Sunday 21 June 2015

1]-Raising handa- ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন না করা 2]-video

1]- ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন না করা :
ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। এর পক্ষে শত শত ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অধিকাংশ মুছল্লী উক্ত সুন্নাতকে প্রত্যাখ্যান করেছে। উক্ত ঠুনকো যুক্তিগুলোর অন্যতম হল, কতিপয় জাল ও যঈফ হাদীছ। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা পেশ করা হল-
(১) عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْعُوْدٍ أَلَا أُصَلِّىْ بِكُمْ صَلَاةَ رَسُوْلِ اللهِ ؟ قَالَ فَصَلَّى فَلَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلَّا مَرَّةً.
(১) আলক্বামা (রাঃ) বলেন, একদা আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বললেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত শিক্ষা দিব না? রাবী বলেন, অতঃপর তিনি ছালাত পড়ালেন। কিন্তু একবার ছাড়া তিনি তার দুই হাত উত্তোলন করলেন না।[1] উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন কিতাবে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর নামে আরো কতিপয় বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে।[2]
তাহক্বীক্ব : হাদীছটি যঈফ। ইমাম আবুদাঊদ (২০৪-২৭৫ হিঃ) উক্ত হাদীছ বর্ণনা করে বলেন, هَذَا حَدِيْثٌ مُخْتَصَرٌ مِّنْ حَدِيْثٍ طَوِيْلٍ وَلَيْسَ هُوَ بِصَحِيْحٍ عَلَى هَذَا اللَّفْظِ ‘এই হাদীছটি লম্বা হাদীছের সংক্ষিপ্ত রূপ। আর এই শব্দে হাদীছটি ছহীহ নয়’।[3] উল্লেখ্য যে, ভারতীয় ছাপা আবুদাঊদে উক্ত মন্তব্য নেই। এর কারণ প্রকাশকরাই ভাল জানেন। ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেন, আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (১১৮-১৮১ হিঃ) বলেছেন,
قَدْ ثَبَتَ حَدِيْثُ مَنْ يَرْفَعُ يَدَيْهِ وَذَكَرَ حَدِيْثَ الزُّهْرِىِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيْهِ وَلَمْ يَثْبُتْ حَدِيْثُ ابْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ النَّبِىَّ لَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلاَّ فِىْ أَوَّلِ مَرَّةٍ.
‘যে ব্যক্তি রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে তার হাদীছ সাব্যস্ত হয়েছে। অতঃপর তিনি সালেম বর্ণিত যুহরীর হাদীছ পেশ করেন। তবে রাসূল (ছাঃ) একবার ছাড়া রাফ‘উল ইয়াদায়েন করেননি মর্মে ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ সাব্যস্ত হয়নি।[4] উক্ত হাদীছ সম্পর্কে ইবনু হিববান বলেন,
هَذَا أَحْسَنُ خَبَرٍ رَوَى أَهْلُ الْكُوْفَةِ فِىْ نَفْيِ رَفْعِ الْيَدَيْنِ فِي الصَّلاَةِ عِنْدَ الرُّكُوْعِ وَعِنْدَ الرَّفْعِ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْحَقِيْقَةِ أَضْعَفُ شَيْءٍ يُعَوَّلُ عَلَيْهِ لِأَنَّ لَهُ عِلَلاً تُبْطِلُهُ.
‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ না করার পক্ষে কূফাবাসীদের এটিই সবচেয়ে প্রিয় দলীল হলেও এটিই সবচেয়ে দুর্বল দলীল, যার উপরে নির্ভর করা হয়। কারণ এতে এমন ত্রুটি রয়েছে, যা একে বাতিল বলে গণ্য করে’।[5] আল্লামা ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) আলোচনা শেষে বলেন,
فَثَبَتَ بِهَذَا كُلِّهِ أَنَّ حَدِيْثَ ابْنِ مَسْعُوْدٍ لَيْسَ بِصَحِيْحٍ وَلاَ بِحَسَنٍ بَلْ هُوَ ضَعِيْفٌ لاَ يَقُوْمُ بِمِثْلِهِ حُجَّةٌ وَأَيْنَ يَقَعُ تَحْسِيْنُ التِّرْمِذِىِّ مَعَ مَا فِيْهِ مِنَ التَّسَاهُلِ وَتَصْحِيْحُ ابْنِ حَزَمٍ مِنْ طَعْنِ أُولَئِكَ الْأَئِمَّةِ.
‘অতএব এ সমস্ত দলীল দ্বারা প্রমাণিত হল যে, ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ ছহীহ নয়, হাসানও নয়। বরং যঈফ। এরূপ হাদীছ দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় না। কোথায় থাকবে ইমাম তিরমিযীর হাসান বলে মন্তব্য করা, যাতে আছে শৈথিল্য? এছাড়া হাদীছের ইমামগণের দোষারোপের মুখে ইবনু হাযামের ছহীহ হওয়ার মন্তব্য কিভাবে গ্রহণযোগ্য হবে?[6]
