Friday 6 November 2015

রাসূল (ছাঃ) সর্বদা বুকের উপর হাত বেঁধে ছালাত আদায় করতেন : ছহীহ হাদীছ


রাসূল (ছাঃ) সর্বদা বুকের উপর হাত
বেঁধে ছালাত আদায় করতেন। উক্ত
মর্মে একাধিক ছহীহ হাদীছ বর্ণিত
হয়েছে। নিম্নে কয়েকটি পেশ করা হল
:
(1 ) ﻋَﻦْ ﺳَﻬْﻞِ ﺑْﻦِ ﺳَﻌْﺪٍ ﻗَﺎﻝَ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻳُﺆْﻣَﺮُﻭْﻥَ ﺃَﻥْ
ﻳَﻀَﻊَ
ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺍﻟْﻴَﺪَ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺫِﺭَﺍﻋِﻪِ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﻗَﺎﻝَ
ﺃَﺑُﻮْ ﺣَﺎﺯِﻡٍ ﻟَﺎ ﺃَﻋْﻠَﻤُﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﻳَﻨْﻤِﻰْ ﺫَﻟِﻚَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ .
( ১) সাহল বিন সা‘দ (রাঃ) বলেন,
লোকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হত,
মুছল্লী যেন ছালাতের মধ্যে তার
ডান
হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখে। আবু
হাযেম বলেন, এটা রাসূল (ছাঃ)-এর
দিকেই ইঙ্গিত করা হত বলে আমি
জানি।
# ছহীহ বুখারী হা/৭৪০, ১/১০২ পৃঃ,
(ইফাবা হা/৭০৪, ২য় খন্ড, পৃঃ ১০২)।
‘আযান’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮৭ ﺑَﺎﺏُ ﻭَﺿْﻊِ
ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ
ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ।
ইমাম বুখারী (রহঃ) অনুচ্ছেদ রচনা
করেছেন, ﺑَﺎﺏُ ﻭَﺿْﻊِ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ
‘ছালাতের মধ্যে ডান হাত বাম
হাতের উপর রাখা অনুচ্ছেদ’।
# ছহীহ বুখারী ১/১০২ পৃঃ।
উল্লেখ্য যে, ইমাম নববী (রহঃ)
নিম্নোক্ত মর্মে অনুচ্ছেদ রচনা
করেছেন- ‘তাকবীরে তাহরীমার পর
ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে
বুকের নীচে নাভীর উপরে রাখা’।
‪#‎ছহীহ‬ মুসলিম ১/১৭৩ পৃঃ, হা/৯২৩-এর
অনুচ্ছেদ-১৫, ‘ছালাত’ অধ্যায়- ﺑﺎَﺏُ ﻭَﺿْﻊِ
ﻳَﺪِﻩِ
ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﺑَﻌْﺪَ ﺗَﻜْﺒِﻴْﺮَﺓِ ﺍﻹِﺣْﺮَﺍﻡِ ﺗَﺤْﺖَ ﺻَﺪْﺭِﻩِ
ﻓَﻮْﻕَ ﺳُﺮَّﺗِﻪِ ﻭَﻭَﺿْﻌِﻬِﻤَﺎ ﻓِﻰ ﺍﻟﺴُّﺠُﻮْﺩِ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻷَﺭْﺽِ ﺣَﺬْﻭَ
ﻣَﻨْﻜِﺒَﻴْﻪِ। [
অথচ হাদীছে ‘বুকের নীচে নাভীর
উপরে’ কথাটুকু নেই। মূলতঃ পুরো ডান
হাতের উপর বাম হাত রাখলে বুকের
উপরই চলে যায়। যেমন উক্ত হাদীছ
উল্লেখ করে শায়খ আলবানী (রহঃ)
বলেন,
