করার কথা সাহাবীদের আমলে প্রমাণিত। (সহীহ ইবনে খুযাইমা ১১০০ নং)

যেমন এরুপ দুআও করা বিধেয়:-
اَللّهُمَّ أَنْجِ الْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ، اَللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى الطُّغَاةِ الظَّالِمِيْنَ، وَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ سِنِيْنَ كَسِنِيْ يُوْسُف।
প্রকাশ থাকে যে, সাধারণ দিনসমূহে কেবল ফজরের নামাযে কুনূত বিধেয় নয়; বরং তা বিদআত। আবূ মালেক আশজাঈ বলেন, আমার আব্বা আল্লাহর রসূল (সাঃ)-এর পিছনে এবং আবূ বাক্‌র, উমার ও উসমানের পিছনে নামায পড়েছেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, তাঁরা কি ফজরে কুনূত পড়তেন? তিনি উত্তরে বললেন, ‘না, বেটা! এটা বিদআত।’ (আহমাদ, মুসনাদ, নাসাঈ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্‌, সুনান, বুলুগুল মারাম ৩০৩নং, মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ১৭/৬৮)

হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) কোন সম্প্রদায়ের জন্য দুআ অথবা বদদু’আ করা ছাড়া ফজরের নামাযে এমনি কুনূত পড়তেন না। (ইবনে হিব্বান, সহীহ, ইবনে খুযাইমাহ্‌, সহীহ, বুলুগুল মারাম ৩০২নং)

পক্ষান্তরে যে হাদীস দ্বারা ফজরের নামাযে কুনূত প্রমাণ করা হয়, তা হয় দুর্বল, না হয় সে কুনূত হল নাযেলার কুনূত; যা ৫ ওয়াক্ত নামাযেই বিধেয়। (তামামুল মিন্নাহ্‌, আলবানী ২৪৩পৃ:)

(বইঃ সালাতে মুবাশ্বির থেকে সংগৃহীত)
লেখক: শায়খ আব্দুল হামীদ আল ফাইযী আল-মাদানী
লিসান্স: মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদিআরব
(সৌদী আরবের আল-মাজমাআ অঞ্চলের দাওয়াত সেন্টারে কর্মরত দাওয়াত-কর্মী এবং বাংলা ভাষার প্রসিদ্ধ লেখক ও অনুবাদক।)
Share · 27 May
[sourse-https://www.facebook.com/photo.php?fbid=363270490544923&set=a.101638143374827.1073741828.100005859241502&type=1]

Monday 15 June 2015

সালাতে (নামাযে) স্ব'শব্দে আমীন (উচ্চস্বরে) বলার হাদীসসমূহ


সালাতে (নামাযে) স্ব'শব্দে আমীন (উচ্চস্বরে) বলার হাদীসসমূহ

০১) বুখারি ১ম খন্ড ১০৮ পৃষ্ঠা
০২) মুসলিম শরীফ ১৭৬ পৃষ্ঠা
০৩) আবু দাউদ ১৩৪ পৃষ্ঠা
০৪) তিরমিজি ৫৭,৫৮ পৃষ্ঠা
০৫) নাসায়ী ১৪০ পৃষ্ঠা
০৬) ইবনে মাজাহ ৬২ পৃষ্ঠা
০৭) মুয়াত্তা মালেক ১০৮ পৃষ্ঠা
০৮) বায়হাকী ২য় খন্ড ৫৯ পৃষ্ঠা
০৯) দার কুৎনী ১২৭ পৃষ্ঠা
১০) মেশকাত ১ম খন্ড ৭৯,৮০ পৃষ্ঠা
১১) যাদুল মায়াদ ১ম খন্ড ১৩২ পৃষ্ঠা
১২) মাসনাদে ইমাম শাফী ২৩ পৃষ্ঠা
১৩) ইবনে আবি শায়বা ২৮ পৃষ্ঠা
১৪) ফাতহুল বারী ২য় খন্ড ২৬৭ পৃষ্ঠা
১৫) হিদায়া দিরায়াহ ১০৮ পৃষ্ঠা
১৬) আবকারুল মিনান ১৮৯ পৃষ্ঠা
১৭) ফাতহুল বায়ান ৩৪ পৃষ্ঠা
১৮) মুহাল্লা ২৬৩ পৃষ্ঠা
১৯) রাফউল ওজাজাহ ৩০০ পৃষ্ঠা
২০) তোহফাতুল আহয়াজি ১ম খন্ড ২০৮ পৃষ্ঠা
২১) তানভীরুল হায়ালেক ১০৮ পৃষ্ঠা
২২) মন্তাকা ৫৯ পৃষ্ঠা
২৩) নায়লুল আওতার ২য় খন্ড ২৪৪ পৃষ্ঠা
২৪) আহকাম ২০৭ পৃষ্ঠা
২৫) আততার গীব ২৩ পৃষ্ঠা
২৬) সবুলুস সালাম ২৪৩ পৃষ্ঠা
২৭) কানজুল ওম্মাল ৫৯ পৃষ্ঠা
২৮) জামেউল ফায়ায়েদ ৭৬ পৃষ্ঠা
২৯) তাল খিসুল হাবীর ৯০ পৃষ্ঠা
৩০) আউনুল মাবুদ ২৫২ পৃষ্ঠা
৩১) তায়সীরুল ওসুল ২১৭ পৃষ্ঠা
হানাফী মাযহাবের কেতাবগুলিতেও উচ্চস্বরে
আমীন
১) আইনুল হেদায়া ১ম খন্ড ৩৬৫ পৃষ্ঠা
২) নুরুল হেদায়া ৯৭ পৃষ্ঠা
৩) ফতহুল কাদীর ৩৬৩ পৃষ্ঠা
৪) মাদারেজুন্নবুয়াত ৪০১ পৃষ্ঠা
৫) তানবীরুল আইনাইন ৪১ পৃষ্ঠা
৬) গুনিয়াতুত তালেবীন ১১ পৃষ্ঠা
৭) তাহকীকুল কালাম ১০ পৃষ্ঠা
৮) তালিকুল মুমাজ্জাদ ১০৫ পৃষ্ঠা (ভারতের প্রখ্যাত
মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল হাই লাক্ষ্ণৌভী
হানাফী )
ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর উস্তাদ আতা ইবনে
আবি রাবাহ (রহঃ) বলেন -
"আমি মসজিদুল হারাম কাবা শরীফে কমপক্ষে দুশ'
জন সাহাবীকে আর বিভিন্ন দিনে হাজার হাজার
সাহাবীকে এমন অবস্থায় পেয়েছি যে, যখন ইমাম
"অলাদ্দৌলীন" বলতেন তখন আমি তাদের আমীনের
প্রতিধ্বনি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শুনতাম" [বায়হাকী ২য়
খন্ড ৫৯ পৃষ্ঠা, আইনী ৬ষ্ঠ খন্ড ৪৮ পৃষ্ঠা, ফাতহুল
বারী ২য় খন্ড ২৬৭ পৃষ্ঠা]
— with Abdullah Al Fattah.
[sourse-https://www.facebook.com/photo.php?fbid=832695980134713&set=a.100653180005667.659.100001829552720&type=1]


