Monday 16 November 2015

নামাজে বুকের উপর হাত বাধা হল সুন্নাহ : নাভির নীচে হাত বাঁধা যঈফ , দলীল গ্রহণযোগ্য নয়




Ehsanul Karim published a note.

নামাজে বুকের উপর হাত বাধা হল সুন্নাহ

নামাজে বুকের উপর হাত বাধা হল সুন্নাহ।নাভীর নিচে হাত বাধার হাদীস গুলো সব জইফ।বুকের উপর হাত বাধা হল সুন্নাত তা হাদীস থেকে প্রমান করছি:বুকের উপর হাত বাধা হাদীস বর্নিত হয়েছে যথাক্রমে ওয়াইল ইবনে হুজর,হালব আত-তায়ী এবং তাউস থেকে।কিছু মানুষ হয়তো প্রশ্ন তুলতে পারে ওয়াইল ইবনে হুজরের বুকের উপর হাত বাধা নিয়ে যা শুধু মুয়াম্মল থেকে বর্নিত হয়েছে এবং হালব আত-তায়ী যা শুধু সুফিয়ান থেকে বর্নিত হয়েছে।কিন্তুু উভয় হাদীস একে অপরের সহায়ক হওয়ায় হাসান হয়ে গেছে এবং মুরসাল হাদীস ততক্ষণ পযন্ত বাতিল হয়না যদি এর শাহেদ থাকে।কিন্তুু আমরা দেখি এই ক্ষেত্রে যথেষ্ট শাহিদ আছে যা এই হাদীস গুলো সহিহ হয়ে যায়।এবং কি মুহাদ্দিসরা হালবের হাদীসটা গ্রহণ করেছে।শেইখ আবদুর রাহমান মুবারকপুরী(রাহ) এই হাদীসের সনদ সহিহ হওয়ার বিশুদ্ধত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তার বিক্ষ্যত বই "আবকার উল-মুনান ফি তানকীদ আতাহার আস - সুন্নাহ "।আরো প্রমাণ দেখুন বুকে হাত বাধার:1)সাহিল বিন সাদ বলেন,আমরা নির্দেশিত হয়েছি নামাজে ডান হাত বাম হাতের জেরার উপর রাখার(সহিহ বুখারী 740 নং হাদীস)।যেরা অর্থ কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ হাত’ (গরীব উল-হাদীস 1/277,লিসান উল-আরব 8/93,তাজ উল-উরস 1/5217,কিতাবুল আইন 2/96,আল-মু'জাম আল-ওয়াসিয়াত 1/311,তাহদীব আল-লুগাহ 2/189,কিতাব আল-কুলিয়াত 1/730) এই হাদীসটা মারফু বর্ননাকারী হলেন আবু হাজিম।এই কারণে হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানি তার ফাতউল বারীর 2/124 পেইজে এবং আল্লামা আইনী তার উমদাতুল কারীর 5/278 পেইজে বলেন,এই বর্ননা মারফু এবং এই হাদীস হল প্রমাণ বুকে হাত বাধার কারণ যখন বাম হাতের বাহু এবং কনুইর উপর ডান হাত রাখা হয় তখন হাত বুকের নিচে আসার সমর্থ হবেনা।প্রিয় পাঠক,এই পদ্ধতি আপনি পরীক্ষা করেন আল্লাহর ইচ্ছায় হাত বুকে এসে যাবে।
2)ওয়াইল বিন হুজর থেকে বর্নিত,রাসুল(সা) বাম হাতের তালু,কব্জি এবং বাহুর উপর ডান হাত রাখতেন(সুনান আবু দাউদ 727 নং হাদীস,সুনান আল সুগরাহ লিল নাসাঈ 889,মুসনাদ আহমদ 22017,ইবনে হিব্বান 1860,ইবন খুজায়মাহ 480 নং হাদীস,সনদ সহিহ) এই হাদীস অনুসারে যদি ডান হাত দিয়ে পুরো অংশ ধরা হয় তাহলে হাত এমনিতে বুকের উপর উঠে যাবে।যুগ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম নাসিরউদ্দিন আলবানী(রাহ:)বলেন,এই হাদীসের বর্ননাক্রিত অবস্থার ফলে হাত বুকে আসে(হিদায়াতুর