ﻭَﻣِﺜْﻠُﻪُ ﺣَﺪِﻳْﺚُ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮٍ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﻀَﻊُ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨﻰَ ﻋَﻠَﻰ
ﻇَﻬْﺮِ
ﻛَﻔِّﻪِ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻭَﺍﻟﺮُّﺳْﻎِ ﻭَ ﺍﻟﺴَّﺎﻋِﺪِ ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺃَﺑُﻮْﺩَﺍﺅُﺩَ ﻭَ
ﺍﻟﻨَّﺴَﺎﺋِﻰُّ
ﺑِﺴَﻨَﺪِ ﺻَﺤِﻴْﺢٍ ﻭَ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﻜَﻴْﻔِﻴّﺔُ ﻧَﺴْﺘَﻠْﺰِﻡُ ﺃَﻥْ ﻳَّﻜُﻮْﻥَ ﺍﻟْﻮَﺿْﻊُ
ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﻧْﺖَ ﺗَﺄَﻣَّﻠْﺖَ ﺫَﻟِﻚَ ﻭَﻋَﻤِﻠْﺖَ ﺑِﻬَﺎ ﻓَﺠَﺮِّﺏْ ﺇِﻥْ
ﺷِﺌْﺖَ ﻭَ ﻣِﻤَّﺎ ﻳَﻨْﺒَﻐِﻰْ ﺃَﻥْ ﻳَّﻌْﻠَﻢَ ﺃَﻧَّﻪُ ﻟَﻢْ ﻳَﺼِﺢُّ ﻋَﻨْﻪُ ﺍﻟْﻮَﺿْﻊُ
ﻋَﻠَﻰ ﻏَﻴْﺮِ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ ﻛَﺤَﺪِﻳْﺚِ ﻭَ ﺍﻟﺴُّﻨَّﺔُ ﻭَﺿْﻊُ ﺍﻟْﻜَﻒِّ ﻓِﻰ
ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ
ﺗَﺤْﺖَ ﺍﻟﺴُّﺮَّﺓِ .
‘অনুরূপ ওয়ায়েল বিন হুজর (রাঃ)
থেকে
বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল (ছাঃ) ডান
হাত বাম হাতের পাতা, হাত ও বাহুর
উপর রাখতেন। যা ছহীহ সনদে আবুদাঊদ

নাসাঈ বর্ণনা করেছেন। এই পদ্ধতিই
আমাদের জন্য অপরিহার্য করে যে
হাত
রাখতে হবে বুকের উপর। যদি আপনি
এটা
বুঝেন এবং এর প্রতি আমল করেন। অতএব
আপনি চাইলে যাচাই করতে পারেন।
আর এ সম্পর্কে যা জানা উচিৎ তা হল,
বুকের উপর ছাড়া অন্যত্র হাত বাঁধার
বিষয়টি রাসূল (ছাঃ) থেকে ছহীহ
হিসাবে সাব্যস্ত হয়নি। যেমন একটি
হাদীছ, ‘সুন্নাত হল ছালাতের মধ্যে
নাভীর নীচে হাতের পাতা
রাখা’ (এই বর্ণনা সঠিক নয়)।
# মিশকাত হা/৭৯৮ -এর টীকা দ্রঃ,
১/২৪৯
পৃঃ
বিশেষ জ্ঞাতব্য : সুধী পাঠক! ছহীহ
বুখারীতে বর্ণিত উক্ত হাদীছের
অনুবাদ করতে গিয়ে ইসলামিক
ফাউন্ডেশন অনুবাদে ‘ডান হাত বাম
হাতের কবজির উপরে’ মর্মে অনুবাদ
করা
হয়েছে।
# বুখারী শরীফ (ঢাকা : ইসলামিক
ফাউন্ডেশন, নবম সংস্করণ, জানুয়ারী
২০১২), ২য় খন্ড, পৃঃ ১০২, হা/৭০৪।
আধুনিক প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত
বুখারীতেও একই অনুবাদ করা হয়েছে।
# সহীহ আল-বুখারী (ঢাকা : আধুনিক
প্রকাশনী, বাংলা বাজার, জুন ১৯৯৭),
১ম খন্ড, পৃঃ ৩২২, হা/৬৯৬।
অথচ ইসলমিক ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একই
খন্ডের মধ্যে অন্যত্র এর অর্থ করা
হয়েছে
‘বাহু’।
# বুখারী শরীফ ২য় খন্ড, পৃঃ ৯, হা/৫০৭;
৭ম
খন্ড, পৃঃ ২৩১, হা/৪০৭৬; ছহীহ বুখারী
হা/৫৩২, ১/৭৬ পৃঃ ও হা/৪৪২১।
কিন্তু ‘বাহু’ আর ‘কব্জি’ কি এক বস্ত্ত?