Sunday 7 June 2015

যঈফ-হাদীছ : সহো সিজদার জন্য ডানে একবার সালাম ফিরানো এবং পুনরায় তাশাহ্হুদ পড়া


প্রচলিত ভুলঃ৫
ΠΠΠΠΠΠΠΠΠΠ
(১৬) সহো সিজদার জন্য ডানে একবার সালাম ফিরানো এবং পুনরায় তাশাহ্হুদ পড়া :

ছালাতে ভুল করলে প্রায় মুছল্লী তাশাহ্হুদ পড়ে ডান দিকে একবার সালাম ফিরায়। অতঃপর সহো সিজদা দিয়ে আবার তাশাহ্হুদ পড়ে। এই আমল ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয়। বিশেষ করে একদিকে সালাম ফিরানোর কোন দলীলই নেই। একেবারেই ভিত্তিহীন। আর সহো সিজদার পর তাশাহ্হুদ পড়া সম্পর্কে মাত্র একটি বর্ণনা এসেছে। সেটা আবার যঈফ।
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ أَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى بِهِمْ فَسَهَا فَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ تَشَهَّدَ ثُمَّ سَلَّمَ.
ইমরান ইবনু হুছাইন থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে নিয়ে ছালাত আদায় করেন এবং ভুল করেন। অতঃপর তিনি দুইটি সিজদা দেন এবং পুনরায় তাশাহহুদ পড়েন অতঃপর সালাম ফিরান।[1]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ।[2] উক্ত হাদীছ ছহীহ হাদীছেরও বিরোধী। কারণ একই রাবী থেকে ছহীহ বুখারীতে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু সেখানে তাশাহ্হুদ পড়ার কথা নেই।[3]
অতএব উক্ত আমল পরিত্যাগ করতে হবে। 
★★★ছালাতে তাশাহ্হুদে বসতে ভুলে গেলে কিংবা রাক‘আত কম-বেশী হলে অথবা রুকূ-সিজদা ছুটে গেলে ভুল সংশোধন করে নিবে। অতঃপর শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ, দরূদ ও অন্য দু‘আ পড়ে শেষ করে সালাম ফিরানোর পূর্বেই দুইটি সহো সিজদা দিবে এবং সালাম ফিরাবে।[4] অথবা সালাম ফিরানোর পর দুইটি সিজদা দিবে এবং পুনরায় সালাম ফিরাবে।[5] সহো সিজদা দেয়ার পর তাশাহ্হুদ পড়তে হবে না।

_______________________________________________
[1]. আবুদাঊদ হা/১০৩৯, ১/১৪৯ পৃঃ। [2]. যঈফ আবুদাঊদ হা/১০৩৯, পৃঃ ৮৩; বিস্তারিত দ্রঃ তানক্বীহ, পৃঃ ৩৩২-৩৫। [3]. বুখারী হা/৪৮২, ১/৬৯ পৃঃ, (ইফাবা হা/৪৬৬, ১ম খন্ড, পৃঃ ২৬১), ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮৮; মিশকাত হা/১০১৭, পৃঃ ৯৩। [4]. বুখারী হা/১২৩০; মুসলিম হা/১২৯২-১৩০০, ‘মসজিদ সমূহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২০; মিশকাত হা/১০১৮। [5]. মুসলিম হা/১৩০২, ‘মসজিদ সমূহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২০।