জ্ঞাতব্য : উক্ত মন্তব্য সমূহের পরও আলবানী এই বর্ণনাকে ছহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে তিনি যারা রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে না, তাদেরকে উক্ত হাদীছের প্রতি আমল করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘রুকূতে যাওয়ার সময় এবং রুকূ থেকে উঠার পর রাফ‘উল ইয়াদায়েন করার পক্ষে রাসূল (ছাঃ)-এর পক্ষ থেকে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। বরং মুহাদ্দিছ ওলামায়ে কেরামের নিকট এটি ‘মুতাওয়াতির’ পর্যায়ের বর্ণনা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এছাড়া প্রত্যেক তাকবীরেই রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা সম্পর্কে বহু হাদীছ রয়েছে। ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর সূত্র ছাড়া রাসূল (ছাঃ) থেকে এই আমল পরিত্যাগ করার কোন ছহীহ প্রমাণ নেই। তবে ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর হাদীছের উপর আমল করা উচিৎ নয়। কারণ এটি না-বোধক। আর হানাফীসহ অন্যান্যদের নিকট এটি বারবার উল্লেখিত হয় যে, হ্যাঁ-বোধক না-বোধকের উপর প্রাধান্য পায়। একটি হ্যাঁ-বোধক থাকার কারণে যদি এমনটি হয়, তাহলে একটি ঐক্যবদ্ধ জামা‘আত থাকলে এই মাসআলার সিদ্ধান্ত কী হতে পারে?
فَيَلْزَمُهُمْ عَمَلاً بِهَذِهِ الْقَاعِدَةِ مَعَ انْتِفَاءِ الْمُعَارِضِ أَنْ يَّأْخُذُوْا بِالرَّفْعِ وَأَنْ لاَ يَتَعَصَّبُوْا لِلْمَذْهَبِ بَعْدَ قِيَامِ الْحُجَّةِ وَلَكِنَّ الْمُؤَسَّفَ أَنَّهُ لَمْ يَأْخُذْ بِهِ مِنْهُمْ إِلاَّ أَفْرَادٌ مِنَ الْمُتَقَدِّمِيْنَ وَالْمُتَأَخِّرِيْنَ حَتَّى صَارَ التَّرْكُ شِعَارًا لَهُمْ.
‘সুতরাং তাদের উচিৎ হবে, উক্ত মূলনীতির আলোকে বিরোধিতাকে প্রত্যাখ্যান করে এই আমলকে অাঁকড়ে ধরা। অর্থাৎ তারা রাফ‘উল ইয়াদায়েন করবে এবং দলীল সাব্যস্ত হওয়ার পর মাযহাবী গোঁড়ামী প্রদর্শন করবে না। কিন্তু দুঃখজনক হল, পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের মধ্যে কতিপয় ব্যক্তি ছাড়া, তাদের কেউ এই আমল গ্রহণ করেনি। ফলে উক্ত আমল বর্জন করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে’।[7]
উল্লেখ্য যে, আলবানীর দোহায় দিয়ে অনেকে উক্ত হাদীছ উল্লেখ করে রাফ‘উল ইয়াদায়েনের বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং বিভ্রান্তি ছড়ান। কিন্তু আলবানীর মূল বক্তব্য পেশ করেন না। এটা এক ধরনের প্রতারণা। অতএব পাঠক সমাজ সাবধান!
[1]. আবুদাঊদ হা/৭৪৮, ১/১০৯ পৃঃ; তিরমিযী হা/২৫৭, ১ম খন্ড, পৃঃ ৫৯; নাসাঈ হা/১০২৬, ১ম খন্ড, পৃঃ ১১৭; বায়হাক্বী ২/৭৮। [2]. হাফেয আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আল-কূফী, আল-মুছান্নাফ ফিল আহাদীছ ওয়াল আছার (বৈরুত : দারুল ফিকর, ১৯৮৯/১৪০৯), হা/২৪৫৮, ১/২৬৭। [3]. নাছিরুদ্দীন আলবানী, তাহক্বীক্ব আবুদাঊদ (রিয়ায : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, তাবি.), হা/৭৪৮, পৃঃ ১৬১। [4]. তিরমিযী হা/২৫৬, ১/৫৯ পৃঃ-এর পর্যালোচনা দ্রঃ। [5]. নায়লুল আওত্বার ৩/১৪ পৃঃ; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৮। [6]. শায়খ আবুল হুসাইন ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী, মির‘আতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল মাফাতীহ (বেনারস : ইদারাতুল বুহূছ আল-ইসলামিয়াহ, ১৯৯৫/১৪১৫), ৩/৮৪ পৃঃ। [7]. الرفع عند الركوع والرفع منه ورد فيه أحاديث كثيرة جدا عنه صلى الله عليه وسلم بل هي متواترة عند العلماء بل ثبت الرفع عنه صلى الله عليه وسلم مع كل تكبيرة في أحاديث كثيرة ولم يصح الترك عنه صلى الله عليه وسلم إلا من طريق ابن مسعود رضي الله عنه فلا ينبغي العمل به لأنه ناف وقد تقرر عند الحنفية وغيرهم أن المثبت مقدم على النافي هذا إذا كان المثبت واحدا فكيف إذا كانوا جماعة كما في هذه المسأل؟ -সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৬৮-এর আলোচনা দ্রঃ।



2]-Rafadain Ki Haqeeqat Aur Ghalat Fahmiyan - Adv. Faiz Syed





No comments:

Post a Comment