সব
হাদীছ গ্রন্থে ‘যিরা’ অর্থ ‘বাহু’ করা
হয়েছে। যেমন রাসূল (ছাঃ) ওযূ করার
সময় মুখমন্ডল ধৌত করার পর বাহুর উপর
পানি ঢালতেন।
#ছহীহ মুসলিম হা/১৫৯৭, ‘মসজিদ’
অধ্যায়,
অনুচ্ছেদ-৫৬, উল্লেখ্য যে, ভারতীয়
ছাপায় হাদীছটি নেই, ১/২৪০-২৪১;
মিশকাত হা/৩৯২২; বঙ্গানুবাদ মিশকাত
হা/৩৭৪৬, ৮/২২ পৃঃ; আবাদাঊদ হা/১৩৫,
১/১৮ পৃঃ; মুসনাদে আহমাদ হা/১০০৮ - ﺛُﻢَّ
ﻗَﺎﻝَ ﻟَﻪُ ﺻُﺐَّ ﻓَﺼَﺐَّ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻐَﺴَﻞَ ﻛَﻔَّﻪُ ﺛَﻼَﺛﺎً ﻭَﺃَﺩْﺧَﻞَ ﻛَﻔَّﻪُ
ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻓَﻤَﻀْﻤَﺾَ ﻭَﺍﺳْﺘَﻨْﺸَﻖَ ﺛَﻼَﺛﺎً ﺛُﻢَّ ﺃَﺩْﺧَﻞَ ﻛَﻔَّﻴْﻪِ
ﻓَﻐَﺴَﻞَ
ﻭَﺟْﻬَﻪُ ﺛَﻼَﺛﺎً ﺛُﻢَّ ﺃَﺩْﺧَﻞَ ﻛَﻔَّﻪُ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻓَﻐَﺴَﻞَ ﺫِﺭَﺍﻋَﻪُ ﺍﻷَﻳْﻤَﻦَ
ﺛَﻼَﺛﺎً ﺛُﻢَّ ﻏَﺴَﻞَ ﺫِﺭَﺍﻋَﻪُ ﺍﻷَﻳْﺴَﺮَ ﺛَﻼَﺛﺎً ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻫَﺬَﺍ ﻭُﺿُﻮْﺀُ
ﺭَﺳُﻮْﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ।
এছাড়া আরবী কোন অভিধানে
‘যিরা’
শব্দের অর্থ ‘কব্জি’ করা হয়নি। অতএব
কোন সন্দেহ নেই যে, নাভীর নীচে
হাত বাঁধার ত্রুটিপূর্ণ আমলকে প্রমাণ
করার জন্যই উক্ত কারচুপি করা হয়েছে।
অথচ অন্যত্র ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে
যে, রাসূল (ছাঃ) তাঁর ডান হাতটি
বাম হাতের পাতা, কব্জি ও বাহুর উপর
রাখতেন, যা পূর্বে আলবানীর
আলোচনায় পেশ করা হয়েছে।
(2) ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ ﻟَﺄَﻧْﻈُﺮَﻥَّ ﺇِﻟَﻰ ﺻَﻼَﺓِ ﺭَﺳُﻮْﻝِ
ﺍﻟﻠﻪِ
ﻛَﻴْﻒَ ﻳُﺼَﻠِّﻰ ﻓَﻨَﻈَﺮْﺕُ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻓَﻘَﺎﻡَ ﻓَﻜَﺒَّﺮَ ﻭَﺭَﻓَﻊَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﺣَﺎﺫَﺗَﺎ ﺑِﺄُﺫُﻧَﻴْﻪِ ﺛُﻢَّ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﻛَﻔِّﻪِ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ
ﻭَﺍﻟﺮُّﺳْﻎِ ﻭَﺍﻟﺴَّﺎﻋِﺪِ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺃَﻥْ ﻳَﺮْﻛَﻊَ ﺭَﻓَﻊَ ﻳَﺪَﻳْﻪِ ﻣِﺜْﻠَﻬَﺎ ...