রুওয়াত 1/367)।এই হাদীসের সাথে ওয়াইলের অন্য হাদীস যেখানে বলা আছে হাত বুকে বাধার"এই থেকে পরিস্কার হয় যে হাত বুকে বাধতে হবে।
3)আলী(রাদি:)থেকে বর্নিত,রাসুল(সা) নাবীর উপরে(বুকের কাছে) হাত বাধতেন(আবু দাউদ 757)
4)তাউস থেকে বর্নিত,রাসুল(সা) বুকের উপর হাত বাধতেন(আবু দাউদ 759 নং হাদীস সনদ সহিহ)
5)ওয়াইল ইবন হুজর বর্ননা করেন অন্য সনদে,রাসুল(সা) বুকের উপর হাত বাধতেন(সুনান আল বায়হাকী 2166 সনদ জইফ)
6)ওয়াইল বিন হুজর থেকে আবার বর্নিত অন্য সনদে যা সুফীয়ান বর্ননা করেছে আসিম বিন কুলায়ব(সিমাকের পরিবর্তে)যে রাসুল(সা) হাত বুকে রাখতেন(বায়হাকী 2384)
7)ইবনে আব্বাস(রাদি)থেকে বর্নিত যে রাসুল(সা) যখন আল্লাহর আয়াত " "Fasallili Rabbika Wanhar"এর ব্যাখ্যায় বলেন,এর মানে হল বাম হাতের উপর ডান হাত বুকের উপর রাখা(সুনান বায়হাকী 2168,2387 সনদ জইফ)
8)একই রেয়াআতে আলী(রাদি:)থেকে ও হাদীসটা বর্নিত হয়েছে(সুনান বায়হাকী 2167 সনদ জইফ)
9)আনাস(রাদি:)থেকে ও একই রেয়াআতে বর্নিত হয়েছে(সুনান বায়হাকী 2386 সনদ জইফ)
10)ওয়াইল বিন হুজর থেকে বর্নিত অন্য হাদীসে বলা হয়েছে রাসুল(সা) বুকে হাত বাধত(মুজাম আল কাবীর 17969 সনদ জইফ)
11)ওয়াইল ইবন হুজর থেকে বর্নিত তিনি বলেন,আমি রাসুল(সা)কে দেখলাম,তিনি নামাজে প্রবেশ করলেন বললেন আল্লাহু আকবর,তারপর ডান বাহু তার বাহুর উপর রাখলেন(মুজাম আল কাবীরা 17901 হাদীস সহিহ)পুরো বাহু অন্য বাহুতে রাখলে হাত বুকের নিচে নামবেনা।
12)ওয়াইল থেকে বর্নিত রাসুল(সা) বুকের কাছে হাত বাধতেন(মুসনাদ আল বাযযার 4488 নং হাদীস)
13)আয়েশা(রাদি:) বর্নিত,রাসুল(সা)এর তিনটা সুন্নাত হল:1)ইফতারের জন্য দ্রুত করা 2)দেরিতে সেহেরি খাওয়া 3) বাম হাতের উপর ডান হাত রেখে বুকে হাত বাধা(আল আওসাত 1239)
এখন,উপরে বর্নিত কিছু হাদীস সনদের কারণে দুর্বল মনে হলেও সে গুলো হাসান লিগাহরিহ হয়না "জইফ+জইফ =হাসান।আল সিন্দী আল হানাফী তার হাশিয়াত ইবনে মাজাহাতে বলেন,এটা প্রমাণিত যে হাত বুকে বাধতে হবে অন্য কোথাও নয় এবং আলেমরা এই বিষয়ে একমত যে নাভীর নিচে হাত বাধা হাদীস জইফ।বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফকিহ ইমাম ইসহাক বিন রাহয়াই(রাহ) সিনায় হাত বাধতেন অথবা সিনার একটু নিচে হাত বাধতেন(মা'সাইল পেইজ 222) অথচ এক মিথ্যাবাদী বলল ইসহাক বিন রাহয়াই(রাহ) নাকি নাভীর নিচের হাদীস কে শক্তিশালী বলেছে!! আমি বলি তাহলে ইসহাক বিন রাহুয়াই(রাহ)কেন সিনায় হাত বেঁধেছেন?কাদী লিয়াদ আল মালেকী বলেন,হাত বুকে বাধতে হবে(আল ইলাম পেইজ 15)। ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) বলেন,

صَلَّيْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى عَلَى صَدْرِهِ، رواه ابْنُ خُزَيْمَةَ وَصَحَّحَهُ ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করলাম। এমতাবস্থায় দেখলাম যে, তিনি বাম হাতের উপরে ডান হাত স্বীয় বুকের উপর রাখলেন’। ( ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৪৭৯; আবুদাঊদ হা/৭৫৫, ইবনু মাস‘ঊদ হ’তে; ঐ, হা/৭৫৯, ত্বাঊস বিন কায়সান হ’তে; ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, ‘ছালাতে বাম হাতের উপর ডান হাত রাখা’ অনুচ্ছেদ-১২০।)

উপরোক্ত ছহীহ হাদীছ সমূহে ‘বুকের উপরে হাত বাঁধা’ সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য এসেছে। ইমাম শাওকানী বলেন, وَلاَ شَيْءَ فِي الْبَابِ أَصَحُّ مِنْ حَدِيْثِ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ الْمَذْكُوْرِ فِيْ صَحِيْحِ ابْنِ خُزَيْمَةَ- ‘হাত বাঁধা বিষয়ে ছহীহ ইবনু খুযায়মাতে ওয়ায়েল বিন হুজ্র (রাঃ) বর্ণিত হাদীছের চাইতে বিশুদ্ধতম কোন হাদীছ আর নেই’( নায়লুল আওত্বার ৩/২৫) উল্লেখ্য যে, বাম হাতের উপরে ডান হাত রাখা সম্পর্কে ১৮ জন ছাহাবী ও ২ জন তাবেঈ থেকে মোট ২০টি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। ইবনু আব্দিল বার্র বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) থেকে এর বিপরীত কিছুই বর্ণিত হয়নি এবং এটাই জমহূর ছাহাবা ও তাবেঈনের অনুসৃত পদ্ধতি( নায়লুল আওত্বার ৩/২২; ফিক্বহুস সুন্নাহ (কায়রো : ১৪১২/১৯৯২) ১/১০৯) নাভির নীচে হাত বাঁধা’ সম্পর্কে আহমাদ, আবুদাঊদ, মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ প্রভৃতি হাদীছ গ্রন্থে চারজন ছাহাবী ও দু’জন তাবেঈ থেকে যে চারটি হাদীছ ও দু’টি ‘আছার’ বর্ণিত হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে মুহাদ্দেছীনের বক্তব্য হ’ল-لاَ يَصْلُحُ وَاحِدٌ مِنْهَا لِلْاِسْتِدْلاَلِ ‘(যঈফ হওয়ার কারণে) এগুলির একটিও দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়’( মির‘আতুল মাফাতীহ দিল্লী: ৪র্থ সংস্করণ, ১৪১৫/১৯৯৫) ৩/৬৩; তুহফাতুল আহওয়াযী ২/৮৯ )

প্রকাশ থাকে যে, ছালাতে দাঁড়িয়ে মেয়েদের জন্য বুকে হাত ও পুরুষের জন্য নাভীর নীচে হাত বাঁধার যে রেওয়াজ চালু আছে, হাদীছে বা আছারে এর কোন প্রমাণ নেই( মির‘আত লাহোর ১ম সংস্করণ, ১৩৮০/১৯৬১) ১/৫৫৮; ঐ, ৩/৬৩; তুহফা ২/৮৩ ) এটাই স্বতঃসিদ্ধ যে, ছালাতের মধ্যকার ফরয ও সুন্নাত সমূহ মুসলিম নারী ও পুরুষ সকলে একই নিয়মে আদায় করবে( মির‘আত ৩/৫৯ পৃঃ; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৯; নায়লুল আওত্বার ৩/১৯) বুকে হাত বাঁধার তাৎপর্য : ত্বীবী বলেন, ‘হৃৎপিন্ডের উপরে বুকে হাত বাঁধার মধ্যে হুঁশিয়ারী রয়েছে এ বিষয়ে যে, বান্দা তার মহা পরাক্রান্ত মালিকের সম্মুখে দাঁড়িয়েছে হাতের উপর হাত রেখে মাথা নিচু করে পূর্ণ আদব ও আনুগত্য সহকারে, যা কোনভাবেই ক্ষুণ্ণ করা যাবে না’( মির‘আত ৩/৫৯ পৃঃ, হা/৮০৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)।
---------------------------------------------------
extract from above:-
 --বুকে হাত বাধার:সহিহ হাদীস--
1)সাহিল বিন সাদ বলেন,আমরা নির্দেশিত হয়েছি নামাজে ডান হাত বাম হাতের জেরার উপর রাখার(সহিহ বুখারী 740 নং হাদীস)।যেরা অর্থ কনুই থেকে মধ্যমা আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত দীর্ঘ হাত।[এই পদ্ধতি আপনি পরীক্ষা করেন আল্লাহর ইচ্ছায় হাত বুকে এসে যাবে।]
2]-- 2)ওয়াইল বিন হুজর থেকে বর্নিত,রাসুল(সা) বাম হাতের তালু,কব্জি এবং বাহুর উপর ডান হাত রাখতেন(সুনান আবু দাউদ 727 নং হাদীস,সুনান আল সুগরাহ লিল নাসাঈ 889,মুসনাদ আহমদ 22017,ইবনে হিব্বান 1860,ইবন খুজায়মাহ 480 নং হাদীস,সনদ সহিহ) এই হাদীস অনুসারে যদি ডান হাত দিয়ে পুরো অংশ ধরা হয় তাহলে হাত এমনিতে বুকের উপর উঠে যাবে।যুগ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইমাম নাসিরউদ্দিন আলবানী(রাহ:)বলেন,এই হাদীসের বর্ননাক্রিত অবস্থার ফলে হাত বুকে আসে।
3]-- আবু দাউদ 757
4]-- আবু দাউদ 759 নং হাদীস সনদ সহিহ।
5]-- বায়হাকী 2384
6]-- মুজাম আল কাবীরা 17901 হাদীস সহিহ।
7]-- মুসনাদ আল বাযযার 4488 নং হাদীস।
8]-- ছহীহ ইবনু খুযায়মা হা/৪৭৯; আবুদাঊদ হা/৭৫৫, ইবনু মাস‘ঊদ হ’তে; ঐ, হা/৭৫৯।
ETC.

No comments:

Post a Comment