(২) ওয়ায়েল ইবনু হুজর (রাঃ) বলেন,
আমি
অবশ্যই রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাতের
দিকে লক্ষ্য করতাম, তিনি কিভাবে
ছালাত আদায় করেন। আমি তাঁর
দিকে
লক্ষ্য করতাম যে, তিনি ছালাতে
দাঁড়াতেন অতঃপর তাকবীর দিতেন
এবং কান বরাবর দুই হাত উত্তোলন
করতেন। তারপর তাঁর ডান হাত বাম
হাতের পাতা, কব্জি ও বাহুর উপর
রাখতেন। অতঃপর যখন তিনি রুকূ করার
ইচ্ছা করতেন তখন অনুরূপ দুই হাত উত্তোলন
করতেন...।
# নাসাঈ হা/৮৮৯, ১/১০২ পৃঃ; আবুদাঊদ
হা/৭২৭, পৃঃ ১০৫; আহমাদ হা/১৮৮৯০;
ছহীহ ইবনে খুযায়মাহ হা/৪৮০; ইবনু
হিববান হা/১৮৬০, সনদ ছহীহ।
উল্লেখ্য যে, ‘মাযহাব বিরোধীদের
স্বরূপ সন্ধানে’ বইটিতে উক্ত
হাদীছটির
পূর্ণ অর্থ করা হয়নি; বরং অর্থ গোপন
করা
হয়েছে।
# ঐ, পৃঃ ২৯০।
তাছাড়া ভারতীয় ছাপা আবুদাঊদে
অর্থ পরিবর্তন করার উদ্দেশ্যে দুইটি
শব্দে ভুল হরকত দেয়া হয়েছে।
# আবুদাঊদ , পৃঃ ১০৫।
সুধী পাঠক! উক্ত হাদীছ প্রমাণ করে
যে,
রাসূল (ছাঃ) ডান হাতটি পুরো বাম
হাতের উপর রাখতেন। এমতাবস্থায়
হাত
নাভীর নীচে যাওয়ার প্রশ্নই আসে
না।
এইভাবে হাত রেখে নাভীর নীচে
স্থাপন করতে চাইলে মাজা বাঁকা
করে নাভীর নীচে হাত নিয়ে
যেতে
হবে, যা উচিৎ নয়। আমরা এবার দেখব
রাসূল (ছাঃ) তাঁর দুই হাত কোথায়
স্থাপন করতেন।
(3) ﻋَﻦْ ﻃَﺎﻭُﺱٍ ﻗَﺎﻝَ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﻳَﻀَﻊُ ﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ
ﻋَﻠَﻰ ﻳَﺪِﻩِ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﺛُﻢَّ ﻳَﺸُﺪُّ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺻَﺪْﺭِﻩِ ﻭَﻫُﻮَ ﻓِﻲ
ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ.
(৩) ত্বাঊস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)
ছালাতের মধ্যে তাঁর ডান হাত বাম
হাতের উপর রাখতেন এবং উভয় হাত
বুকের উপর শক্ত করে ধরে রাখতেন।
# আবুদাঊদ হা/৭৫৯, সনদ ছহীহ।
যরূরী জ্ঞাতব্য : ভারতীয় ছাপা
আবুদাঊদে হাত বাঁধা সংক্রান্ত
একটি
হাদীছও উল্লেখিত হয়নি। এর কারণ
সম্পূর্ণ অজানা। তবে ইমাম আবুদাঊদ
নাভীর নীচে হাত বাঁধা সম্পর্কে
বর্ণিত বর্ণনাগুলোকে যঈফ বলেছেন।
আর
বুকের উপর হাত বাঁধার হাদীছটিকে
ছহীহ হিসাবে পেশ করতে চেয়েছেন।
কারণ উক্ত হাদীছ সম্পর্কে কোন মন্তব্য
করেননি। সে জন্যই হয়ত কোন হাদীছই
উল্লেখ করা হয়নি।
‪#‎আবুদাঊদ‬, পৃঃ ১২২।
উল্লেখ্য যে, উক্ত হাদীছকে অনেকে
নিজস্ব গোঁড়ামী ও ব্যক্তিত্বের বলে
যঈফ বলে প্রত্যাখ্যান করতে চান।
মুহাদ্দিছগণের মন্তব্যের তোয়াক্কা
করেন না। নিজেকে শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ
বলে পরিচয় দিতে চান। অথচ আলবানী
উক্ত হাদীছ উল্লেখ করে বলেন, ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺃَﺑُﻮْ
ﺩَﺍﻭُﺩَ ﺑِﺈِﺳْﻨَﺎﺩٍ ﺻَﺤِﻴْﺢٍ ﻋَﻨْﻪُ ‘আবুদাঊদ ত্বাঊস
থেকে এই হাদীছকে ছহীহ সনদে
বর্ণনা
করেছেন’। অতঃপর তিনি অন্যের
দাবী
খন্ডন করে বলেন,
ﻭَﻫُﻮَ ﻭَﺇِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﻣُﺮْﺳَﻼً ﻓَﻬُﻮَ ﺣُﺠَّﺔٌ ﻋِﻨْﺪَ ﺟَﻤِﻴْﻊِ ﺍﻟْﻌُﻠَﻤَﺎﺀِ
ﻋَﻠَﻰ
ﺍﺧْﺘِﻼَﻑِ ﻣَﺬَﺍﻫِﺒِﻬِﻢْ ﻓِﻰ ﺍﻟْﻤُﺮْﺳَﻞِ ﻟِﺄَﻧَّﻪُ ﺻَﺤِﻴْﺢُ ﺍﻟﺴَّﻨَﺪِ ﺇِﻟَﻰ
ﺍﻟْﻤُﺮْﺳَﻞِ ﻭَﻗَﺪْ ﺟﺎَﺀَ ﻣَﻮْﺻُﻮْﻻً ﻣِﻦْ ﻃُﺮُﻕٍ ﻛَﻤَﺎ ﺃَﺷَﺮْﻧَﺎ ﺇِﻟَﻴْﻪِ
ﺁﻧِﻔًﺎ
ﻓَﻜﺎَﻥَ ﺣُﺠَّﺔً ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟْﺠَﻤِﻴْﻊِ .
‘ত্বাউস যদিও মুরসাল রাবী তবুও তিনি
সকল মুহাদ্দিছের নিকট দলীলযোগ্য।
কারণ তিনি মুরসাল হলেও সনদের জন্য
ছহীহ। তাছাড়াও এই হাদীছ মারফূ‘
হিসাবে অনেকগুলো সূত্রে বর্ণিত
হয়েছে। যেমনটি আমি এই মাত্রই
উল্লেখ করলাম। অতএব তা সকল
মুহাদ্দিছের নিকট দলীলযোগ্য।
# ইরওয়াউল গালীল ২/৭১ পৃঃ।
এছাড়াও এই হাদীছকে আলবানী ছহীহ
আবুদাঊদে উল্লেখ করেছেন।
#ছহীহ আবুদাঊদ হা/৭৫৯।
(৪) ﻋَﻦْ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ ﺻَﻠَّﻴْﺖُ ﻣَﻊَ
ﺍَﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻓَﻮَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﺍَﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﻳَﺪِﻩِ ﺍَﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻋَﻠَﻰ
ﺻَﺪْﺭِﻩِ .
(৪) ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) বলেন, আমি
রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায়
করেছি। তিনি তাঁর ডান হাত বাম
হাতের উপর স্থাপন করে বুকের উপর
রাখতেন।
#ছহীহ ইবনে খুযায়মাহ হা/৪৭৯, ১/২৪৩
পৃঃ; বলূগুল মারাম হা/২৭৫।
উক্ত হাদীছের টীকায় শায়খ
আলবানী
(রহঃ) বলেন,
ﺇِﺳْﻨَﺎﺩُﻩُ ﺿَﻌِﻴْﻒٌ ﻟِﺄَﻥَّ ﻣُﺆَﻣَّﻼً ﻭَﻫُﻮَ ﺍﺑْﻦُ ﺇِﺳْﻤَﺎﻋِﻴْﻞَ ﺳَﻴِّﺊُ
ﺍﻟْﺤِﻔْﻆِ ﻟَﻜِﻦَّ ﺍﻟْﺤَﺪِﻳْﺚَ ﺻَﺤِﻴْﺢٌ ﺟَﺎﺀَ ﻣِﻦْ ﻃُﺮُﻕٍ ﺃُﺧْﺮَﻯ
ﺑِﻤَﻌْﻨَﺎﻩُ
ﻭَﻓِﻰ ﺍﻟْﻮَﺿْﻊِ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ ﺃَﺣَﺎﺩِﻳْﺚُ ﺗَﺸْﻬَﺪُ ﻟَﻪُ .
‘এর সনদ যঈফ। কারণ তা ত্রুটিপূর্ণ। আর
তিনি হলেন ইবনু ইসমাঈ। তার স্মৃতি
শক্তি দুর্বল। তবে হাদীছ ছহীহ। এই
হাদীছ অন্য সূত্রে একই অর্থে বর্ণিত
হয়েছে। বুকের উপর হাত রাখার আরো
যে হাদীছগুলো আছে, সেগুলো এর
জন্য
সাক্ষ্য প্রদান করে’। ইমাম শাওকানী
উক্ত হাদীছ সম্পর্কে বলেন, ﻭَ ﻻَﺷَﻲْﺀَ ﻓِﻰ
ﺍْﻟﺒَﺎﺏِ ﺃَﺻَﺢُّ ﻣِﻦْ ﺣَﺪِﻳْﺚِ ﻭَﺍﺋِﻞِ ﺑْﻦِ ﺣُﺠْﺮٍ ﺍﻟْﻤَﺬْﻛُﻮْﺭِ ﻓِﻰْ
ﺻَﺤِﻴْﺢِ ﺍﺑْﻦِ ﺧُﺰَﻳْﻤَﺔَ ‘হাত বাঁধা সম্পর্কে
ছহীহ
ইবনু খুযায়মাতে ওয়ায়েল বিন হুজর
(রাঃ) বর্ণিত হাদীছের চেয়ে বিশুদ্ধ
কোন হাদীছ আর নেই’।
# নায়লুল আওত্বার ৩/২৫ পৃঃ।
তাছাড়া একই রাবী থেকে অন্যত্র
ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, যা পূর্বে
উল্লেখ করা হয়েছে।
(5) ﻋَﻦْ ﻗَﺒِﻴْﺼَﺔَ ﺑْﻦِ ﻫُﻠْﺐٍ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴْﻪِ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰَّ
ﻳَﻨْﺼَﺮِﻑُ ﻋَﻦْ ﻳَﻤِﻴْﻨِﻪِ ﻭَﻋَﻦْ ﻳَﺴَﺎﺭِﻩِ ﻭَﺭَﺃَﻳْﺘُﻪُ ﻗَﺎﻝَ ﻳَﻀَﻊُ ﻫَﺬِﻩِ
ﻋَﻠَﻰ ﺻَﺪْﺭِﻩِ ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺤْﻴَﻰ ﺍﻟْﻴُﻤْﻨَﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻴُﺴْﺮَﻯ ﻓَﻮْﻕَ
ﺍﻟْﻤِﻔْﺼَﻞِ .
(৫) ক্বাবীছাহ বিন হুলব তার পিতা
থেকে বর্ণনা করেন, তার পিতা
বলেছেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে ডান
ও বামে ফিরতে দেখেছি এবং
হাতকে বুকের উপর রাখার কথা বলতে
শুনেছি। অতঃপর ইয়াহইয়া ডান হাত
বাম হাতের কব্জির উপর রাখেন।
# আহমাদ হা/২২০১৭; সনদ হাসান।
উল্লেখ্য যে, কেউ কেউ উক্ত
হাদীছকে
ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন। কিন্তু তাদের
দাবী
সঠিক নয়। কারণ রাবী ক্বাবীছার
ব্যাপারে কথা থাকলেও এর পক্ষে
অনেক সাক্ষী রয়েছে। ফলে তা
হাসান।
# আলবানী , আহকামুল জানাইয, পৃঃ
১১৮ -
ﻓﻤﺜﻠﻪ ﺣﺪﻳﺜﻪ ﺣﺴﻦ ﻓﻲ ﺍﻟﺸﻮﺍﻫﺪ ﻭﻟﺬﻟﻚ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ
ﺑﻌﺪ ﺃﻥ ﺧﺮﺝ ﻟﻪ ﻣﻦ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺃﺧﺬ ﺍﻟﺸﻤﺎﻝ ﺑﺎﻟﻴﻤﻴﻦ
ﺣﺪﻳﺚ ﺣﺴﻦ ﻓﻬﺬﻩ ﺛﻼﺛﺔ ﺃﺣﺎﺩﻳﺚ ﻓﻲ ﺃﻥ ﺍﻟﺴﻨﺔ
ﺍﻟﻮﺿﻊ
ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺼﺪﺭ ﻭﻻ ﻳﺸﻚ ﻣﻦ ﻭﻗﻒ ﻋﻠﻰ ﻣﺠﻤﻮﻋﻬﺎ ﻓﻲ ﺃﻧﻬﺎ
ﺻﺎﻟﺤﺔ ﻟﻼﺳﺘﺪﻻﻝ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ .।
(6) ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ
ﺍﻟﻠﻪ
ﺇِﻧَّﺎ ﻣَﻌْﺸَﺮَ ﺍﻷَﻧْﺒِﻴَﺎﺀِ ﺃُﻣِﺮْﻧَﺎ ﺃَﻥْ ﻧُﻌَﺠِّﻞَ ﺇِﻓْﻄَﺎﺭَﻧَﺎ ﻭَﺃَﻥْ ﻧُﺆَﺧِّﺮَ
ﺳَﺤُﻮْﺭَﻧَﺎ ﻭَﻧَﻀَﻊَ ﺃَﻳْﻤَﺎﻧَﻨَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺷَﻤَﺎﺋِﻠِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ .
(৬) ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূল
(ছাঃ) বলেছেন, নিশ্চয় আমরা
নবীদের
দল। আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া
হয়েছে- আমরা যেন দ্রুত ইফতার করি
এবং দেরিতে সাহারী করি। আর
ছালাতের মধ্যে আমাদের ডান হাত
বাম হাতের উপর যেন রাখি।
# ইবনু হিববান হা/১৭৬৭; সনদ ছহীহ,
ছিফাতু ছালাতিন নাবী, পৃঃ ৮৭; ইবনু
ক্বাইয়িম, তাহযীব সুনানে আবী দাঊদ
১/১৩০ - ﺣَﺪِﻳﺚ ﺃَﺑِﻲ ﺣُﻤَﻴْﺪٍ ﻫَﺬَﺍ ﺣَﺪِﻳﺚ ﺻَﺤِﻴﺢ
ﻣُﺘَﻠَﻘًّﻰ
ﺑِﺎﻟْﻘَﺒُﻮﻝِ ﻟَﺎ ﻋِﻠَّﺔ ﻟَﻪُ ﻭَﻗَﺪْ ﺃَﻋَﻠَّﻪُ ﻗَﻮْﻡ ﺑِﻤَﺎ ﺑَﺮَّﺃَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪ

No comments:

Post a Comment